নিজস্ব প্রতিনিধিঃ বোয়ালিয়া থানা উদ্ধার করেছে ২টি স্বর্ণবার, আটক করেছেন ২ জনকে। কিন্তু হিউমার ছড়ানো হয়েছে ঘটনার পর থেকেই একটি অনৈতিক দাবি মেনে না নেওয়ায়। ঘটনার পর থেকে উদ্ধার হওয়া স্বর্ণের হাত পা গজাতে থাকে, কেউ জানে না আসল রহস্য। এক জায়গা থেকে এই হিউমার ছড়ানো হয়নি । কয়েক জায়গায় কয়েকভাবে হিউমার ছড়ানো হয়েছে যাতে মানুষ বিশ্বাস না করেন । রাজশাহীতে ২টি স্বর্ণেরবারের মামলা দিয়ে বিপাকে পড়েছে বোয়ালিয়া মডেল থানা পুলিশ। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার এক প্রভাবশালী ইউপি চেয়ারম্যানের কথায় স্বর্ণেরবারসহ আসামীদের না ছাড়ায় বোয়ালিয়া থানা পুলিশকে এমন বিপাকে পড়তে হয়েছে বলে দাবি করেছেন বোয়ালিয়া মডেল থানার এসআই মতিন।
তিনি বলেন, গত ১ অক্টোবর সন্ধা সাড়ে ছয়টার সময় বর্নালীর মোড় এলাকায় গ্রামীন ট্রাভেলস বাস (যার নম্বর ঢাকা মেট্রো ব-১৫-২২৫১) থেকে ২ টি স্বর্ণের বারসহ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার উপর রাজারামপুর (কুমারপাড়া),বর্তমান ঠিকানা রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ি থানার দরগাকুশিরা এলাকার মৃত মহসিন আলীর ছেলে আজিজুর ইসলাম (৪০) ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ থানাধীন হরিনগর তাঁতিপাড়া এলাকার আঃ মঙ্গুর ছেলে ফারুক হোসেন (৩২) নামে দুইজনকে আটক করি। উদ্ধার হওয়া ২টি স্বর্ণেরবারের বর্তমান বাজার মূল্য ১৫,১৫,৮২৪ টাকা। অভিযানে তার সাথে থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই শাহিন আখতার, মালোপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইফতেখার মোহাম্মদ আল আমিন, এটিএসআই মিনহাজুল হকসহ অন্যান্য পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন । তাদের আটক করা থেকে শুরু করে তাদের তথ্য মতে, আটক দুই জনের প্যান্টের ভেতরে (আন্ডার প্যান্টে) লুকানো অবস্থায় দুজনের কাছে দুইটি স্বর্ণেরবার উদ্ধার হয় । সে সময় শুরু থেকে থানা পুলিশ ও গ্রামীন ট্রাভেলস কতৃপক্ষসহ বাসের যাত্রীরা ঘটনার ভিডিও করে রাখেন। এর পর আটক আজিজুর ইসলাম (৪০) ও ফারুক হোসেন (৩২)কে থানায় নিয়ে এসে প্রয়োজনীয় জিঙ্গাসাবাদ শেষে ১ অক্টোবর রাতে মামলা রুজু সম্পূর্ন করে আটকদের থানায় রেখে ডিউটি শেষে বাড়ি চলে যায়। পরেরদিন সকাল থেকে দুপর পর্যন্ত প্রায় ১৫ বার চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার চরবাগডাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহিদ রানা টিপু আমার মোবাইল ফোনে ফোন দিয়ে স্বর্ণেরবারসহ আসামীদের ছেড়ে দেয়ার জন্য বলেন। না ছাড়লে আমাকে দেখে নেয়ার হুমকিসহ বিভিন্ন সাংবাদিক,আইজি, ডিআইজির কাছে আমার নামে অভিযোগ করবেন বলে হুমকি দেয় এই প্রভাবশালী ইউপি চেয়ারম্যান। তার হুমকিতে কর্ণপাত না করে ১ অক্টোবর কর ফাঁকি দিয়ে সোনা আনায়ন করায় তাদের বিরুদ্ধে ১৯৭৪ সালের ২৫বি/১/বি ধারায় মামলা রুজু শেষে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরন করি।
এদিকে প্রতিবেদক ঘটনার পূর্ণ ভিডিও দেখেন যে, আটক দুই ব্যাক্তির শুরু থেকে শেষ অবদি তাদের নিকট থাকা দুটি স্বর্ণের বার বের করে দিচ্ছেন । এ সময় তাদের জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে দুটির বেশি আর কোন বার আছে কি না? সে সময় আসামীরা বলেন না আমাদের নিকট দুটি বার ছাড়া অন্য আর কোন বার নেই । ভিডিওতে দুইজনের কাছে লুকাইতো দুটি বার বের করতেও দেখা যায় ।
স্বর্ণেরবার উদ্ধারের বিষয়ে গ্রামীন ট্রাভেলসপরিবহনের ড্রাইভার,সুপারভাইজার ও হেলপারদের জিজ্ঞাসা করলে তারা বলেন, গাড়ি ভর্তি যাত্রী ও আমাদের সামনে দুইজনকে তল্লাশি করে বোয়ালিয়া থানা পুলিশ দুইটি স্বর্ণেরবার উদ্ধার করেন । যেগুলো আমাদের সামনেই জব্দ করে দুইজন যাত্রীকে আটক করে নিয়ে যান।
জানতে চাইলে গ্রামীন ট্রাভেলস এর ম্যানেজার হাসান বলেন, আমাদের গাড়ি আটকানোর খবর শুনে আমি বর্নালির মোড়ে যাই। আমার সামনেই থানার পুলিশ সদস্যরা আটকদের আটক করা থেকে শুরু করে তাদের দুই জনের প্যান্টের ভেতরে (আন্ডার প্যান্টে) লুকানো অবস্থায় দুজনের কাছে দুইটি স্বর্ণেরবার উদ্ধার করা পর্যন্ত আমি মোবাইলে ভিডিও ধারন করি। সেখানে তাদের কাছথেকে দুইটি স্বর্ণেরবার উদ্ধার হয় যা আমার মোবাইলে ভিডিও আছে বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বোয়ালিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ নিবারন চন্দ্র বর্মন বলেন, স্বর্ণেরবারের মামলা নিয়ে বিপাকে রয়েছেন তিনি। এতো গুলো অফিসার, গ্রামীন ট্রাভেলস এর যাত্রীরা ও গ্রামীন ট্রাভেলস কতৃপক্ষের সামনে ভিডিও করে স্বর্ণেরবার উদ্ধার করেও বিতর্কের মধ্যে পড়তে হচ্ছে। তিনি বলেন, যেমন মাদক ধরার ক্ষেত্রে হয়, ধরলেও দোষ, না ধরলেও দোষ। না ধরলে বলে পুলিশ মাদক ব্যবসা করে। ধরলে বলে পুলিশ ঢুকিয়ে দিয়েছে। ঠিক তেমন ঘটনাই ঘটেছে এই স্বর্ণেরবারের মামলা নিয়ে। এমন পরিস্থিতি হয়েছে কোন অফিসার কোন আসামী ধরতে গেলে এখন ভয় করছে। তার পরেও উদ্ধতন কতৃপক্ষ বিষয়টি তদন্ত করছে বলে জানান তিনি।