নিজস্ব প্রতিনিধি : রাজশাহী মহানগরীর তেরোখাদিয়া খ্রিষ্টানপাড়ার কলোনী এলাকার অটোচালক শহিদুল ইসলাম। এলাকাবাসীর কাছে লাদেন নামেই পরিচিত। বেশ শৌখিন মানুষ। প্রায় ২০ বছর পূর্বে আঙ্গুরা বেগমের সাথে তিনি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের ৩টি সন্তানও রয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার ছিল তাদের বিবাহ বার্ষিকী। আর এই বিবাহ বার্ষিকীটা তিনি পালন করলেন একটু ভিন্ন ভাবে।
সে অনেক দিন আগের কথার মতো……পূর্বে লাল শাড়ি পড়িয়ে নব বধুকে পাশে নিয়ে নিজ বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার একটি প্রচলন ছিল। যানবাহন না থাকায় পায়ে হেটে অথবা গরুর গাড়িতে চড়ে বর নিয়ে যেতো কনেকে। এখন প্রযুক্তির ছোয়ায় সে কস্টটি আর করতে হয়না। তবু শহিদুল ইসলাম লাদেনের শখ হয়েছিল পায়ে হেটেই ঘুরবেন।
যেই কথা সেই কাজ। লাদেন সাহেব এবার তার স্ত্রী আঙ্গুরা বেগমকে লাল শাড়ী পড়িয়ে নববধুর সাজ দিয়ে আর নিজেও পাঞ্জাবী টোপর পড়ে নেমে পড়েন এলাকায়। বধুর ঘাড়ে হাত আর পায়ে হেটে ঘুরে বেড়ান পুরো এলাকা। সামনে তার ১২ বছর বয়সী ছেলে আলামিন বিয়ের ব্রিফকেসটি সাথে নিয়ে হাটছে। এমন বার্ষিকী হয়ত এর আগে কখনওই কেউই পালন করেনি। তবে তার এই কর্মকান্ডে এলাকাবাসীকে ব্যপক বিনোদনও দিয়েছে। চলতে চলতে পথচারীরাও তাকে সৌজন্য শুভেচ্ছা ও অভিনন্দনও জানাচ্ছে।
পুরোনো বর লাদেন সাহেবের এবার মনে পড়ে গেল সেই ফটোগ্রাফিতে ফিল্মের ব্যবহারের কথা। যেখানে নেগেটিভ কপি থেকে ছবি বের করা যেত। স্থানীয় এক স্টুডিওতে গেলেন বধুকে নিয়ে ছবি তুলতে। কিন্তু শর্ত হলো ছবি সাথে সাথেই দিতে হবে। স্টুডিও থেকে তৎক্ষনাত ছবি দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় ছবি না তুলেই বের হয়ে আসেন তিনি।
তাতে কি! এখন প্রযুক্তির যুগ। স্থানীয় লোকজন তাদের এই বিবাহ বার্ষিকী স্মরণীয় করে রাখতে নিজেরাই মুঠোফোনে ছবি তুলে দেন। দুইজনের এক সাথে ছবি তুলতে পেরে মহা খুশি লাদেন সাহেব পুনরায় নিজ বাড়ির উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। সাথে তার ১২ বছরের ছেলে, বিয়ের ব্যাগ হাতে। এক ভিন্ন ধরণের বিবাহ বার্ষিকী। তাদের সাথে এলাকাবাসীও বিনোদন নেন উদ্যোগটির জন্য।