পুনরায় আবার সেশনজটের আশংকা করছে শিক্ষার্থীরা।শিক্ষকদের সদিচ্ছা এবং সমন্বয়হীনতার অভাব

আভা ডেস্ক : নিয়ম নীতির পরোয়া না করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেমিস্টার পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশে বিলম্ব করছে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) কম্পিউটার সাইন্স এন্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসটিই) ও ইংরেজি বিভাগ। এতে করে বিপাকে পড়েছে এই দুই বিভাগের বিভিন্ন বর্ষে অধ্যয়নরত পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, শিক্ষকদের সদিচ্ছা এবং সমন্বয়হীনতার কারণে ফলাফল আটকে আছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসটিই) বিভাগের ২০১৫-১৬ সেশন এর চতুর্থ সেমিস্টার ও পঞ্চম সেমিস্টার পরীক্ষা এবং ইংরেজি বিভাগের তৃতীয় ও চতুর্থ সেমিস্টার পরীক্ষা সম্পন্ন হলেও কোনো পরীক্ষারই ফলাফল প্রকাশ করেনি সংশ্লিষ্ট বিভাগ।

বিভাগীয় সূত্রে জানা যায়, কম্পিউটার সায়েন্স ও টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসটিই) ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের চতুর্থ সেমিস্টার পরীক্ষা ৭ জানুয়ারি ২০১৮ থেকে শুরু হয়ে ১৫ ফেব্রুয়ারি শেষ হয়। উক্ত পরীক্ষা শেষ হওয়ার ছয় মাস পার হলেও এখনো ফলাফল প্রকাশ করা হয়নি। পূর্বে অনুষ্ঠিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ না করেই ২৬ জুন ২০১৮ থেকে পঞ্চম সেমিস্টার পরীক্ষা শুরু করে যা ২৪ জুলাই ২০১৮ তারিখে শেষ হয়। পরীক্ষা আসে পরীক্ষা যায় ফলাফল থেকে যায় আগের মতই অধরা। এখন পর্যন্ত পূর্বের দুই সেমিস্টারের ফলাফল প্রকাশ না করেই আবার পরবর্তী পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলেও জানা যায়।

একই রকম সমস্যার ভুক্তভোগী ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এই বিভাগের ২০১৫-১৬ বর্ষের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ আরো প্রখর। বিভাগটির প্রায় সকল ব্যাচের শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় এর অন্যান্য সকল বিভাগ থেকে পিছিয়ে। ইংরেজি বিভাগের ২০১৫-১৬ বর্ষের ২য় বর্ষের ১ম টার্মের পরীক্ষা গত বছর (২০১৭ সাল) ডিসেম্বর এবং পরবর্তী ২য় টার্মের পরীক্ষা এই বছর মে মাসে অনুষ্ঠিত হলেও এখন পর্যন্ত কোন পরীক্ষারই ফলাফল প্রকাশ করতে পারেনি পিছিয়ে থাকা এই বিভাগটি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, ফলাফল প্রকাশে বিলম্বের কারণে আমরা ভবিষ্যতে নির্দিষ্ট সময়ে হয়তো নির্দিষ্ট সার্কুলারে আবেদন করতে পারবো না। তাছাড়া ফলাফল নিয়ে তো দুঃশ্চিন্তা আছেই। শিক্ষকদের প্রতি যথাযথ সম্মান রেখে বলছি, শিক্ষরা যদি আরেকটু আন্তরিক হয়, তাহলে যথাসময়ে ফলাফল প্রকাশ করা কোন ব্যাপারই না।

আরেক শিক্ষার্থী শিক্ষকদের প্রতি অনুরোধ করে বলেন, আমরা জানি শিক্ষকরাও আমাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনেক বেশি ভাবেন। তাই স্যারদের প্রতি অনুরোধ আমাদের ফলাফল প্রকাশে যেন বিলম্ব না হয়। আমরা যাতে যথাসময়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কাঙ্ক্ষিত ডিগ্রি নিয়ে বের হতে পারি।

উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক শফিকুল ইসলাম জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুযায়ী প্রতিটি টার্ম (সেমিস্টার) পরীক্ষা শেষ হওয়ার চল্লিশ কার্য দিবসের মধ্যে ফল প্রকাশের করতে হবে।

কিন্তু শিক্ষকদের দায়িত্বহীনতা এবং নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করায় বছর পার হলেও ফলাফল প্রকাশিত হচ্ছে না নিয়ম অনুযায়ী। এতে করে শিক্ষার্থীদের সেশন জটের সম্ভাবনা রয়েছে বলে দাবি করছে শিক্ষার্থীরা।

ফল প্রকাশের বিলম্বের কারণ জানতে চাইলে সিএসটিই বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. হুমায়ন কবির উক্তব্যাচে দ্বায়িত্বশীল শিক্ষকরা যথাসময়ে পরীক্ষার খাতা নিরীক্ষা করে জমা না দেয়াকে দুষেছেন।

বিভাগীয় সূত্রে জানা যায়, সিএসটিই বিভাগের শিক্ষক কৌশিক চন্দ্র এবং ইফতেখার মুহাম্মদ তৌহিদ পূর্বের অনুষ্ঠিত পরীক্ষার খাতা এখনো জমা দেয়নি। তাই ফলাফল প্রকাশে এই বিলম্ব।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইংরেজি বিভাগের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান সহকারী অধ্যাপক নাসির হোসাইন জানান, ইংরেজি বিভগের রেজাল্ট প্রস্তুতকারী সফটওয়্যার এর সমস্যা হওয়ার পর নতুন সফটওয়্যার ইন্সটলের জন্য বলা হলেও সাইবারসেন্টার থেকে সফটওয়্যার ঠিক না করে দেয়ায় ফলাফল প্রকাশে দেরি হচ্ছে।

তিনি আরো জানান, এই একই সমস্যার কারণে অন্যান্য ব্যাচের পরীক্ষা গ্রহণ ও ফলাফল প্রকাশেও সমস্যা হচ্ছে।

সমস্যার কথা বললেও এটি ঠিক কবে নাগাদ সমাধান হবে এবং দীর্ঘ বিলম্বিত ফলাফল ঠিক কবে প্রকাশ করা হবে তা নিশ্চিত করতে পারেননি ইংরেজি বিভাগের এই সহকারী অধ্যাপক।

বর্তমান উপাচার্য ড. এম অহিদুজ্জামান যোগদানের পর থেকেই গত তিন বছরে এরই সমসাময়িক অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় অবকাঠামোগত এবং শিক্ষা ও গবেষণায় বেশ অগ্রগতি হয়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের। বিশেষ করে প্রায় সেশনজট মুক্ত হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়।

কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকটি বিভাগের ফল প্রকাশের বিলম্বের কারণে পুনরায় আবার সেশনজটের আশংকা করছে শিক্ষার্থীরা। তাই শিক্ষার্থীদের দাবি, যাতে অনতিবিলম্বে পূর্বের পরীক্ষাগুলোর ফলাফল প্রকাশ করা হয়।

উৎস
বাংলাদেশ প্রতিদিন

Next Post

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫১০৬ জন সংগীত ও ক্রীড়া শিক্ষক নিয়োগ দেবে সরকার।

মঙ্গল সেপ্টে. ৪ , ২০১৮
আভা ডেস্ক : প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও ক্রীড়া শিক্ষক নিয়োগ দেবে সরকার। এই দুই বিষয়ে মোট ৫ হাজার ১০৬ জন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। সম্প্রতি প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছিলেন, প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন প্রকল্পের (পিইডিপি) প্রস্তাবনা, আমরা প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও ক্রীড়া শিক্ষক […]

এই রকম আরও খবর

শিরোনাম

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links