আভা ডেস্কঃ সংবিধানের আলোকে বিচারপতি নিয়োগ সংক্রান্ত আইন প্রণয়ন করা বাস্তবতার নিরীখে অপরিহার্য বলে মনে করেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। একইসঙ্গে তিনি বলেছেন, ভার্চুয়াল ও একচুয়াল দুভাবে কোর্ট পরিচালনা করলে মামলার জট কমে আসবে।
আপিল বিভাগের এক নম্বর বিচারকক্ষে গতকাল বুধবার সকালে বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি এ কথা বলেন। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘আমি অবনত মস্তকে পরম করুণাময় আল্লাহর নিকট গভীর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি, যিনি আমার মতো একজন সাধারণ মানুষকে বিচার বিভাগের সর্বোচ্চ আসনে সমাসীন করেছেন। আজকের এই দিনটিও আমার জীবনে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’
মুজিববর্ষ, স্বাধীনতা ও বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করে সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, ‘সংবিধানে রাষ্ট্রের তিনটি অঙ্গ- আইন বিভাগ, শাসন বিভাগ ও বিচার বিভাগের দায়িত্ব এবং স্বাতন্ত্রিক বৈশিষ্ট্য স্পষ্টভাবে বিধৃত রয়েছে। তিনটি অঙ্গের সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কই গণতন্ত্রকে বিকশিত করে। নিঃসন্দেহে বলা যায়- It is the beauty of our Constitution. একটি স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার অন্তর্নিহিত শক্তির উৎস হলো জনগণের আস্থা। এটা হলো বিচারকদের সততা, সক্ষমতা ও নিরপেক্ষতার প্রতি গণমানুষের অবিচল বিশ্বাস।’
বিচারকদের সম্পর্কে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘সাধারণ মানুষের এই আস্থা অর্জনের জন্য বিচারকদের একদিকে যেমন উঁচু নৈতিক মূল্যবোধ ও চরিত্রের অধিকারী হতে হবে, তেমনি সদা বিকাশমান ও পরিবর্তনশীল আইন, প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ ও সামাজিক মূল্যবোধ বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে।’
আইনজীবীদের উদ্দেশ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘একজন আইনজীবীর জীবন কখনোই মসৃণ নয়। বিভিন্ন চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে সাফল্যের শিখরে পৌঁছতে প্রয়োজন একাগ্র নিষ্ঠা, সময়ানুবর্তিতা, ধৈর্য্য, সততা, পরিশ্রম এবং নিরন্তর অধ্যয়ন। প্রতিটি মামলা পরিচালনায় তার শিক্ষা, মেধা ও বিচক্ষণতার প্রয়োগ হতে হবে। জেনে-শুনে মামলার ঘটনার বিকৃত উপস্থাপনা করা একজন আইনজীবীর কখনোই উচিত নয়। সঠিক সাক্ষ্য-প্রমাণ এবং আইনি বিশ্লেষণের মাধ্যমে সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হতে আদালতকে সহায়তা করা মূল উদ্দেশ্য। আইন পেশার সুমহান মর্যাদা রক্ষা করতে সব অনিয়মের বিরুদ্ধে বার ও বেঞ্চকে সোচ্চার থাকতে হবে। আইনজীবী ও বিচারকরা হচ্ছেন একটি পাখির দুটি পাখার মতো। বাম হাত ও ডান হাতের মতো। তাদের পরস্পরের প্রতি আস্থার সম্পর্ক বিচার ব্যবস্থার গুণগত মান বৃদ্ধি করবে।’
মামলা জট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দেশে বিদ্যমান মামলার পরিসংখ্যান থেকে এটা প্রতীয়মান হয় যে, বিচারের অভিগম্যতা অনেক বেড়েছে। একথা অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই যে, এখনও বাংলাদেশের আইন ব্যবস্থার প্রতি সাধারণ জনগণের প্রবল আস্থা রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘মামলার সংখ্যা বিবেচনায় আমাদের বিচারকের সংখ্যা অপ্রতুল। মামলার জট নিরসনে দেশের অধস্তন আদালত থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ আদালত পর্যন্ত বিচারকের সংখ্যা পর্যায়ক্রমে দ্বিগুণ করা প্রয়োজন। জেনে খুশি হয়েছি যে, উচ্চ আদালতে বিচারপতি নিয়োগ সংক্রান্ত আইন প্রণয়নের লক্ষ্যে সরকার কাজ শুরু করেছে। সংবিধানের আলোকে বিচারপতি নিয়োগ সংক্রান্ত আইন প্রণয়ন করা বাস্তবতার নিরীখে অপরিহার্য। এতে বিচারপতি নিয়োগের কাজটি আরো স্বচ্ছ ও দ্রুততর হবে এবং জনগণের মধ্যে বিচারপতি নিয়োগের স্বচ্ছতা সম্পর্কে ভিত্তিহীন ধারণা দূরীভূত হবে।’
প্রধান বিচারপতি বলেন, বিচার বিভাগের অবকাঠামোগত উন্নয়নে সরকার নিরন্তর কাজ করলেও অনেক জেলায় এখনো জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসি বিল্ডিং নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হয়নি। ফলে একই এজলাসে একাধিক বিচারককে কাজ করতে হয়। এতে সময়ের অপচয় হয়। সংগত কারণেই বিচারকদের কাজের পরিবেশ সৃষ্টির জন্য ভৌত অবকাঠামোগত উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা বাঞ্ছনীয়।
ভার্চুয়াল কোর্ট নিয়ে সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, ‘ভার্চুয়াল কোর্টের মাধ্যমে বিচারকার্য পরিচালনার জন্য ফিজিক্যাল কোর্টের মতো তেমন অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধার প্রয়োজন নেই। এক্ষেত্রে ফিজিক্যাল এবং ভার্চুয়াল কোর্ট যুগপৎভাবে বিচার কাজ পরিচালনা করলে বিচার নিষ্পত্তি আরো দ্রুততর হবে বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।’
প্রধান বিচারপতির বক্তব্যের আগে তাকে সংবর্ধনা দেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সহ-সভাপতি আইনজীবী মহা. শফিক উল্লাহ। এ সময় আইনজীবীদের উপস্থিতিতে পুরো কোর্ট রুম ভরপুর ছিল। তবে দাওয়াত না দেয়ায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠান বর্জন করেন আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলসহ বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা।
বুধ ডিসে. ১৫ , ২০২১
আভা ডেস্কঃ অ্যাসিড ব্যাটারিচালিত ৪০ লাখ ইজিবাইক বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। এসব ইজিবাইক আমদানি ও ক্রয়-বিক্রয়ে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আদালত। ইজিবাইক জব্দের নির্দেশনা চেয়ে করা আবেদনের শুনানি নিয়ে বুধবার বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব আদেশ দেয়। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আতিক তৌহিদুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে […]
এই রকম আরও খবর
-
-
২৩ নভেম্বর, ২০২০, ৭:১৩ অপরাহ্ন
-
২৫ মার্চ, ২০২২, ৬:৫৭ অপরাহ্ন
-
২৬ মে, ২০২০, ৯:২৬ অপরাহ্ন
-
২০ জুলাই, ২০২১, ৭:১৩ অপরাহ্ন
-
১৮ জুন, ২০২০, ১:১৪ অপরাহ্ন