আভা ডেস্ক : বেশ কয়েকজন সিনিয়র ক্রিকেটার টেস্ট খেলতে অনিচ্ছুক। বিসিবি সভাপতির এমন বিস্ফোরক মন্তব্যের পরই রঙিন পোশাকে দুই সিনিয়র খেলোয়াড়ের
বাহারি ব্যাটিং আপাতত বিতর্ক ধামাচাপা দেবে। হ্যাঁ, সাকিব, তামিমের কথাই বলা হচ্ছে। নাজমুল হাসান যে দু’জন খেলোয়াড়ের নাম বলেছিলেন, তাদের অন্যতম সাকিব আল হাসান। অপরজন মোস্তাফিজুর রহমান।
রোববার গায়ানায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম ওডিআইতে তামিম-সাকিবের ২০৭ রানের জুটির খুঁটি ধরে বাংলাদেশ ৪৮ রানের জয় পেয়েছে। খুবই দরকার ছিল এই জয়। সাদা পোশাকের ক্রিকেটে একেবারে বিবর্ণ সাকিবরা ফরম্যাট বদলাতেই ফিরে পেলেন নিজেদের। তিনদিনেরও কম সময়ে দুই টেস্টেই হেরে বসা বাংলাদেশ রঙিন পোশাকে ফিরতেই চনমনে, চাঙা। সাকিবের খানিকটা খেদ থাকবে তিন রানের জন্য সেঞ্চুরি মিস করায়। তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করলে তার জন্য সেটি হতো সোনায় সোহাগা। সাকিব না পারলেও তামিম পেরেছেন। তামিমের ১৩০ রানের ম্যাচ জেতানো ইনিংসের পাশে মুশফিকুর রহিমের ১১ বলে ৩০ রানের কথাও বলতে হয়। মুশফিকের ঝড়ো ব্যাটিংয়েই বাংলাদেশ শেষ দুই ওভারে ৪৩ রান তোলে।
অতিশয়োক্তি হবে না যদি বলা হয়, অধিনায়ক মাশরাফি মুর্তজার ফিরে আসাটাও ম্যাজিকের কাজ করেছে। তার ক্যারিবীয় সফরের ওপর প্রশ্নচিহ্ন ঝুলছিল। স্ত্রীর অসুস্থতায় প্রায় পিছিয়েই গিয়েছিল মাশরাফির ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর। তিনটি দুরন্ত স্পেলে তার চার উইকেটও জয়ে ঢের অবদান রেখেছে। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের প্রার্থিত জয়ে সিনিয়রদের ভূমিকাই মুখ্য। রং বদলের সঙ্গে সঙ্গে ভাগ্যবদলও হয় তাহলে? এটাই কী সেই দল, যারা পাঁচদিনের কিছুটা বেশি সময় দুটি টেস্ট হেরেছে? ম্যাচসেরা তামিম ইকবালের কথায়, ‘টেস্ট সিরিজে নিজেদের হারিয়ে খুঁজেছি আমরা। এই ফরম্যাটে আমরা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। ছেলেরা ঘুরে দাঁড়িয়েছে দেখে ভালো লাগছে।’
তামিম ইকবালের দশম ওয়ানডে শতক, সাকিবের (৯৭) সঙ্গে তার ২০৭ রানের জুটি এবং ইনিংসের লেজে মুশফিকের ‘বারবিকিউ ব্যাটিংয়ে’ ২৭৯/৪। যা এবারের উইন্ডিজ সফরে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ। ফিনিশিং দেয়ার জন্য কারও না কারও প্রয়োজন হয়। সেই দরকারি কাজটা করলেন মাশরাফি একজন যোগ্য নেতার মতো। তার চার উইকেট এবং উজ্জীবিত নেতৃত্বগুণে দুঃস্বপ্নের সফরে প্রথম জয়তৃষ্ণা মিটল টাইগারদের।
৩৫তম ওভার পর্যন্ত ম্যাচে ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শেষ ১৫ ওভারে তাদের দরকার ছিল ১৪০
রান। হাতে ছয় উইকেট। শেষ করল তারা ২৩১/৯-এ। যোসেফ ও বিশুর অবিচ্ছিন্ন হাফ সেঞ্চুরির জুটি স্বাগতিকদের হার পিছিয়েছে শুধু। শিমরন হেটমায়ারের ৫২ ইনিংস সর্বোচ্চ।
ওডিআইতে এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় দু’শর বেশি রানের জুটি। আর সব মিলিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে গায়ানার প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামে সর্বোচ্চ পার্টনারশিপ।
যুগান্তর