মায়ানমারের লোকতো ইয়াবা খায় না, তাহলে আমরা কেন খাই ? র‍্যাব প্রধান বেনজির।

আভা ডেস্কঃ র‌্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ বলেছেন, একসময় ভারত থেকে ফেনসিডিল আসতো, সে দেশে ফেনসিডিলের কারখানা হলেও সেখানকার যুবসমাজ তা খায় না। এখন মিয়ানমার থেকে ইয়াবা আসছে।

মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের তাড়িয়ে দিয়েছে কিন্তু যেসব রোহিঙ্গা এ দেশে ইয়াবা পাচার করে, তাদের তাড়ায়নি। মিয়ানমারের লোকতো ইয়াবা খায় না, আমরা কেন খাই? আমরা কেন ১ লাখ কোটি টাকা ধ্বংস করে দিচ্ছি?

র‌্যাব প্রধান তারুণ্যের কাছে প্রশ্ন করে বলেন, তরুণ সমাজের কাছে আমার প্রশ্ন, আমরা কেন ওদের ভিকটিম হবো? যারা ব্রিটিশ আমলে জন্ম নিয়েছে, তাদের মনে ব্রিটিশ পাকিস্তান প্রীতি থাকতে পারে। যারা পাকিস্তান আমলে জন্ম নিয়েছে, তাদের কারও মনেও পাকিস্তান প্রীতি থাকতে পারে। কিন্তু তোমাদের জন্মতো বাংলাদেশে, তোমার দেশতো একটাই।

শনিবার (২৭ অক্টোবর) বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন (এফডিসি) মিলনায়তনে ‘মাদকনিয়ন্ত্রণে রাজনৈতিক সদিচ্ছা’ শীর্ষক বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজি এবং আহসান উল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে এই বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি। এতে প্রথম প্রতিষ্ঠানটি সরকারি দল এবং দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বেসরকারি দল হিসেবে অংশ নেয়।

মাদকবিরোধী অভিযানে নেমে একটা ‘ভিন্ন জগৎ’ পাওয়া গেছে বলে জানিয়ে বেনজীর আহমেদ আরো বলেন, গডফাদার নামে যে দুই একজন নিয়ে মাতামাতি চলে, এর বাইরে মূল ব্যবসায় অন্য লোকের সন্ধান পাওয়া গেছে।

র‌্যাব প্রধান বলেন, মাদকবিরোধী অভিযানে নামার সময় আমাদের সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ ছিল।

মাদকের একটা ভিন্ন জগৎ আবিষ্কার করলাম। গডফাদার নামে যে দু’এক জন নিয়ে মিডিয়ায় মাতামাতি চলে, কিন্তু মূল বিজনেসে দেখি অন্য লোক। অনেক আননোন (আড়ালের) লোকজন এ ব্যবসা করছে। অভিনব সব কায়দায় তারা ইয়াবা পাচার করছে।

এ অভিযান শুরুর পর মাদক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে র‌্যাব ১৭ হাজার জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে উল্লেখ করে র‌্যাব ডিজি বলেন, প্রথমে আমরা খুচরা বিক্রেতাদের কাছে গেছি, তারপর ডিলারদের কাছে। এরপর ক্যারিয়ারের কাছে গেছি, এরপর যারা ইনভেস্ট করছে, যারা আমদানি করছে এখন তাদের দিকে যাচ্ছি। তারা কাট অফ পদ্ধতিতে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে, তারপরও আমরা ওই জায়গায় পৌঁছেছি।

সামনে নির্বাচনের কারণে একটু অন্যদিকে নজর দিতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচনের পর মাদকবিরোধী এ অভিযানকে আরও গতিশীল করা হবে। সরকারের সদিচ্ছার সঙ্গে জনগণের সদিচ্ছার মেলবন্ধন করতে পারলে আমরা সব পারবো। আমরা প্রত্যাশা করছি, এ যুদ্ধে সবার সমর্থন পাবো এবং ব্যক্তিগত এবং সাংগঠনিকভাবে কেউ বাধা হয়ে দাঁড়াবেন না।

