আভা ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমার চলার পথ কখনই খুব সহজ ছিল না। বারবার মৃত্যুর মুখোমুখি হতে হয়েছে। কিন্তু পিছিয়ে যাইনি। যদিও আমি আমার সব প্রিয়জনকে হারানোর বিরাট বেদনা নিয়ে বাস করছি। গণভবনে মঙ্গলবার বিকালে এক অনুষ্ঠানে রাখা বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। কিন্তু পরাজিত শক্তিও বসে থাকেনি। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট একটি অগ্রসরমান জাতির ওপর তারা চূড়ান্তভাবে আঘাত করে। ১৯৭৫ সালের এই দিনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তার স্ত্রী বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, তাদের তিন ছেলে, দুই পুত্রবধূ এবং পরিবারের অন্য সদস্যদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুর পরিবারের প্রত্যেক সদস্যকে হত্যা করে যাতে তার রক্তের উত্তরাধিকারী কেউ ভবিষ্যতে ক্ষমতায় আসতে না পারে এবং বাংলাদেশের জনগণ কোনো নেতৃত্বের অধীনে কখনও একতাবদ্ধ হতে না পারে।
সাউথ এশিয়া সাব-রিজিওনাল কো-অপারেশনের (সাসেক) অংশ হিসেবে জয়পুর-চন্দ্রা-টাঙ্গাইল-এলেঙ্গা হাইওয়ের (এন-৪) বিভিন্ন স্থানে নির্মিত ২৩টি সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ফেনী জেলার ফতেহপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম চার লেন মহাসড়কে রেলওয়ের ওভারপাসও উদ্বোধন করেন। সড়ক ও জনপথ বিভাগ জয়পুর-চন্দ্রা-টাঙ্গাইল-এলেঙ্গা হাইওয়ের ওপর ৩০৪ কোটি ১৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ২৩টি সেতু নির্মাণ করেছে এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ৬৮ কোটি ৬১ লাখ টাকা ব্যয়ে ফতেহপুরে ৮৬ দশমিক ৭৯ মিটার দীর্ঘ রেলওয়ে ওভারপাসটি নির্মাণ করেছে। শেখ হাসিনা বলেন, এসব সেতু কেবল বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নই নিশ্চিত করবে না, জাতির পিতার স্বপ্নের আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্রেও নতুন যুগের সূচনা করবে। তিনি বলেন, সরকার এখন থেকে স্থানীয় পরিবহন ও জনসাধারণের চলাচলের জন্য দুটি অতিরিক্ত সার্ভিস রোড রেখে চার লেনবিশিষ্ট মহাসড়ক নির্মাণ করছে। এসব সড়ক দুর্ঘটনা কমাবে এবং স্থানীয় জনসাধারণের চলাচলও নির্বিঘ্ন থাকবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যেখানে প্রয়োজন সেখানে আন্ডারপাস ও ওভারপাস নির্মাণ করা হবে। প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, জয়পুর-চন্দ্রা-টাঙ্গাইল-এলেঙ্গা হাইওয়ের ওপরে নির্মিত সেতুগুলো ঢাকা-টাঙ্গাইল সড়কে যাত্রীদের ভোগান্তি কমাবে এবং রেলওয়ের ওভারপাসটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের যাত্রা সহজ করবে। প্রধানমন্ত্রী ঢাকা ও অন্য প্রধান নগরীগুলোর মধ্যে দ্রুতগামী ট্রেন চালু করার জন্য তার সরকারের পরিকল্পনা পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, রাজধানীর যোগাযোগ ব্যবস্থা আধুনিকায়ন করতে ঢাকায় এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ বক্তব্য রাখেন। সড়ক ও জনপথ বিভাগের সচিব নজরুল ইসলাম প্রকল্পগুলোর বিভিন্ন দিক তুলে ধরে একটি প্রেজেনটেশন প্রদান করেন। মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।
যুগান্তর