নিজস্ব প্রতিনিধিঃ রাজশাহীর চারঘাটের দীঘলকান্দী নামক স্থানে তেলবাহী ট্রেনের আটটি ওয়াগান লাইনচ্যুত হওয়ায় রাজশাহীর সঙ্গে ২৯ ঘণ্টা সকল রুটের ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ থাকে।
এর ফলে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের রাজশাহী থেকে ছেড়ে যাওয়া ও আসা সকল ট্রেনের সিডিউল ভেঙে পড়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে ট্রেন চলাচল স্বাভিক হলেও শুক্রবার পর্যন্ত সিডিউল বিপর্যয় কাটেনি। বিভিন্ন রুটের ট্রেনগুলো রাজশাহীতে এসেছে ও ছেড়েছ নির্ধারিত সময়ের অনেক পরে।
এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। তবে এ নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, দুর্ঘটনার কারণেই ট্রেন যাত্রায় এমন বিড়ম্বনা দেখা দিয়েছে। দ্রুতই ট্রেনের সিডিউল ঠিক হয়ে যাবে।
গত বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার হলিদাগাছি দীঘলকান্দি এলাকায় তেলবাহী ট্রেনের আটটি ট্যাংকার ওয়াগন লাইনচ্যুত হয়। পরের দিন রাত ১০ টায় আটটি বগি লাইনে তোলার পর, রাত সাড়ে ১২ টার দিকে রাজশাহী থেকে ‘পদ্মা এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। অথচ এই ট্রেনটির রাজশাহী ছাড়ার কথা ছিল বিকাল ৪টায়। পদ্মা এক্সপ্রেস ছাড়ার পর ভোররাত ৪টার দিকে ‘ধূমকেতু এক্সপ্রেস’ ঢাকার উদ্দেশ্যে রাজশাহী ছেড়ে যায়। এই ট্রেনটির যাত্রার সময় ছিলো রাত ১১’-২০ মিঃ সময়ে।
এ রিপোর্টটি লেখা পর্যন্ত ৪-১০ মিঃ সময়েও
পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রনটি রাজশাহী পৌঁছায়নি।
এদিকে পশ্চিম রেলের বিভিন্ন রুটের মেইল ট্রেনগুলোরও সিডিউল ভেঙে পড়েছে। রাজশাহী থেকে পার্বতীপুরগামী উত্তরা এক্সপ্রেস ট্রেন দুপুর সাড়ে ১২টায় ছাড়ার কথা থাকলেও আড়াইটা পর্যন্ত ছাড়তে পারেনি। সকাল ১০টার সিরাজগঞ্জগামী রাজশাহী এক্সপ্রেস কমিউটার ট্রেন স্টেশন ছেড়েছে দুপুর ২টার পর। রাজশাহী চাঁপাই কমিউটার ট্রনটির যাত্রা বতিল করা হয়েছে।ফলে ট্রেনের এমন ভয়াবহ সিডিউল বিপর্যয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক খোন্দকার শহীদুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ সময় লাইন বন্ধ থাকার কারণে রেলের সিডিউল ভেঙে পড়েছে। এ নিয়ে যাত্রীদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করা ছাড়া উপায় নেই। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যেই সিডিউল ঠিক হয়ে যাবে।
প্রসঙ্গত, রাজশাহীর চারঘাট এলাকায় ক’দিন ধরেই রেললাইন সংস্কারের কাজ চলছিল। পুরাতন স্লিপার পরিবর্তন করে নতুন স্লিপার বসানো হচ্ছিল। নতুনভাবে দেয়া হচ্ছিল পাথরও। সংস্কারের সময় স্লিপারের সঙ্গে লাইন আটকানো কয়েকটি ডগস্পাইক পিন খুলে রাখা হয়েছিল। সংস্কার কাজে নিয়োজিত রেলওয়ের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুর রশিদ তা খেয়াল করেননি। ফলে ওই পথ দিয়ে ট্রেন যাওয়ার সময় সেটি লাইনচ্যুত হয়। এতে ২৮ ঘণ্টার জন্য রাজশাহীর সঙ্গে রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়ে। দায়িত্ব পালনে গাফিলতির কারণে প্রকৌশলী আবদুর রশিদকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে কর্তৃপক্ষ।