বৃষ্টি সংকটে রাজশাহীর পাট চাষীরা।

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহী অঞ্চলে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত না হওয়া পাট নিয়ে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। পাশাপাশি দাম কম পাওয়ায় এবার পাট চাষ কমেছে প্রায় এক হাজার হেক্টর জমিতে। ফলে পাট চাষের কাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। এরই মধ্যে জমি থেকে পাট সংগ্রহের কাজ শুরু করেছেন কৃষকরা। কিন্তু পানির সঙ্কটে পাট জাগ দিতে পারছে না অনেকেই। এতে করে পাট নিয়ে বিপাকে পড়েছে তাঁরা। কোথাও কোথাও জায়গা সঙ্কটের কারণে পাট কেটে রাস্তার পাশে স্তুপ করে রাখা হয়েছে।

সরেজমিন রাজশাহীর দুর্গাপুরের পালি গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, এই গ্রামের অন্তত শতাধিক কৃষক জমি থেকে পাট কেটে রাস্তার পাশে স্তুপ করে ফেলে রেখেছেন। বর্ষায় বিলে পানি জমলে সেই পাট জাগ দেওয়ার আশা করছেন তারা। আবার কেউ কেউ কোনো কোনো পুস্কনিতে পাট জাগ দিয়ে রেখেছেন। সেখানে ফাঁকা হলে আরেকজন গিয়ে পাট জাগ দিবেন-এমন আশায়ও বসে আছেন অনেকেই। কিন্তু পানির সঙ্কটের কারণে এবং রোদে কাঁচা পাট এরই মধ্যে নষ্ট হতেও শুরু করেছে বলে জানান কৃষকরা।

ওই গ্রামের কৃষক সোলেমান আলী জানা, এবার তিনি প্রায় ৪ বিঘা জমিতে পাটচাষ করেছেন। এরই মধ্যে তি বিঘা জমির পাট কেটে সম্পœ করা হয়েছে। কিন্তু পানির ওভাবে এখনো প্রায় আড়াই বিঘা জমির পাট জাড় দিতে পারেননি। ওই পাটগুলো রাস্তার পাশে এবং জমির ধারে আইলে স্তুপ করে রেখেছেন তিনি। তাঁর একটি পুস্কুনিতে কিছু পাট জাগ দেওয়া হয়েছে। সেগুলো জাগ সম্পন্ন হলে আরো কিছু সেখানে নিয়ে জাগ দিবেন তিনি। তবে অনেকেই এখনো তাকি আছেন বর্ষার বৃষ্টির দিকে। বৃষ্টিতে খাল-বিল ডুবে গেলে সেই পানিতে পাট জাগ দিবেন কৃষকরা।’

কৃষক সোলেমান বলেন, ‘সময় মতো পাট পানিতে জাগ দিতে না পারলে নষ্ট হয়ে যাবে। তখন আমরা আরো ক্ষতিরমুখে পড়ব। আবার অনেকেই পানির অভাবে পাট কাটতেই পারছেন না। পাট কেটে সেই জমিতে সাধারণত কৃষকরা ধানচাষ করেন। কিন্তু পাট কাটতে না পেরে অনেকেই ধানচাষ করতেও পারছেন না।’
আরেক কৃষক মজিবুর রহমান বলেন, ‘পানির অভাবে পাট জাগ দিতে পারছি না। কোথায় জাগ দিব, বুঝতে পারছি না। তাই পাট রাস্তার ধারে ফেলে রেখেছি। নষ্ট হচ্ছে। কিন্তু কি করব? উপায় তো নাই।’

তিনি আরো জানান, এবার বিঘা প্রতি অন্তত ১০ মণ হারে পাটের উৎপাদন হতে পারে। কিন্তু গতবারের মতো পাটের বাজার থাকলে কৃষকরা এবারো লোকসানের মুখে পড়বেন। গতবার শুরুতেই প্রতি মণ ৮০০ টাকা সর্বোচ্চ তরে পাট বিক্রি করেছেন কৃষকরা। কিন্তু শ্রমিকের দাম বেড়ে যাওয়ায় এবার পাটের দাম না বাদলে লোকসানে পড়বেন চাষিরা।

পুঠিয়া উপজেলার বেলপুকুর এলাকার কৃষক আকবর আলী বলেন, ‘পানি মাঝে কয়েকদিন হলো। কিন্তু বিলে পানি জমেনি। এ কারণে পাট জাগ দিতে সমস্যা হচ্ছে। বেশি বৃষ্টি না হলে বিলে পানি জমে না। তাই এখনো আমরা বেৃষ্টির আশায় বসে আছি। বৃষ্টিতে বিল ডুবলে পাট কাটব।’

এদিকে রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালে রাজশাহীতে পাট চাষ হয়েছিল ১৩ হাজার ৬২২ হেক্টর জমিতে। ২০১৭ সালে সেটি গিয়ে দাঁড়ায় ১৩ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে। এবার পাট চাষ হয়েছে ১২ হাজার ৮২৫ হেক্টর জমিতে। যা গতবছরের তুলনায় ৮৭৫ হেক্টর কম।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক দেব দুলাল ঢালী বলেন, এখন পর্যন্ত প্রায় ১০ শতাংশ জমির পাট কাটা হয়েছে। তাতে ফলন হয়েছে ২ দশমিক ৩৮ মেট্রিকটন। এবার পাটচাষ কম হলেও উৎপাদন ভালো হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

Next Post

রাজধানীর বাজার গুলোতে মসলার দাম চড়া।

রবি আগস্ট ১২ , ২০১৮
আভা ডেস্ক: ঈদুল আজহার দেড় সপ্তাহ আগেই রাজধানীর বাজারগুলোতে মসলার দাম চড়া হতে শুরু করেছে। এর মধ্যে দারুচিনি, এলাচের দাম বেশি বেড়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রতি বছর কোরবানির ঈদের আগে বেড়ে যায় মসলার দাম। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। কোরবানির ঈদ মানেই মাংস। আর মাংস রান্নায় প্রধান উপকরণ মসলা। এ জন্য ঈদুল […]

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links