প্রাকৃতিক পরিবেশ, কৃষিপ্রতিবেশ ও প্রাণবৈচিত্র্য রক্ষা করা এবং জলবায়ু ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠা বর্তমান পরিবর্তিত সময়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাই প্রকৃতি ও পরিবেশ সুরক্ষায় সবুজ সংহতি গঠন করা হয়েছে।

বৃক্ষ, পাখি, পুকুর দিঘি, প্রাকৃতিক জলাধার ও পরিবেশসহ নিজস্ব সংস্কৃতি সুরক্ষা করেই হোক সকল উন্নয়ন’ এ প্রতিপাদ্য কে সামনে রেখে আজ সোমবার দুপুরে রাজশাহী মহানগরীর গণকপাড়াস্থ একটা অভিজাত রেস্তোরাঁয় রাজশাহী মহানগরীর প্রকৃতি ও পরিবেশ সুরক্ষায় নাগরিক ভাবনা ও সবুজ সংহতি বিষয়ক আলোচনা ও মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।

 

বেসরকারি উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ রিসোর্স সেন্টার ফর ইন্ডিজিনাস নলেজ (বারসিক) ও বরেন্দ্র অঞ্চলের তরুণ যুবদের বৃহৎ ঐক্য বরেন্দ্র ইয়ুথ ফোরাম যৌথ আয়োজিত সভায় এ সবুজ সংহতি গঠন করা হয়।

 

এতে নদী গবেষক মাহবুব সিদ্দিকীকে আহবায়ক ও সমাজকর্মী নাজমুল হোসেন রাজুকে সদস্য সচিব করে সবুজ সংহতির আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে।

 

মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন বরেন্দ্র ইয়ুথ ফোরামের সভাপতি শাইখ তাসনীম জামাল। বরেন্দ্র ইয়ুথ ফোরামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ আতিকুর রহমান আতিকের সঞ্চালনায় সভায় পরিচালনা করেন,

বাংলাদেশ রিসোর্স সেন্টার ফর ইন্ডিজিনাস নলেজ (বারসিক) আঞ্চলিক সমন্বয়কারী গবেষক মো: শহিদুল ইসলাম।

মতবিনিময় সভায় অংশ নিয়ে নিজের মতামত পেশ করেন, নদী গবেষক মাহবুব সিদ্দিকী, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা-বাসসের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক ড. মোঃ আইনাল হক, সেভ দ্যা নেচারের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজান, মুক্তিযুদ্ধের তথ্য সংগ্রহক ওয়ালিউর রহমান বাবু, ব্যবসায়ী সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সেকেন্দার আলী, পরিবেশ আন্দোলন ঐক্য পরিষদের সভাপতি মাহবুব টিংকু, সাধারণ সম্পাদক

নাজমুল হোসেন রাজু, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সূভাষ চন্দ্র হেমব্রম, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন রাজশাহী মহানগরের সাধারণ সম্পাদক নাদিম সিনা, গ্রীন ভয়েস বিভাগীয় সহ সমন্বয়ক আব্দুর রহিম, ইয়ুথ এ্যাকশন ফর সোস্যাল চেঞ্জ -ইয়্যাসের সভাপতি গণমাধ্যমকর্মী মোঃ শামীউল আলীম শাওন প্রমুখ।

 

মতবিনিময় সভায়বক্তার বলেন, প্রাকৃতিক পরিবেশ, কৃষিপ্রতিবেশ ও প্রাণবৈচিত্র্য রক্ষা করা এবং জলবায়ু ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠা বর্তমান পরিবর্তিত সময়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মানুষের সীমাহীন লোভের কারণে আজ প্রকৃতির অন্যান্য সৃষ্টি (প্রাণি, বৃক্ষ, লতা-পাতা), পাহাড়-বন-নদ-নদী-জলাশয় সবই ভয়াবহ বিপন্নতার পথে। প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল সৃষ্টির সেরা ‘জীব’ বলে দাবিদারদের একটি শক্তিশালী অংশ (অর্থ, বিও, ক্ষমতায় দাপটে কোন কোন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা দেশ) এই বিপন্নতা তৈরির জন্য দায়ি।

 

