মিন্নিকে আইনি সহায়তা দিবেন সুপ্রিমকোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন।

আভা ডেস্কঃ বরগুনার চাঞ্চল্যকার রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় গ্রেফতার তার স্ত্রী ও মামলার প্রধান সাক্ষী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে আইনি সহায়তা দেয়ার কথা জানিয়েছেন সুপ্রিমকোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন।

বুধবার সুপ্রিমকোর্টের এনেক্স ভবনের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, মিন্নির মামলাটি উচ্চ আদালতে আসলে অবশ্যই আমাদের পক্ষ থেকে আইনি সহায়তা করা হবে।

তিনি বলেন, মিন্নিকে যদি জামিন না দেয়া হয় তাহলে আমরা অবশ্যই উচ্চ আদালতে যখন আসবে তখন এর প্রতিবাদ করবো। আমরা চাই কে দোষী, কে দোষী না সেটা বড় কথা নয়। আমরা চাই, আইন অনুযায়ী বিচার হবে, আইন অনুযায়ী সাজা হবে।

নিম্ন আদালত বেপরোয়া হয়ে উঠছে উল্লেখ করে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক এ সভাপতি বলেন, আমরা মনে করি রাজনৈতিক প্রভাবে আমাদের নিম্ন আদালতগুলো বেপরোয়া হয়ে উঠছে। এমনকি সুপ্রিমকোর্টের আদেশকেও তারা অমান্য করছে।

তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন, বরগুনায় আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। রিমান্ডের পরে তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও নেয়া হয়েছে। সেই জবানবন্দি কতটা সত্যি, কতটা মিথ্যা সেটা বিচারে দেখা যাবে। আমাদের কথা হলো সুপ্রিমকোর্টের নির্দেশনা রয়েছে, যদি কাউকে রিমান্ডে নিয়ে স্বীকারোক্তি নেয়া হয় তাকে অবশ্যই বিচারিক আদালতে হাজির করতে হবে। যাতে সে বলতে পারে রিমান্ডে থাকাকালে তাকে নির্যাতন করা হয়েছে কিনা। নির্যাতন যদি করা হয়ে থাকে ওই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে। এটা আমাদের সুপ্রিমকোর্টের নির্দেশনা।

তিনি বলেন, এরপরও একজন নারীকে, তরুণীকে একজন পুরুষ পুলিশ কর্মকর্তার হেফাজতে দেয়া হলো। একবারও আদালত চিন্তা করলেন না। তার উপরে কি ধরনের মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করা হতে পারে।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, বিচারক কোনো রকম বিবেচনা না করে তাকে তদন্তকারী কর্মকর্তার হেফাজতে দিয়ে দিলেন। কিন্তু সে কথিত স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দির পরে তাকে আদালতে না নিয়ে সরাসরি জেল খানায় পাঠিয়ে দেয়া হল।

খন্দকার মাহবুব বলেন, মিন্নির আইনজীবী আবেদন করলেন যে তারা স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি প্রত্যাহার করতে চান। কিন্তু তাকে আদালতে আনা হলো না। এভাবে আইনের বরখেলাপ হচ্ছে। তারপরও আমাদের ফৌজদারি কার্যবিধিতে বিধান রয়েছে। যেকোনো অপরাধ আসামি যদি নারী হয়, যদি অসুস্থ হয়, তাহলে আদালত তাকে জামিন দেবেন। এক্ষেত্রে তার জামিনের আবেদন করা হলেও, আইনের সম্পূর্ণ বরখেলাপ করে রাজনৈতিক প্রভাবে অথবা একটা বিশেষ উদ্দেশ্যে মামলার মূল আসামিরা যাতে ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকে সেই কারণে তাকে জামিন দেয়া হলো না। এটাও আইনের বরখেলাপ।

প্রসঙ্গত বরগুনা সরকারি কলেজের মূল ফটকের সামনের রাস্তায় ২৬ জুন সকাল ১০টার দিকে স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির সামনে কুপিয়ে জখম করা হয় রিফাত শরীফকে। বিকাল ৪টায় বরিশালের শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।