তিনি বলেন, বিভিন্ন সময় মিডিয়ায় গডফাদার হিসেবে ২-১ জনকে ইন্ডিকেট করে আসা হচ্ছে। তার পকেটে কি ইয়াবা আছে? তার বাড়িতে কি ইয়াবা আছে? সে কি ইয়াবার চালান নিয়ে আসে? তার আশে-পাশের লোকজন হয়তো এর সঙ্গে জড়িত। এর মধ্যে ওই আশে-পাশের ২-১ জন কিন্তু নেই।

কক্সবাজারে ২৩ লাখ মানুষের বসবাস উল্লেখ করে বেনজীর আহমেদ আরও বলেন, ওখানকার ২৩ লাখ মানুষ কি ইয়াবার ব্যবসা করে? নাকি এক লাখ মানুষ ব্যবসা করে? মাত্র গুটিকয়েক লোক এ ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত। মাত্র কয়েকজন লোক বাংলাদেশে গজব সৃষ্টি করেছে। তাদের সামাজিকভাবে মোকাবেলা করতে হবে। কক্সবাজারের ৪-৫শ বা হাজারখানেক লোক যদি বাংলাদেশের সঙ্গে না থাকে তাহলে কি খুব সমস্যা হবে?

মাদকের জন্য প্রতি জেলায় আলাদা করে বিশেষ আদালত স্থাপনের প্রস্তাব জানিয়ে তিনি বলেন, এখন যেসব মামলা হচ্ছে দেখা যাবে এই গতিতে চললে বিচার শেষ হতে ২৮ সাল পর্যন্ত সময় লাগবে। অনেক বিচারক অবসরে রয়েছেন। একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারক, একজন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ এবং একজন ম্যাজিস্ট্রেটের সমন্বয়ে একটি আদালত তৈরি করা হোক। বিচারে আসামি খালাস পাক, তবু বিচারটা হোক।

ছোট মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমার জানা মতে কোনো ছোট ব্যাবসায়ীকে ধরি নাই। একজনের সঙ্গে ১০ হাজার পিস ইয়াবা পাওয়া গেছে, প্রতি পিসের ইয়াবার দাম যদি ৩০০ টাকা হয় তাহলে ৩০ লাখ টাকার ইয়াবা। এটা কোনো ফকিন্নির কাছে থাকে না।

‘তদবিরের জন্য গত ৫ মাসে কোনো ফোন পাইনি, যেখানে জনগণের সহযোগিতা চেয়েছি সেখানেই পেয়েছি। রাজনৈতিক সদিচ্ছার পাশাপাশি জনগণের সদিচ্ছা থাকলে এ যুদ্ধে অবশ্যই জয়ী হবো’- বলেন বেনজীর আহমেদ।

বিতর্ক প্রতিযোগিতায় সরকারি দল মাদক নিয়ন্ত্রণে রাজনৈতিক সদিচ্ছাই যথেষ্ট বলে মত দেন এবং এ সংক্রান্ত একটি বিল সংসদে উত্থাপন করেন। তবে বিরোধীদল এর বিরোধিতা করে শুধুমাত্র রাজনৈতিক সদিচ্ছাতেই মাদক নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয় বলে বিভিন্ন যুক্তি তুলে ধরেন।

দুই দলের যুক্তি উত্থাপন শেষে বিচারকরা সরকারি দল অর্থাৎ বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজিকে বিজয়ী ঘোষণা করেন।

উৎসঃ kalerkantho

Next Post

পবায় জিহাদী বইসহ, দুজন জামাত কর্মী আটক।

রবি অক্টো. ২৮ , ২০১৮
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ রাজশাহী নগরীর পবা থানা পুলিশ কতৃক দু জন জামাত নেতা আটক। জানা যায় শ্রীপুর মন্ডলপাড়া গ্রাম থেকে বিপুল পরিমান জিহাদি বই পত্র সহ জামাতের দুই নেতাকে আটক করেন পবা থানার সেকেন্ড অফিসার এস আই মাহাফুজ ও সংগৃও ফোর্স। আটকরা হলেন শ্রীপুর মন্ডলপাড়া গ্রামের শফি উদ্দিনের ছেলে মমিন উদ্দিন […]

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links