আভা ডেস্কঃ ভারতের অনলাইন দুনিয়ায় মুসলিম নারীদের হেয় করে একের পর এক বিতর্কিত কর্মকাণ্ড চলছেই। গত বছরের জুলাইয়ের ‘সুল্লিডিলস’ ঘটনার পরই আবার নতুন করে বানানো হয়েছিল ‘বুল্লিবাই’ নামের আরেকটি অ্যাপ। যেখানে প্রায় শতাধিক মুসলিম নারীর ছবি তাদের অজান্তেই আপলোড করে বিক্রির জন্য বিজ্ঞাপন দেয়া হয়।
ইকোনিমক টাইমসের প্রতিবেদনে জানা যায়, মুম্বাই পুলিশ বিতর্কিত এই অ্যাপ বানানোয় জড়িত থাকার অভিযোগে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে। ২১ বছর বয়সী বেঙ্গালুরু থেকে গ্রেপ্তার হওয়া যুবক পুরকৌশল বিভাগের ২য় বর্ষের ছাত্র।
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তার টুইটার অ্যাকাউন্টের সূত্র ধরে আইপি এড্রেস বের করে তাকে শনাক্ত করা হয়। মুম্বাই পুলিশ এই বিষয়ে বিস্তারিত প্রকাশ করেনি।
তাদের পক্ষ থেকে শুধু জানানো হয়েছে, সে কি একাই এ ধরনের কর্মকাণ্ড করেছে, নাকি সে কোনো সংঘবদ্ধ চক্রের অংশ। এসব বিষয় জানার জন্য তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
গ্রেপ্তার করা যুবককে সোমবারই মুম্বাইতে নিয়ে আসা হয়েছে।
বিতর্কিত ‘বুল্লিবাই’ অ্যাপটি ওপেনসোর্স প্ল্যাটফর্ম গিটহাবে আপলোড করা হয়েছিল। যেখানে সাংবাদিক, সমাজকর্মী, এমন কি জাতীয় পুরস্কার জয়ী বলিউড অভিনেত্রী ও ২০১৬ সালে নিখোঁজ এক ছাত্রীর মাসহ শতাধিক মুসলিম নারীর অজান্তেই তাদের ছবি আপলোড করে নিলামে তোলা হয়।
বুল্লিবাই ও যেই টুইটার হ্যান্ডেলে অ্যাপটির প্রচারণা চালানো হয়। উভয়ের বিরুদ্ধেই মুম্বাই পুলিশ মামলা দায়ের করে।
মামলা হওয়ার পরই গিটহাব ‘বুল্লিবাই’ অ্যাপটি তাদের প্ল্যাটফর্ম থেকে সরিয়ে ফেলেছে।
ভারতে মুসলিম নারীদের অবজ্ঞা করে এর আগেও ‘সুল্লিডিলস’ নামের একটি অ্যাপ তৈরি করা হয়। যেখানে ৮০ জন মুসলিম নারীর ছবি আপলোড করে নিলামে তোলা হয়। বুল্লিবাই বানানোয় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ একজনকে গ্রেপ্তার করলেও ছয় মাস আগে সুল্লিডিল বানানোতে কাউকে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।
বুল্লিবাই বা সুল্লিডিলসে মুসলিম নারীদের কেনা-বেচার সত্যিকার কোনো কেনা-বেচার অ্যাপ নয়। এর উদ্দেশ্য ছিল মুসলিম নারীদের হেয়প্রতিপন্ন করা।
লেখক এবং ভারতে অ্যামনেস্টির সাবেক মুখপাত্র নাজিয়া এরাম সুল্লিডিলস ঘটনার পরে বলেছিলেন, ‘এটি আসলে শিক্ষত মহিলাদের কণ্ঠরোধ করার একটি প্রচেষ্টা। যারা সাধারণত ইসলোফোবিয়ার বিরুদ্ধে কথা বলেন।’