নিজস্ব প্রতিনিধিঃ রাজশাহীর বাঘায় স্কুলছাত্র আরিফ হোসেন (১৯) হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) । জমিজমার জের ধরে আরিফকে হত্যা করে লাশ পুড়িয়ে দেয়া হয় বলে জানিয়েছেন পিবিআই এর পরিদর্শক আব্দুল মান্নান।
২০১৮ সালের ১৩ ডিসেম্বর রাজশাহীর বাঘায় আগুনে পুড়িয়ে মারা কলেজ ছাত্রের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সে উপজেলার রস্তমপুর ভারতিপাড়া গ্রামের মহির উদ্দীনের ছেলে। আনোয়ার হোসেনের আম বাগানের মাঝখানের খাল থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। আরিফ চারঘাটের পান্নাপাড়া ভোকেশনাল স্কুল এন্ড কলেজের নবম শ্রেণীর ছাত্র ছিল। ১২ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় নিজ প্রয়োজনে রস্তমপুর বাজারে যায় আরিফ। পরে রাতে আর বাড়িতে ফেরেনি। ধারনা করছিলেন, নানি অথবা বোনের বাড়িতে গিয়েছে। পরের দিন দুপুরে গ্রামের লোকজন লাশ দেখতে পেয়ে থানায় খবর দেয়। এ ঘটনায় আরিফের মা আছিয়া বেগম বাঘা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে। (যার মামলা নম্বর ০৬।)
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান জানান, ঘটনার কয়েক মাস পরেই মামলাটি পিবিআইয়ে আসে। স্কুলছাত্র আরিফ হত্যাকান্ড ক্লুলেস (তথ্যহীন) ঘটনা ছিল। তবে সে সময় সন্দেহভাজন হিসেবে মৃত আরিফে চাচাত ভাই মিঠুকে গ্রেফতার করে বাঘা থানা পুলিশ। পরে মিঠু জামিনে বেরিয়ে যায়। এর পর তদন্ত শুরু হলে সন্দেহ ভাজন হিসেবে আমরা দুইজনকে গ্রেফতার করি। গ্রেফতারকৃতরা হলেন আরিফের ফুফাতো ভাই মজনু ও চাচা কুদ্দুসের নাতি মিলন। গত ১২ আগষ্ট ২০২০ তারিখে এ হত্যাকান্ডে জড়িত মিজানুর রহমান (৩৬) নামে একজন গ্রেপ্তারের পর হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। ১৩ আগষ্ট বুধবার সন্ধ্যায় রাজশাহীর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট উজ্জল মাহমুদ মিজানুরের জবানবন্দি রেকর্ড করেন বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পিবিআই এর পরিদর্শক আব্দুল মান্নান। পরিদর্শক আব্দুল মান্নান আরও জানান, মঙ্গলবার রাতে নিজ বাড়ি থেকে মিজানুরকে গ্রেপ্তার করা হয়। মিজানুর আদালতে তার জবানবন্দিতে জানিয়েছে আরিফের চাচা কুদ্দুসের সঙ্গে জমিজমা নিয়ে বিরোধের জের ধরে তাকে হত্যা করা হয়। কুদ্দুস ছাড়াও হত্যাকান্ডের সময় মিলন ও মজনু নামের আরও দুইজন সেখানে উপস্থিত ছিল। প্রথমে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর লাশ পুড়িয়ে দেয়া হয় বলে মিজানুর স্বীকারোক্তি দিয়েছে। মিজানুর রহমানের বাড়ি বাঘার রস্তমপুর ভারতীপাড়ায়। তিনি ইব্রাহীম আলীর ছেলে। মিজানুর পেশায় ভ্যান চালক। জবানবন্দি রেকর্ডের পর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
এই মামলার বিষয়ে পিবিআই এর সুদক্ষ অফিসার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ এর নিকট জানতে চাইলে তিনি ভোরের আভাকে জানান, দেশের মানুষ এখন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেষ্টিগেশর (পিবিআই) এর উপর আস্থা পাচ্ছে। আমাদের কাছে যেকোন মামলা আসলে সঠিক তদন্ত করে অপরাধিদের আইনের আওতায় নিয়ে আসছি। আমাদের তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করলে প্রতিটি মামলায় ভালো ফলাফল উপহার দিতে পারবো ইনশাআল্লাহ ।