বিয়ের প্রলোভন দিয়ে রোহিঙ্গা নারীকে মালেশিয়া নেওয়ার পথে ট্রলার ডুবির ঘটনায় নিহত-১৬ ।

আভা ডেস্কঃ সাগরপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার সময় কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার সেন্টমার্টিন এলাকায় ট্রলারডুবির ঘটনায় ১৬ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বিনা খরচে বিদেশে নিয়ে তাদের বিয়ে দেয়া হবে বলে তরুণীদের ওই ট্রলারে তোলা হয়েছিল বলে জানা গেছে।

মঙ্গলবার ভোরে প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনের ছেঁড়া দ্বীপের কাছে গভীর সমুদ্রে তাদের বহনকারী ট্রলারটি ডুবে যায়।

এ দুর্ঘটনার পর জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে অন্তত ৭৬ জনকে। বাকিদের উদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছে কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনী। ওই ট্রলারে ১২০ জনের মতো রোহিঙ্গা ছিল বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানান উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা।

উদ্ধার হওয়াদের মধ্যে এক তরুণী জানান, তাদেরকে দীর্ঘদিন ধরে ক্যাম্পের বেশ কয়েকজন ব্যক্তি বিনা খরচে বিদেশে নিয়ে বিয়ে দেয়ার জন্য বলে আসছিল। তাদের কথামতো পিতা-মাতা রাজি হওয়ার পর একাধিকবার যাওয়ার তারিখ পড়ে। সর্বশেষ সোমবার সন্ধ্যার আগে তাকে ক্যাম্প থেকে বের করে পাশবর্তী একটি ঘরে নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে দেখে তার মতো আরও অনেকেই বিদেশ যাওয়ার জন্য ওই ঘরে অবস্থান করছে। পরে রাত ১১টার দিকে ওই ঘর থেকে বের করে দালালচক্র তাদের ট্রালারে তুলে দেয়।

এ ব্যাপারে রোহিঙ্গা নেতা ছৈয়দ উল্লাহ জানান, দীর্ঘদিন ধরে রোহিঙ্গা ক্যাম্প ঘিরে বেশ কিছু দালাল সক্রিয় রয়েছে। বাইরের কিছু দালালের সহযোগিতায় তারা রোহিঙ্গাদের নানা প্রলোভন দেখিয়ে মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে পাচারের চেষ্টা চালায়।

সূত্র জানায়, সোমবার রাতে টেকনাফ রোহিঙ্গা শিবিরের কয়েকটি ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গা ও স্থানীয় দালালরা মিলে ক্যাম্পের সুন্দরী তরুণীদের বিদেশে নিয়ে বিয়ে দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ক্যাম্প থেকে বের করে। পরে দালালের পরিকল্পনা অনুযায়ী রোহিঙ্গাদের একটি গ্রুপকে টেকনাফের বাহারছড়া দিয়ে ট্রলারে তুলা হয়। পাশাপাশি পৃথক আরেকটি গ্রুপকে তুলা হয় উখিয়-টেকনাফের মাঝামাঝি সমুদ্র তীরবর্তী স্থান থেকে।

এ ঘটনায় টেকনাফ থানা পুলিশ তৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের মানব পাচারকারী দালাল আইয়ুব, রফিক ও সাদ্দাম নামে তিন দালালকে আটক করেছে।

টেকনাফের স্থানীয় সাংবাদিক গিয়াস উদ্দিন ভুলু জানান, ট্রলার ডুবির ঘটনায় মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ১৬ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। পাশাপাশি জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে ৭৬ জনকে।

কক্সবাজার পুলিশ সুপার মো. এবিএম মাসুদ হোসেন বিপিএম বলেন, প্রতি বছর শীতকাল আসলেই মানবপাচার বেড়ে যায়। কারণ দালালরা এই সুযোগটি কাজে লাগিয়ে মানবপাচার শুরু করে। তবে সম্প্রতি সময়ে যারা এই কাজে পা দিয়েছে তারা সিংহভাগেই রোহিঙ্গা। মূলত স্থানীয় ও কিছু রোহিঙ্গা দালালরা নানা প্রলোভন দিয়ে রোহিঙ্গাদের পাচার করছে।

পুলিশ সুপার আরও বলেন, মঙ্গলবার পাচারের সময় যেসব রোহিঙ্গা ট্রলার ডুবিতে মারা গেছে তাদেরকে টেকনাফের বাহারছড়া ও উখিয়া-টেকনাফের মাঝামাঝি সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে বোটে তুলা হয়েছিল। এই পাচারের সঙ্গে যারা জড়িত ছিল ইতিমধ্যে তাদের তিন দালালকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা হল টেকনাফের বাহারছড়া আইয়ুব, রফিক ও সাদ্দাম।

Next Post

রাজশাহীতে দেশী পিস্তল সহ একজন অস্ত্র ব্যবসায়ীকে আটক করেছে র‌্যাব-৫

মঙ্গল ফেব্রু. ১১ , ২০২০
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ রাজশাহীতে দুইটি দেশীয় পিস্তল ও গুলিসহ মাসুদ রানা(৩৫) নামক এক অস্ত্রব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। আজ মঙ্গলবার নগরীর শাহমুখদুম থানার মোড় এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত অস্ত্র ব্যবসায়ী মাসুদ রানা পবা নতুনপাড়া এলাকার ফারুক হোসেনের ছেলে। র‌্যাব সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নগরীর শাহমখদুম থানার মোড়ে […]

এই রকম আরও খবর

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links