তারা আরো বলেন, বর্তমানে মানুষের এসব কর্মকান্ডের কারণে বিপর্যন্ত হচ্ছে প্রাকৃতিক পরিবেশ যা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করছে জলবায়ু পরিবর্তনের নিয়মতান্ত্রিক ধারাকে। এর ফলে প্রকৃতি নির্ভর মৌসুমভিত্তিক উৎপাদন ব্যবস্থার উপর পড়ছে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব, যা আমাদের দেশের মত প্রকৃতিনির্ভর গ্রামীণ আর্থসামাজিক ব্যবস্থাকে নানামাত্রায় ক্ষতিগ্রস্থ করছে। দেশের কৃষকদের পক্ষে ঋতুভিত্তিক ফসল চাষ পঞ্জিকা অনুসরণ করে ফসল চাষ করা সম্ভব হচ্ছে না। বন্যা, খরা নদীভাঙ্গন, লবনাক্ততা, জলোচ্ছ্বাস, জলাবদ্ধতার মত প্রাকৃতিক দুর্যোগকে প্রতিনিয়ত সামাল দিতে হচ্ছে। খরা প্রবণ বরেন্দ্র অঞ্চলও এর বাহিরে নয়। এখানে দিনে দিনে তীব্র তাপপ্রবাহ, অনাবৃষ্টি, খরা এবং সেই সাথে কৃষিতে অধিক রাসায়নিক কীটনাশকের ব্যবহারের কারনে বরেন্দ্র বাস্তুসংস্থান বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ছে। শুধু গ্রামে নয়, এর প্রভাব পড়ছে নগরেও এবং নগর পরিবেশ প্রতিবেশও দিনে দিনে মারাত্বক বিপর্যয়ের দিকে যাচ্ছে। আর এই প্রকৃতি ও পরিবেশ সুরক্ষা তাই কারো একক কোন উদ্যোগে সম্ভব নয়।

 

বক্তারা দাবির করে বলেন, প্রকৃতি ও পরিবেশ সুরক্ষা, খাদ্য সার্বভৌমত্ব এবং জলবায়ু ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠায় রাজশাহী মহানগরীতে গ্রীণ কোয়ালিশন গঠন এবং এ সম্পর্কি সমন্বিত নাগরিক কার্যক্রম শুরু এখন সময়ের দাবি। পাখি, পুকুর দিঘি, প্রাকৃতিক জলাধারসহ নিজস্ব সংস্কৃতি সুরক্ষা করেই হোক সকল উন্নয়ন। মাটি, পানি, বায়ুসহ প্রাকৃতিক পরিবেশের দূষণ বন্ধ করা এখনই প্রয়োজন সমন্বিত উদ্যোগ।

 

রাজশাহী নগরের প্রান্তিক মানুষের নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করার কথা উল্লেখ করে বক্তব্যে তারা বলেন,  শুধু মানুয় নয়, সকল প্রাণের প্রাণের জন্য বাসযোগ্য নগর তৈরী এবং নগরের মানুষের নিরাপদ খাদ্য ও খাদ্য সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠায় কৃষিপ্রতিবেশকে উন্নয়ন ও সহযোগী হিসেবে ভূমিকা পালন করাও এই নগরের সকল শ্রেণী পেশার মানুষের দায়িত্ব।

 

উল্লেখ্য, প্রতি উপজেলায়/মহানগরীতে একজনকে আহবায়ক ও একজনকে সদস্যসচিব এবং কৃষক-জুমিয়াসহ আগ্রহী সকল পেশা ও শ্রেণীর মানুষের প্রতিনিধিদের নিয়ে প্রাথমিকভাবে উপজেলাভিত্তিক সবুজ সংহতি কমিটি গঠন করা হবে। উপজেলার প্রতিনিধি ও জেলার আগ্রহীজন/প্রতিষ্ঠানকে যুক্ত করে একজনকে আহবায়ক ও একজনকে সদস্যসচিব এবং আগ্রহী সকলকে সদস্য করে প্রাথমিকভাবে জেলা কমিটি গঠন করা হবে। জেলা কমিটির প্রতিনিধি, আগ্রহী সংগঠনের প্রতিনিধি ও আগ্রহী ব্যক্তিদের সমন্বয়ে জাতীয় কমিটি গঠন করা হবে।

Next Post

প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতেই জমিতে রাতারাতি কলা গাছ লাগিয়ে কেটে ফেলার নাটক

মঙ্গল জুন ৪ , ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি: অভিনব কৌশলে নাটক সাজিয়ে রাতারাতি কলা গাছ লাগিয়ে সেই গাছ কেটে ফেলার পর সৎ মা ও ভাইদের ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার আফজাল হোসেন নামে একজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে। আফজাল হোসেন নাটক সাজিয়ে আপন সৎ ভাই ইমরানসহ তাঁদের ফাঁসাতে ইতোমধ্যে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করে মামলা করার […]

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links