আভা ডেস্কঃ করোনার এই দুঃসময়ে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে সামর্থবানদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘আপনার সাহায্য হয়তো একটি পরিবারের সদস্যদের মুখে হাসি ফোটাবে। দেখবেন, তাদের হাসিমুখ আপনার হৃদয়মনকেও পরিপূর্ণ করে তুলবে ঈদের আনন্দে। মানুষ হিসেবে মানুষের পাশে দাঁড়ানোই সবচেয়ে বড় কর্তব্য।’
ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (১৩ মে) জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে তিনি সবাইকে শুভেচ্ছা জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই ভাইরাসের বিস্তার প্রতিরোধে গত বছরের মতো এ বছরও ঈদগাহ ময়দানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠানে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। মসজিদে মসজিদে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদের নামাজ আদায় করতে হবে।’
‘আমরা সবাই যে যেখানে আছি সেখান থেকেই ঈদের আনন্দ উপভোগ করি। বিত্তবান যারা আছেন বা যাদের সামর্থ্য আছে, তাদের প্রতি অনুরোধ, এই দুঃসময়ে আপনার দরিদ্র প্রতিবেশি, গ্রামবাসী বা এলাকাবাসীর পাশে দাঁড়ান। তাদের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন।”
ডাক্তার, নার্স, অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীসহ কয়েকটি পেশার মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সামনে থেকে কোভিড-১৯ রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও সশস্ত্রবাহিনীর সদস্যরা এবং কেন্দ্রীয় ও মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তারা লকডাউন বা চলাচলের বিধিনিষেধ বলবৎ করতে মাঠে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন। ত্রাণসামগ্রী বিতরণসহ সরকারের নানা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন।’
সংবাদকর্মীরা সংক্রমণের ঝুঁকি উপেক্ষা করে সংবাদ পরিবেশনের কাজ করে যাচ্ছেন উল্লেক করে তাদের আন্তরিক ধন্যবাদ এবং শুভেচ্ছা জানান তিনি।
করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে বহু স্বাস্থ্যকর্মী, আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্য এবং বিভিন্ন সংস্থার কর্মকতা-কর্মচারী প্রাণ হারিয়েছেন তাদের রুহের মাগফিরাত ও আত্মার শান্তি কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী। তাদের শোক-সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকারের সর্বাত্মক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, ‘আমরা চিকিৎসা সক্ষমতা অনেকগুণ বৃদ্ধি করেছি। সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি বেসরকারি খাতের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক হাসপাতালকেও আমরা করোনাভাইরাস চিকিৎসায় সম্পৃক্ত করেছি। গত মাসে মহাখালী ডিএনসিসি মার্কেটে ২ হাজার শয্যার কোভিড-১৯ হাসপাতাল স্থাপন করা হয়েছে। গত বছর মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ৬ হাজার ১৬৬ জন ডাক্তার, ৫ হাজার ৫৪ জন নার্স এবং প্রায় সাড়ে ৪ হাজার অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। জেলা হাসপাতালগুলোসহ দেশের ১৩০টি সরকারি হাসপাতালে কেন্দ্রীয়ভাবে অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে।’
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে নাগরিক দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে মাস্কের ব্যবহার অত্যন্ত ফলপ্রসু বলে প্রমাণিত হয়েছে। কাজেই বাইরে গেলে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করবেন। পাশাপাশি যথাসম্ভব ঘনঘন সাবানপানি দিয়ে হাত ধুইয়ে নিন অথবা স্যানিটাইজার দিয়ে হাত জীবাণুমুক্ত করুন। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন। সেই সাথে সাথে আপনারা নিজেরা গরম পানির ভাপ নিতে পারেন।
