আভা ডেস্কঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জয়িতা ফাউন্ডেশনকে বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, তার সরকার নারী-পুরুষের সুষম উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করছে। তিনি বহুমুখী ব্যবসার উদ্যোগের জন্য নারীদের সমান ও দক্ষ করে গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে একটি বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান হিসেবে জয়িতা ফাউন্ডেশনের সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি এর আওতায় কর্মরত তৃণমূল পর্যায়ে যে উদ্যোক্তা রয়েছেন তাদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি করে প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী রোববার সকালে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে জয়িতা ফাউন্ডেশনের বোর্ড অব গভর্নরস-এর বিশেষ সভার সূচনা ভাষণে এসব কথা বলেন। সভা শেষে প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব সাখাওয়াত মুন ব্রিফিংয়ে বলেন, নারী-পুরুষের সুষম উন্নয়নের ওপর জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘একটি সমাজকে গড়ে তুলতে হলে নারী-পুরুষ সবাইকে সঙ্গে নিয়েই একসঙ্গে এগিয়ে যেতে হবে। কেউ পেছনে পড়ে থাকলে সমাজটা পঙ্গু হয়ে যাবে।’
তিনি বলেন, নারীশিক্ষা এবং তাদের মর্যাদা ও অধিকার নিশ্চিতে বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথ ধরেই তার সরকার কাজ করছে। নারীর উন্নয়নে বঙ্গবন্ধুর অবদান স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বীরাঙ্গনাদের সামাজিক মর্যাদা দিয়ে তাদের পুনর্বাসন করেন জাতির পিতা।’ যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনের পাশাপাশি নারীর কর্মসংস্থান ও ক্ষমতায়নের জন্য বঙ্গবন্ধুর উদ্যোগ এ সময় তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
উল্লেখ্য, নারী উদ্যোক্তা সৃষ্টির পাশাপাশি তাদের অর্থনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে গড়ে তোলা হয়েছে বিশেষায়িত ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান জয়িতা ফাউন্ডেশন। এর পরিচালক নিয়োগ ও নিজস্ব ভবন করার বিষয়ে আলোচনার জন্য গণভবনে এ বিশেষ সভার আয়োজন করা হয়। সভার শুরুতেই প্রদত্ত ভাষণে জয়িতা ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নারীদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই এ প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে সরকার।’
জয়িতা ফাউন্ডেশন সৃষ্টির মূল লক্ষ্য দারিদ্র্য বিমোচন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘মেয়েরা যাতে আত্মসম্মানের সঙ্গে বেঁচে থাকতে পারে, স্বাবলম্বী হতে পারে এবং সংসারে যেন তাকে মর্যাদা দেয়া হয়।’ তিনি বলেন, ‘অর্থাৎ সেও একটি ক্ষেত্রে জয়ী হল। যাতে নিজেকে আর অবহেলিত ভাবতে না পারে। শেখ হাসিনা নারীর কল্যাণে বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, স্বামী পরিত্যক্তা ভাতা, বিভিন্ন ধরনের বৃত্তি এবং উপবৃত্তি প্রদানসহ সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের বিভিন্ন কর্মসূচির প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন।
তিনি এ সময় মেয়েদের উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করার সুযোগ করে দেয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, ‘না হলে তারা নিরুৎসাহিত হয়ে পড়বে।’
উপ-প্রেস সচিব প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে বলেন, ‘এ সংগঠনটিকে এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে যাতে সেখানে কর্মরত সব নারীই বলে উঠতে পারেন- আমিই জয়িতা।’
অর্থ বিভাগ ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর ইফতার : অর্থ বিভাগ ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ইফতার করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এ ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়। ইফতারে যোগ দেয়ায় আগত অতিথিদের ধন্যবাদ জানান তিনি।
ইফতারের আগে অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত হয়ে প্রধানমন্ত্রী অতিথিদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন এবং তাদের খোঁজখবর নেন।
সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী দেশের জাতীয় বাজেট তৈরিতে দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
প্রতিবছরই বাংলাদেশের জাতীয় বাজেট বৃদ্ধি পাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামীতেও এ বাজেট বাড়বে।
ইফতারির আগে দেশ ও জাতির অব্যাহত শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। মোনাজাতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ১৫ আগস্টের শহীদদের এবং জাতীয় চার নেতা ও মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করা হয়।
ইফতার অনুষ্ঠানে সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী, মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান, এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ, অর্থ বিভাগের সচিব এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
যুগান্তর