রাজশাহীতে অনিয়ম আর দূর্নীতিতে চলছে গণপূর্ত বিভাগের কাজ

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ রাজশাহী গণপূর্ত বিভাগ-২ এর কাজে অনিয়ম আর দূর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগ উঠেছে, চলমান কয়েকটি কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান থেকে মোটা অংকের উৎকোচ নিয়ে তাদের কাজের অনিয়ম দূর্নীতি তদারকি করছে না গণপূর্ত বিভাগ-২।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, খুঁটি দিয়ে ঠেকিয়ে রাখা হয়েছে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের গাইনী বিভাগের ওটি কমপ্লেক্স। পাশেই নির্মাণাধীন বহুতল ভবনের ঠিকাদারের গাফিলতিতে ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে ওটির দেয়াল ও ছাদ। ফলে তিন মাস ধরে বন্ধ অপারেশন। এতো বড় ঘটনার পরও পার পেয়ে যাচ্ছে অভিযুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সবচেয়ে ব্যস্ততম ছিল গাইনি বিভাগের ওটি। ডেলিভারিসহ নানা ধরনের জটিল অপারেশন হতো এখানে। কিন্তু গেল ফেব্রুয়ারিতে পাশেই আরেকটি বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য পাইলিংয়ের সময় একতলাবিশিষ্ট পুরো ওটি ভবনই ফেটে চৌচির হয়ে যায়। এরপরই সেখানে অপারেশনের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। সরিয়ে নেয়া হয় যন্ত্রপাতি।

রাজশাহীর পাশাপাশি উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে রোগীরা আসে এই হাসপাতালে। দীর্ঘদিন ধরে গাইনি ওটি বন্ধ থাকায় চরম বিপাকে কর্তৃপক্ষ। তবে আপাতত অন্য বিভাগের ওটিতে গাইনি অপারেশন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের পরিচালক।

ঠিকাদারের গাফিলতিতে পুরো ওটি কমপ্লেক্স বিধ্বস্ত হলেও কোনো ক্ষতিপুরণই দাবি করেনি ভবন দেখভালের দায়িত্বে থাকা গণপূর্ত বিভাগ। এমনকি নির্মাণাধীন ভবন তৈরী হচ্ছে নিম্নমানের কাজে তবুও সেটা অদৃশ্য কারণে দেখভাল করছে না গণপূর্ত বিভাগ।

গাইনি ওটি বন্ধ থাকায় চরম দুর্ভোগে রোগীসহ অপারেশন কার্যক্রমের সাথে জড়িতরা।

অপরদিকে রাজশাহী মোহনপুর টিটিসি ভবন নির্মাণে চলছে নানা অনিয়ম। নিম্নমানের কাজ হলেও তদারকি নাই দ্বায়িত্বে থাকা গণপূর্ত বিভাগের। চলমান প্রায় সব গুলো কাজ নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে করা হচ্ছে। টেন্ডার শর্তে যেভাবে কাজ হওয়ার কথা সেভাবে হচ্ছে না বলেও অভিযোগ স্থানীয়দের।

বিশ্বাস্ত সুত্র নিশ্চিত করেন, বর্তমান প্রকৌশলী প্রতিটি কাজে মোটা অংকের উৎকোচ দাবি করেন। ইজিপি ও ওপেন টেন্ডারে কাজ পেলেও দিতে হয় কমিশন। প্রতি কমিশনের লেনদেনের সরাসরি জড়িত সহকারী প্রকৌশলী কাওসার ও পিয়ন ইকবাল। ইজিপিতে রয়েছে কারসাজি। পছন্দের ঠিকাদারদের ইজিপির কারসাজিতে কাজ পাইয়ে দেন তিনি।

অভিযোগ উঠেছে, গণপূর্ত বিভাগ-২ প্রকৌশলী তার আমলে চলতি কাজে  ঠিকাদারদের নিকট থেকে কমিশন নিয়েছে কোটি টাকা। অভিযোগ আছে ডিভিশন-২ এর অনলাইন পরিসেবা বন্ধ। আপডেট নেই কোন কিছু। ঠিকাদারি কাজের টেন্ডারেও করা হয় কারসাজি। বন্ধের দিনে দেওয়া হয় টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি। প্রকৌশলীর সরকারী নম্বরটি কল ফরোয়ার্ড। তিনি ফোন রিসিভ করেন না বা সাক্ষাৎকার দেন না সাংবাদিককে। কোন বিষয়ে কথা বলতে হলে তার অফিস পিয়ন ইকবাল হোসেনের সঙ্গে কথা বলতে বলেন তিনি। অন্যথায় কথা বলতে হয় সহকারী প্রকৌশলী কাওসারের সঙ্গে।

অভিযোগ উঠেছে, স্বজনপ্রীতি ও কমিশন বানিজ্যে নিম্নদরদাতাদেরকে কাজ দেওয়ার। ভুক্তভোগী ঠিকাদাররা বলছেন, নামে মাত্র কাগজে ভুল ধরে উচ্চ দরদাতাদের কাজ না দিয়ে নিম্নদরদাতাদের কাজ দেওয়া হচ্ছে।

নানা অনিয়ম আর দূর্নীতি বিষয়ে জানতে গণপূর্ত বিভাগ -২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমানের সরকারি নম্বরে যোগাযোগ করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। তবে তিনি সম্প্রতি একটি গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকারে বলেছেন ২৫-২৬ ফিট মাটি খননের কারণে নিচ থেকে বালু ও মাটি সরে গিয়ে ভবন ফেটে গিয়েছে। সেটি খুব দ্রুত ঠিক করা হবে।

কথা বলতে সহকারী প্রকৌশলী কাওসার সরকারকে ফোন দিলে তিনি এবিষয়ে এসডি রবিউল ইসলাম খান এর সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।

পরে উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম খানের সরকারী নম্বরে ফোন দেওয়া হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা নির্বাহী প্রকৌশলী (স্টাফ) ফেরদৌস শাহনেওয়াজ কান্তাকে ফোন দেওয়া হলে তিনিও ফোন রিসিভ করেননি।

Next Post

বাঘায় সুদের খপ্পরে বিপদে যুবক

রবি মে ১৫ , ২০২২
বাঘা(রাজশাহী) প্রতিনিধিঃ রাজশাহীর বাঘায় সুদে মহাজনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে আসল ও সুদ পরিশোধ করেও বিপদে আরিফুল ইসলাম নামের এক যুবক। সে উপজেলার মোর্শিদপুর গ্রামের দরিদ্র ভ্যানচালক ছমির উদ্দিনের ছেলে। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দিয়ে কোন প্রতিকার না পেলেও ফাঁকা স্বাক্ষর করা  চেকের পাতায় মহা বিপদে পড়েছে আরিফুল। জানা যায়, […]

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links