ভাই, গাড়ি টা একটু থামান ইফতারী করবো, অত:পর গাড়ি থেকে ধাক্কা দিলে পড়ে যায় যুবক।

আভা ডেস্কঃ বাস চালককে বাসযাত্রী হারুন বলেছিলেন, ‘ভাই, আমি ইফতারি করব। বাসটি একটু থামান। আমি নামব।’

হারুনের কথায় মন গলেনি বাস চালকের। বাসটি চালতে থাকে। এর মধ্যেই চলন্ত গাড়ি থেকে চালকের সহকারী ধাক্কা দিয়ে হারুনকে নামিয়ে দিতে গেলে সড়কেই পড়ে যান হারুন। এরপর ওই বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যান চব্বিশ বছর বয়সী যুবক হারুন।

বনানীতে গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় এমন মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। নিহত হারুন রং মিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ করেন।

বাস চাপা দিয়ে মেরে ফেলার ঘটনায় ঘাতক বাসচালককে গ্রেপ্তার করেছে বনানী থানা-পুলিশ। তাঁর নাম বাহাদুর আলী (৪৪)।

তদন্ত কর্মকর্তা বনানী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রাজিবুল হাসান আজ রোববার বলেন, ইফতার করার জন্য হারুন বাস চালককে বাস থামানোর জন্য অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু বাস চালক বাহাদুর তখন বাস থামাননি। চালকের সহকারী চলন্ত বাস থেকেই ধাক্কা দিয়ে হারুনকে নামিয়ে দেন। তখন হারুন বাসের চাকায় পিষ্ট হন। ঘটনাস্থলে মারা যান হারুন। প্রাথমিক তদন্তে এই তথ্য তিনি জানতে পেরেছেন।

হারুনকে কীভাবে বাস চাপা দিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে, সেই রহস্য জানার জন্য চালক বাহাদুরকে পাঁচ দিন রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি চেয়ে আজ আবেদন করে পুলিশ। চালক বাহাদুরকে আজ আদালতে হাজির করা হয়। শুনানি নিয়ে আজ ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত চালক বাহাদুর আলীকে একদিন পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন।

পুলিশ কর্মকর্তা রাজিবুল হাসান জানান, গতকাল সন্ধ্যার সময় তিনি বনানী এলাকায় অবস্থান করছিলেন। বনানী থানার বিমানবন্দর সড়কে সড়ক দুর্ঘটনায় একজন মারা গেছেন, এমন খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে আসেন। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আশপাশের লোকজনদের সঙ্গে তখন কথা বলেন। জানতে পারেন, বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে হারুনকে মেরে ফেলা হয়েছে। বাস চাপা দেওয়ার পর বাসটি দ্রুত গতিতে এলাকা ছাড়ে। বনানী থেকে খিলক্ষেত পর্যন্ত চলেও যায়। তখন পুলিশ খবর পেয়ে ঘাতক বাসচালক বাহাদুর আলীকে আটক করে। চালকের সহকারী পালিয়ে গেছেন।

বনানী থানা-পুলিশ আদালতকে প্রতিবেদন দিয়ে বলেছে, বাস চালক বাহাদুরের নির্দেশে সহকারী আলম হারুনকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়ায় ওই বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে মারা যান তিনি।

পুলিশ বলছে, চালক বাহাদুরের ভারী যান বহন চালানোর কোনো লাইসেন্স ছিল না। চালকের সহকারী ছাড়া বাসের কন্ডাক্টর কে ছিলেন তাঁর নাম বলতে চাইছেন না। এসআই রাজিবুল হাসান বলেন, চালক মুখ খুলতে চাইছেন না। চালক বলতে চাচ্ছেন, বাসের যে কন্ডাক্টর ছিলেন তাঁর নাম তিনি জানেন না। হারুনের মৃত্যুর ঘটনার এই মামলার সঙ্গে জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তার করে বিচারের মুখোমুখি করা হবে বলে জানান এসআই রাজিবুল।

হারুনের মৃত্যুর ঘটনায় বাস চালক বাহাদুর ও চালকের সহকারী আলমের বিরুদ্ধে বনানী থানায় মামলা হয়েছে। মামলার বাদী হলেন হারুনের মা রানী বেগম।

হারুনের মা মামলায় বলেছেন, শেরপুরে যাওয়ার জন্য তাঁর ছেলে মহাখালী থেকে খেয়া পরিবহনের বাসে ওঠেন। ইফতারি করার জন্য তাঁর ছেলে বাস চালককে বাস থামাতে বলেন। কিন্তু যথাযথভাবে বাস না থামিয়ে ধাক্কা দিলে হারুন বাসের চাকায় পিষ্ট হয়।

হারুনের পরিবার বলছে, কয়েক মাস আগে বিয়ে করেন হারুন। স্ত্রী আর মাকে নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকেন ঢাকার কেরানীগঞ্জের আটিপাড়ায়। হারুনের গ্রামের বাড়ি শেরপুরের নকলায়। তাঁর স্ত্রী গ্রামের বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। স্ত্রীকে আনার জন্য শনিবার বিকেলে কেরানীগঞ্জ থেকে মহাখালী বাসস্ট্যান্ডে যান হারুন। শেরপুরগামী খেয়া পরিবহনে ওঠেন তিনি। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা নাগাদ বাসটি বনানী পর্যন্ত পৌঁছায়।

হারুনের মামা মো. মনির আজ রোববার বলেন, হারুনের আয়ে সংসার চলত। কেরানীগঞ্জের রংমিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ করে সংসার চালাতেন। হারুনের মা মাটি কাটার কাজ করেন। হারুনরা তিন ভাই। হারুন সবার বড়। অপর দুই ভাইয়ের একজনের বয়স ১১, আরেকজনের নয় বছর। হারুনের মৃত্যুতে তাঁর পরিবার পথে বসে গেছে।

মনির আরও জানালেন, হারুনের স্ত্রী এখন অন্তঃসত্ত্বা।

প্রথম আলো

Next Post

র‍্যাব-৫ এর বিশেষ ভ্রাম্যমান অভিযানে বিপুল পরিমান মেয়াদোত্তীর্ন ওষুধ জব্দ।

রবি মে ১২ , ২০১৯
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ র‌্যাব-৫ এর বিশেষ ভ্রাম্যমান অভিযান বিপুল পরিমান বিক্রয় নিষিদ্ধ সরকারী ঔষধ এবং মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ জব্দ ও জরিমানা প্রদান। আজ ১২ মে,সকাল ১১ টা হতে বিকাল সাড়ে ৪ টা পর্যন্ত র‌্যাব-৫, রাজশাহী এর উপ-অধিনায়ক, সিপিএসসি কোম্পানী অধিনায়ক, মেডিকেল অফিসার, এবং এক্সিকিউটিভ ম্যাজিষ্ট্রেট নিজাম উদ্দীন আহমেদ, র‌্যাব সদর দপ্তর এর […]

এই রকম আরও খবর

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links