এ হত্যার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশব্যাপী তোলপাড় শুরু হয়। হত্যাকাণ্ডের পরের দিন রিফাত শরীফের বাবা আবদুল হালিম শরীফ বরগুনা থানায় ১২ জনকে আসামি করে মামলা করেন। এ ছাড়া সন্দেহভাজন অজ্ঞাতনামা আরও চার-পাঁচজনকে আসামি করা হয়। এ মামলার প্রধান আসামি নয়ন বন্ড ২ জুলাই পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। মামলার এজাহারভুক্ত ছয় আসামিসহ এ পর্যন্ত ১৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৪ জনই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

রিফাত হত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী ও রিফাতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে গ্রেফতার ও রিমান্ডে গিয়ে তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়ার পর থেকে মামলা ভিন্ন দিকে মোড় নেয়।

১৬ জুলাই সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বরগুনার মাইঠা এলাকার বাবার বাসা থেকে মিন্নিকে জিজ্ঞাসাবাদ ও তার বক্তব্য রেকর্ড করতে বরগুনা পুলিশলাইনসে নিয়ে যায় পুলিশ। এর পর দীর্ঘ ১০ ঘণ্টার জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাত ৯টায় মিন্নিকে রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।

পর দিন মিন্নিকে আদালতে হাজির করা হয়। আদালতে তার পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। আদালত মিন্নির পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন আদালতের বিচারক মো. সিরাজুল ইসলাম গাজী।

পর দিন বৃহস্পতিবার বরগুনার পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন সংবাদ সম্মেলনে জানান, মিন্নি তার স্বামী রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। এ হত্যার পরিকল্পনার সঙ্গেও তিনি যুক্ত ছিলেন।

গত শুক্রবার বিকালে মিন্নি একই আদালতে তার স্বামী রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এদিকে মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হক কিশোরের দাবি, মিন্নির কাছ থেকে জোর করে জবানবন্দি নেয়া হয়েছে। তিনি এ হত্যা মামলার এক নম্বর সাক্ষীকে (মিন্নি) আসামি করা ও রিমান্ডে নেয়ার জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুকে দায়ী করে আসছেন। শুক্রবার গণমাধ্যমকে তিনি বলেছিলেন, ‘সবকিছুই শম্ভু বাবুর খেলা। তার ছেলে সুনাম দেবনাথকে রক্ষা করার জন্য আমার মেয়েকে বলি দেয়া হচ্ছে।’ শম্ভুর ছেলে সুনামের বিরুদ্ধে কিশোরের অভিযোগ, তার জন্যই এতদিন মিন্নির পক্ষে আদালতে দাঁড়াননি আইনজীবীরা। এ নিয়ে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বহু সমালোচনার পর বরগুনা ও ঢাকার আইনজীবীদের একটি অংশ মিন্নির পক্ষে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন।

যুগান্তর

Next Post

লোকজন আলী কেপালকে গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে লাঠি, পাথর ও ছোরা দিয়ে হামলা চালিয়ে হত্যা করেন। মুগুর দিয়ে তার মাথা গুঁড়িয়ে দেয়া হয়।

বুধ জুলাই ২৪ , ২০১৯
আভা ডেস্কঃ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের প্রপিতামহ ছিলেন উসমানীয় শাসনমালের রাজনীতিবিদ ও প্রখ্যাত সাংবাদিক আলী কেমাল বে। উসমানীয় সাম্রাজ্যের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আদেল ফরিদ পাশার আমলে মাস তিনেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীরও দায়িত্ব পালন করেন তিনি।-খবর হুররিয়াত ডেইলি নিউজের ১৯১৯ থেকে ১৯২৩ সাল পর্যন্ত তুরস্কের স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরোধী হিসেবে আলী কেমাল ইউরোপে বসবাস […]

এই রকম আরও খবর

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links