নিজস্ব প্রতিনিধিঃ মোহনপুর পুলিশের টাকা ইনকামের মেশিন, দালাল ওরফে মামলাবাজ বাকশিমুল এলাকার ফিরোজ। মোহনপুর জাহানাবাদ ৬নং ইউনিয়নের মসলেম উদ্দিনের (৪৫) ছেলে শাহিন (২২) এর পরিবারকে ধংস করার পরিকল্পিত ফাঁদ পাতেন মামলাবাজ ফিরোজ। মেম্বার কাজিম উদ্দিন জানায় ৯ জুলাই রাত ২ টায় সময় জুলেখাকে উদ্ধারের নামে নাটক করতে গিয়ে নির্মম নির্যাতনের করেন শাহিনের পরিবারকে। শাহিন রাজশাহী সিটি কলেজের ইসলামি ইতিহাসের অনার্স ৩য় বর্ষের ছাত্র। ঘটনার সুত্রপাত প্রেম ভালবাসা থেকে সৃষ্টি হলেও গ্রাম্য রাজনৈতিক শিকার হয়ে ভয়ংকর নির্যাতিত হয় শাহিনের পরিবার। শাহিন সহ তার পিতা মাতা চাচাচাচী সহ সকলেই এখন অপহরন মামলার আসামী। মোহনপুর থানাধিন বাকশিমুল এলাকার রাকিবের ছেলে ফিরোজ এই নির্যাতিত পরিবারের কাছ থেকে অর্থনৈতিক সুবিধা পেতে মাষ্টার প্লান করেন। মাষ্টার প্লানের মুল হাতিয়ার শাহিনের প্রেমিক জুলেখার বাবা ও মা। জুলেখার বাবা – মা কে অর্থনৈতিক ফায়দা হাসিলের কথা দিয়ে প্লান করেন কিভাবে ঘটনা ঘটাতে হবে। ঘটনার সুত্রপাতে প্রথমে শাহিনের বাড়িতে জুলেখা কয়েক দফায় পালিয়ে আসে। জুলেখা (১৭) হাজরাপাড়া এলাকার ইনতাজ আলী (৪৫) মেয়ে। শাহিনের পরিবার পালিয়ে আসা অপ্রাপ্ত বয়স্ক জুলেখাকে তার বাবা মার নিকট বুঝিয়ে দেয়। কিন্তু চতুর্থবার আবার সেই মেয়ে পালিয়ে আসেন শাহিনের বাড়িতে । এবার মেয়ে বাবা মেয়েকে আর তার পরিবারে ফিরে নিবে না মর্মে জানিয়ে মেয়ের চাচা ও চাচাত ভাইকে দিয়ে খবর পাঠায় শাহিনের বাড়িতে। পরিশেষে গ্রামের মানুষজন উপায়ন্তু না পেয়ে মেয়ের চাচা ও চাচাত ভাইয়ের উপস্থিতিতে কালেমা পড়ে বিয়ে দিয়ে শাহিনের বাড়িতে থাকার অনুমতি প্রাপ্ত হয় জুলেখা। মেয়ের চাচা ও চাচাত ভাই বিয়ে সম্পুর্ণ করে অনুষ্ঠান শেষ বাড়ি চলে যায়। বিয়ের দীর্ঘ এক মাস পরে ৯ ই জুলাই ফিরোজ নামের সেই দালাল কথা বলতে যান জুলেখার সাথে শাহিনের বাড়িতে। মুলত মাষ্টার প্লানের ২য় ধাপে কি করতে হবে জুলেখাকে তা শিখিয়ে দিতেই ফিরোজ সেদিন শাহিনের বাড়িতে যায়। ঐদিন রাতেই ফিরোজ ও মেয়ের বাবা মোহনপুর থানায় অপহরন মামলার অভিযোগ দাখিল করেন। এবার মোহনপুর থানা পুলিশ অপহরন হওয়া জুলেখাকে উদ্ধারে নামে। ১০ জুলাই রাত ১২ঃ ৩০ ঘটিকার সময় কোন নারী পুলিশ সদস্য না নিয়ে ওসি তদন্ত আফজাল ও এস আই জান্নাত সহ সংগৃহিত ফোর্স অভিযান করেন শাহিনের বাড়িতে। শাহিনের বাসায় গিয়ে পুলিশ বাড়ির গেট ভেংগে জুলেখাকে বের করে আনেন। শাহিনের বাবা মা হতভাগ হয়ে যায় পুলিশের অকথ্য ভাষায় গালাগালি দেখে। ছেলের বাবা মা বলেন আমরা তাদের বলেছিলাম আপনারা দিনে এসে মেয়ে নিয়ে যেতে পারতেন। আমরা কি আপনার মেয়েকে বেঁধে রেখেছি, সাথে সাথে জুলেখা উত্তর দেয়, হ্যা আপনারা আমাকে অপহরন করে এনে নির্যাতন করছেন। এই কারনে আমি আমার বাবাকে নির্যাতন করার ঘটনা উল্লেখ্য করে ম্যাসেজ পাঠিয়েছি, তাই বাবা পুলিশ নিয়ে এসেছে। এই কথা জুলেখার মুখে শুনে আকাশ থেকে পড়েন শাহিনের পরিবার। পুলিশ তখন বাড়ির সদস্য বা শাহিনকে গ্রেপ্তার না করে জুলেখাকে নিয়ে চলে আসেন। পরের দিন ১১ ই জুলাই জুলেখা অপরহরন মামলা নতিভুক্ত করে মাঠে নামে পুলিশ, ততক্ষনে শাহিনের পরিবার জেনে যায়, এটা পরিকল্পিত ভাবেই করা হয়েছে, তাই তারা দীর্ঘদিন পলাতক থেকে হাইকোট থেকে অস্থায়ী জামিন নিয়ে আসেন শাহিনের বাবা মা ও চাচাচাচী। কিন্তু কলেজ পড়ুয়া শাহিনের জামিন নেওয়া হয়না। সে পলাতক থেকে