নিজস্ব প্রতিনিধিঃ বাংলাদেশ তৃণমুল সাংবাদিক কল্যাণ সোসাইটির রাজশাহী কমিটির পক্ষে শহিদ মিনারে পুষ্প অর্পণ ও শ্রদ্ধাঞ্জলী জ্ঞাপন করা হয়েছে । বৃহঃপতিবার দিনগত রাত ১২ বেজে ১ মিনিটি রাজশাহী কলেজ শহিদ মিনারে পুষ্প অর্পণ ও শ্রদ্ধাঞ্জলী জ্ঞাপন করেন কমিটির নেতৃবৃন্দ । শহিদের প্রতি শ্রদ্ধা ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা উপলক্ষে কমিটি একটি র্যালী করে রাজশাহী কলেজ শহিদ মিনারে যায় । নেতৃবৃন্দ শহিদ মিনারে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন ও ১ মিনিট নিরবতা পালন করেন । সে সময় উক্ত র্যালী ও পুষ্প অর্পণ কালে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ তৃণমুল সাংবাদিক কল্যাণ সোসাইটির কেন্দ্র কমিটির রাজশাহী বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক রেজাউল করিম । আরো উপস্থিত ছিলেন, রাজশাহী কমিটির সভাপতি এম এ হাবিব জুয়েল, সাধারণ সম্পাদক মূর্শেদ জামান শাকিল, সহঃ সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, আক্তারুল হাসান অপু, হারুনুর রশিদ, রমজান আলী, মাসুদ বিন হাকিম, সুজন, আসিফ, সুমন, জাহিদুল, ইমরান, প্রমূখ ।
আজ সেই দিন। অমর একুশের শহীদদের জাতি জানাবে শ্রদ্ধা। সব পথ এসে মিশে যাবে এক অভিন্ন গন্তব্য কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। বসন্তে ফোটা ফুলের স্তবক হাতে, নগ্ন পায়ে ধীরে ধীরে যাবে বেদীর দিকে। কণ্ঠে সেই গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি/আমি কি ভুলিতে পারি…’। ছাত্র, কৃষক, শ্রমিক জনতা, আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা আর বাবা-মার হাত ধরে শিশু- সবাই ছুটবে শহীদ মিনারে। ভাষাশহীদদের প্রতি নিবেদিত শ্রদ্ধার ফুলে ফুলে ঢেকে যাবে শহীদ মিনারের বেদী। আজ একুশে ফেব্রুয়ারি, মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।
বাঙালি জাতির জীবনের এক অবিস্মরণীয় দিন আজ। পাকিস্তানি দুঃশাসন ও শোষণের শৃঙ্খল ভেঙে বাঙালি জাতিসত্তা বিনির্মাণের প্রথম সোপান। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হতে না হতেই পাকিস্তানিরা আমাদের মুখের ভাষা ‘বাংলা’ কেড়ে নিতে চায়। মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঘোষণা দিলেন, ‘উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা’। বিক্ষোভে ফেটে পড়ে পূর্ববাংলার ছাত্র-জনতা। প্রতিবাদের লড়াইয়ে সর্বপ্রথম জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলার ছাত্রসমাজ এই ঘোষণার বিরুদ্ধে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে ঢাকার রাজপথে। ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’ স্লোগানে প্রকম্পিত করে সারা পূর্ববাংলা।
বায়ান্নর অমর একুশের পথ ধরেই ১৯৭১ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবিসংবাদিত নেতৃত্বে বাঙালি জাতি স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। ভাষা আন্দোলনের বীর শহীদদের চেতনা ও দেশপ্রেম ধারণ করে ত্রিশ লাখ শহীদের বুকের রক্ত আর দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে ১৯৭১ সালে মুক্ত হয় আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি, প্রিয় বাংলাদেশ। পৃথিবীর মানচিত্রে সৃষ্টি হয় লাল সবুজের পতাকা, একটি স্বাধীন রাষ্ট্র।
মাতৃভাষার জন্য বাঙালির আত্মদানের এই অনন্য ঘটনা স্বীকৃত হয়েছে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে। ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো একুশে ফেব্রুয়ারিকে ঘোষণা করে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে। আজ বাঙালির সঙ্গে সারাবিশ্বেই দিনটি পালন করবে।