বাজেট বরাদ্দ থাকলেও মশা মরছে না।

আভা ডেস্ক : রাজধানীতে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। এ বছর গত আট মাসে প্রায় ৩ হাজার ব্যক্তি এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে মারা গেছেন ১১ জন। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে অগ্রগতি না থাকলেও বছর বছর মশা নিধনে বাজেট বরাদ্দ বাড়ছে।

রাজধানীর মশা নিধনের দায়িত্ব ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের। নগর বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মশা নিধনে সিটি করপোরেশনের কার্যক্রম তেমন একটা কাজে আসছে না।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাবলিক হেলথ ইমারজেন্সি অপারেশন সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুমের তথ্য বলছে, এ বছরের প্রথম আট মাসে রাজধানীতে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৭৮৮ জন। মারা গেছেন ১১ জন। এর মধ্যে আগস্ট মাসেই আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৫৪১ জন। গড়ে প্রতিদিন আক্রান্তের সংখ্যা ৫১ জন।

২০১৪ থেকে ২০১৮ সালের হিসাবে দেখা যায়, ঢাকায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ছিলেন ১৫ হাজার ১৭৪ জন। এর মধ্যে মারা যান ৩৯ জন। তাঁরা সবাই রাজধানীর বাসিন্দা।

হেলথ ইমারজেন্সি অপারেশন সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আয়েশা আক্তার বলেন, রাজধানীবাসী যে হারে এ বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছেন, তাতে বাকি চার মাসে সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। তিনি বলেন, ঢাকার জলাবদ্ধতা ডেঙ্গু ছড়ানোর অন্যতম কারণ। বাসাবাড়ির ফুলের টব, বালতি ও পুরোনো টায়ারে জমে থাকা পানি ডেঙ্গুর ভাইরাসবাহী মশার বংশবিস্তারের উপযুক্ত জায়গা।

এই মশার উপদ্রব থেকে রাজধানীর বাসিন্দাদের রক্ষায় দুই সিটি করপোরেশন প্রতিবছর মশা নিধনের জন্য বরাদ্দ রাখে। উদ্দেশ্য ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়ার মতো মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধ করার পাশাপাশি মানুষকে স্বস্তিতে রাখা। কিন্তু ডেঙ্গুর প্রকোপ থেকে বোঝা যায়, সিটি করপোরেশনের উদ্যোগ রাজধানীবাসীর তেমন একটা কাজে আসছে না।

গত পাঁচ বছরে মশা নিধনে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের বাজেট বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) বরাদ্দ বেড়েছে ১২২ দশমিক ২২ শতাংশ। সর্বশেষ অর্থবছরে সংস্থাটির বরাদ্দ ছিল ২০ কোটি টাকা। আর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) বরাদ্দ বেড়েছে ১৩৮ দশমিক ৬৩ শতাংশ। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বরাদ্দ ছিল ২৬ কোটি ২৫ লাখ টাকা।

২০১৪ সালে ডেঙ্গু-আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা ছিল ৩৭৫ জন। পরের দুই বছরই এই সংখ্যা বেড়েছে। ২০১৬ সালে ছিল ৬ হাজার ৬০ জন। পরের বছর আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা প্রায় অর্ধেক কমে আসে। কিন্তু এ বছর গতকাল পর্যন্ত বেড়ে হয়েছে ২ হাজার ৯৬৫।

এ বছরের শুরু থেকেই মশা নিধনে বেশ ঘটা করেই অভিযান চালিয়েছে দুই সিটি করপোরেশন। হাতে কিংবা গাড়িতে ফগার মেশিন বসিয়ে মশক নিধনকাজে অংশ নিতে দেখা গেছে কর্মকর্তাদের। গতকালও একটি কর্মসূচি শুরু করেছে ডিএসসিসি।

এ বছর মার্চের দিকে দুই সিটি করপোরেশনের ১৯টি এলাকাকে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এরপর এই এলাকাগুলোতে মশা নিধনের বিশেষ কর্মসূচি চালানোর ঘোষণা দেয় ডিএসসিসি ও ডিএনসিসি। অথচ সংশ্লিষ্ট এলাকার কাউন্সিলরদের অনেকেই ঝুঁকির কথা জানতেন না। তখন দুই সিটির ওই এলাকার ১০ জন কাউন্সিলর প্রথম আলোকে বলেছিলেন, তাঁদের এলাকার ঝুঁকির কথা তাঁরা জানেন না। একজন বলেছিলেন, তিনি তথ্যটি জানেন। বাকি এলাকার কাউন্সিলরের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

গত বুধবার ডিএসসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শেখ সালাউদ্দিন বলেন, ‘ক্র্যাশ প্রোগ্রাম ছাড়াও এখন পর্যন্ত দুটি বিশেষ কর্মসূচিতে ৫৭টি দলের সাহায্যে প্রায় ৩৩ হাজার বাড়িতে গিয়ে মশার লার্ভা ধ্বংস করা হয়েছে। এমন কর্মসূচি সামনে আরও আছে। কিন্তু অভিযানের পর বাড়ির মানুষ যদি খেয়াল না রাখেন, তাহলে আমাদের কিছু করার নেই।’

অবশ্য নগর বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক নজরুল ইসলাম মনে করেন, শুধু বাজেট বাড়ালেই মশা নিধন হবে না। বরাদ্দের পুরো ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। ঢাকা মহানগরে প্রতিনিয়ত লোকসংখ্যা বাড়ছে। তাই মশা নিধনে দুই সিটি করপোরেশনের কার্যক্রমও বাড়ানো উচিত। প্রথমআলো

Next Post

সুন্দরবনকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে অনুমোদন দেওয়া হলো শত বছরের ডেল্টা প্ল্যান।

বুধ সেপ্টে. ৫ , ২০১৮
আভা ডেস্ক ; ইউনেসকো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্যের স্থান সুন্দরবনকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে অনুমোদন দেওয়া হলো শত বছরের ডেল্টা প্ল্যান। সোয়া ছয় হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিস্তৃত সুন্দরবন অঞ্চলে ঘসিয়াখালী চ্যানেলসহ অন্যান্য চ্যানেলে নিয়মিত ড্রেজিং করার পাশাপাশি সুন্দরবন রক্ষায় নানামুখী পদক্ষেপের প্রস্তাব করা হয়েছে ১০০ বছর মেয়াদি পরিকল্পনায়। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক […]

শিরোনাম

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links