যায়, উপায়ন্তু না পেয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে আপোষ মিমাংশার কথা জানালে, দালাল ফিরোজ মেয়ে পক্ষের পক্ষ থেকে দাবি করেন, তাকে অর্থ্যাৎ ফিরোজকে দিতে হবে এক লক্ষ আশি হাজার টাকা এবং মেয়ের বাবাকে দিতে হবে ৫ লক্ষ টাকা তাহলেও মিমাংসা হবে। দরিদ্র কৃষক পরিবার হাইকোটের জামিন নিতেই বাড়ির গরু -ছাগল সব বেঁচেছে,এবার তাদের উপায়ন্তু না পেয়ে সরাপন্ন হয় গণমাধ্যমের। সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়ে দেয় তাদের উপর হওয়া অন্যায় ও অত্যাচার। গ্রামের প্রতিটি মানুষের জানা এই ঘটনা কিন্তু পুলিশ বলেন অন্য ঘটনা। তারা জানায় জুলেখার বাবার অপহরনের অভিযোগ পেয়ে তারা জুলেখাকে উদ্ধারে নামে। তারা আরো জানায় উদ্ধারের গিয়ে মেয়ে পুলিশ সদস্য না থাকায় আমরা গ্রামের মানুষের উপস্থিতিতে জুলেখাকে নিয়ে আসি। সেই সময় উদ্ধারের যাওয়া পুলিশের সাথে হাতাহাতি হয়েছে শাহিনের পরিবারের, তখন একজন পুলিশ সদস্যের মোবাইলও ভেংগে দিয়েছে শাহিনের পরিবার বলে দাবি পুলিশের। আসলেই ঘটনার সরেজমিন তদন্ত করে জানা যায়, মেয়ে পক্ষ বর্তমানে যেটা করছে, সেটা আসলে টাকা হাতিয়ে নেওয়া ছাড়া কিছুই না। গ্রামবাসী বলেন প্রথমে জুলেখা শাহিনদের বাসায় আসে, কিন্তু অপ্রাপ্ত বয়স হওয়া বারংবার জুলেখাকে তার বাবা – মাকে ডেকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। শেষবার জুলেখার বাবা মা ইচ্ছে করেই তাকে নিয়ে না গিয়ে জুলেখার চাচা ও চাচাত ভাইকে প্রতিনিধি হিসাবে পাঠায় শাহিনের বাসায়। গ্রামের সকল মানুষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কালমা করে বিয়ে দিয়ে দেয় মেয়ের আপন চাচা ও চাচাত ভাই। গ্রামবাসী আরো বলেন, মেয়ের বয়স ১৮ বছর হতে আর মাত্র কয়েক মাস বাকি থাকায় তারা রেজিস্টার করে বিয়ে দিতে পারেনি কিন্তু ১৮ বছর পুর্ণ হলে তাদের রেজিস্ট্রি সম্পুর্ণ হবে মর্মে চুক্তি সম্পুর্ণ করেন এলাকাবাসী। এদিকে ফিরোজ মেয়েকে দিয়ে তার বাবা মা কে ম্যাসেজ পাঠানোর পরিকল্পনায় ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় শাহিনের পরিবার। জুলেখার কালেমা পড়া বিয়ের সময় উপস্থিত ছিল এলাকার স্কুলের কয়েকজন শিক্ষকও। তাদেরও বক্তব্য মেয়ে বারবার পালিয়ে আসলে একপযার্যে অতিষ্ঠ হয়েই গ্রামের মানুষ ও মেয়ে পক্ষ মিলে বিয়ে দেওয়ার একমাস পড়ে শুনছি যে অপহরন করা হয়েছিল জুলেখাকে, তা বিশ্বাস করতে চায় না গ্রামের কেউ। মোহনপুর থানার এজাহার সুত্র অনুযায়ী জুলেখার পিতা ইনতাজ (৪৫) বাদি হয়ে ১১/৭/১৯ ইং তারিখে মামলা দায়ের করেন। সেখানে জুলেখাকে অপহরন করা, মর্মে উল্লেখ্য করে ঘটনার দিন ১৫/৬/১৯ তারিখে স্কুল থেকে জুলেখাকে অপহরন করা হয়েছে। সেই মামলায় শাহিনের পরিবারের ৫ সদস্যকে আসামী করা হয়।। শাহিন সহ শাহিনের পিতামাতা চাচা-চাচী সকলকে আসামী করেন জুলেখার পিতা ইনতাজ।
এ বিষয়ে জুলেখার পিতা ইনতাজকে ফোন দিলে তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর টি বন্ধ পাওয়া যায়।
উক্ত বিষয়ে কথা বলতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিডিয়া উইং (সদর) ইফতেখারের আলম কে ফোন দিলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। মুলত তিনি ভারত সফরে থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে ওসি তদন্ত আফজালের সাথে কথা বললে তিনি মোটর বাইকে থাকায় কথা অস্পষ্ট বলে পরে কথা বলবে মর্মে ফোন কেটে দেন।