মিয়ানমারের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য বিশ্বব্যাপী একটি প্রচারণা শুরু করেছে ফ্রি রোহিঙ্গা কোয়ালিশন

আভা ডেস্কঃ আন্তর্জাতিক আদালতে গণহত্যা মামলার শুনানির আগে মিয়ানমারের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য বিশ্বব্যাপী একটি প্রচারণা শুরু করেছে ফ্রি রোহিঙ্গা কোয়ালিশনসহ বিভিন্ন দেশে সক্রিয় থাকা রোহিঙ্গাদের বেশ কিছু সংগঠন।

আগামীকালই গাম্বিয়ার বক্তব্যের মধ্য দিয়ে ওই শুনানি শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। শুনানিতে মিয়ানমারের পক্ষে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে ইতোমধ্যেই দ্য হেগে পৌঁছেছেন অং সান সু চি।

আর এই শুনানির শুরুর আগেই ‘বয়কট মিয়ানমার ক্যাম্পেইন’ নামে মিয়ানমারকে বয়কট করার আহবান সম্বলিত একটি প্রচারণা শুরু হয়েছে।

ফ্রি রোহিঙ্গা কোয়ালিশনের ওয়েবসাইটের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিমদের সমর্থনকারী মানবাধিকার কর্মীরা মিয়ানমারকে বিশ্বব্যাপী বয়কটের এ প্রচারণা শুরু করেছেন।

ফ্রি রোহিঙ্গা কোয়ালিশন ‘বয়কট মিয়ানমার ক্যাম্পেইন’ শীর্ষক বিবৃতিতে বলছে আন্তর্জাতিক আদালতে গণহত্যা মামলার শুনানির প্রাক্কালে রোহিঙ্গা অধিকার কর্মীরা যে ‘গ্লোবাল বয়কট মুভমেন্ট’ শুরু করেছে তাতে কর্পোরেশন, বিদেশী বিনিয়োগকারী, পেশাজীবী ও সাংস্কৃতিক সংগঠনকে মিয়ানমারের সঙ্গে তাদের প্রাতিষ্ঠানিক সম্পর্ক ছিন্ন করার আহবান জানিয়েছে।

বিবৃতি অনুযায়ী দশটি দেশের ৩০ মানবাধিকার কর্মী, শিক্ষাবিদ, পেশাজীবী সংগঠন একযোগে এ প্রচারণা শুরু করেছে যার উদ্দেশ্য মিয়ানমারে সুচি ও সেনাবাহিনীর কোয়ালিশন সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করা।

জার্মানি ভিত্তিক ফ্রি রোহিঙ্গা কোয়ালিশনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং ‘গ্লোবাল বয়কট মুভমেন্ট’ এর অন্যতম উদ্যোক্তা নে সাং লুইন ওই বিবৃতিতে বলেন, “জাতিসংঘের তথ্য অনুসন্ধান মিশন পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করেছে যে জন্ম ও নাগরিকত্বের দিক আমার পূর্বপুরুষের দেশ আমাদের রোহিঙ্গা নৃগোষ্ঠীকে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করে দেয়ার নীতি গ্রহণ করেছে….”।

নে বলেন, “রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে আমি নাগরিক বা ক্রেতা, অধিকার সংগঠনের সদস্য বা প্রতিনিধি, ধর্মীয় সম্প্রদায়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বা পেশাজীবী বা সংসদীয় এসোসিয়েশনসহ সবাইকে নিজেদের স্বাধীনতা ও ক্ষমতা ব্যবহার করে মিয়ানমারের সাথে সব প্রাতিষ্ঠানিক বা আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক ছিন্ন করার আহবান জানাচ্ছি।”

জাতিসংঘের তথ্য অনুসন্ধান মিশনকে উদ্ধৃত করে ওই বিবৃতিতে বলা হয় যে মিয়ানমারে মানবাধিকার বিষয়ে জাতিসংঘের বিশেষ র‍্যাপোর্টিয়ার ইয়াং লি সংখ্যালঘু শান, কাচিন, তাং, কারেন, রাখাইন ও চিন সম্প্রদায়ের ওপর একই ধরণের সামরিক দমন পীড়নের প্রমাণ পেয়েছেন।

বিবৃতিতে জানানো হয়েছে যে ‘গ্লোবাল বয়কট মুভমেন্ট’ শুরু হয়েছে একটি অনলাইন পিটিশন অভিযানের মাধ্যমে যেখানে নরওয়ের নোবেল কমিটিকে অং সাং সুচির নোবেল পুরস্কার বাতিলের আহবান জানানো হয়েছে।

কারণ তারা মনে করে মিয়ানমারের বেসামরিক এই নেতা এখন আর এই পুরস্কারের যোগ্য নন।

বিবৃতিতে ১৯৯০ এর দশকে যুক্তরাষ্ট্রে ফ্রি বার্মা আন্দোলনের সূচনাকারী মিয়ামনারের মানবাধিকার কর্মী ড: মং যারনি বলেন, “মান্দালয়ের একটি সামরিক পরিবার থেকে আসা আমি একজন বার্মিজ এবং বুদ্ধিস্ট। আমি পরিষ্কারভাবে এই বয়কট মিয়ানমার ক্যাম্পেইনকে সমর্থন করছি। আমার জন্মভূমির অবস্থা এখন ১৯৩০ সালের নাৎসি জার্মানির মতো। শুধু সেনাবাহিনীই শুধু হাজার হাজার রোহিঙ্গার দিকে ট্রিগার চেপেই গণহত্যার অপরাধ করেনি বরং অনেক সাধারণ মানুষও রোহিঙ্গাদের একই দৃষ্টিতে দেখছে”।

ড: মং যারনিই প্রথম ২০১৩ সালে তার দেশের এই ভয়াবহ অপরাধের বিষয়টি বিশ্ববাসীর সামনে তুলে এনেছিলেন বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।

বিবৃতিতে বলা হয় বয়কট মিয়ানমার ক্যাম্পেইন এর উদ্যোক্তাদের মধ্যে ফ্রি রোহিঙ্গা কোয়ালিশন ছাড়াও রয়েছে ফরসিয়া কো, রেস্টলেস বিইংস, ডেসটিনেশন জাস্টিস, রোহিঙ্গা হিউম্যান রাইটস নেটওয়ার্ক অফ ক্যানাডা, রোহিঙ্গা হিউম্যান রাইটস ইনিশিয়েটিভ অফ ইন্ডিয়া ও এশিয়া সেন্টার।

বিবিসি

Next Post

‘শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া করে জ্ঞান অর্জনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়, লাশ হয়ে হয়ে বাড়ি ফিরে যাওয়ার জন্য নয়, রাষ্ট্রপতি

সোম ডিসে. ৯ , ২০১৯
আভা ডেস্কঃ ‘শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া করে জ্ঞান অর্জনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়, লাশ হয়ে হয়ে বাড়ি ফিরে যাওয়ার জন্য নয়। কর্তৃপক্ষ সময়মতো সঠিক পদক্ষেপ নিলে অপ্রত্যাশিত ঘটনা অনেকাংশে রোধ করা সম্ভব। আশা করব ভবিষ্যতে কর্তৃপক্ষ সময়মতো সঠিক পদক্ষেপ নেবে।’ আজ সোমবার (৯ ডিসেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে লিখিত বক্তব্যে এসব […]

এই রকম আরও খবর

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links