নিজস্ব প্রতিনিধিঃ রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার আলোচিত ধর্ষণের ঘটনার তদন্ত পুর্বক ধর্ষকে অবশেষে আটক করেছে রাজশাহী পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেষ্টিগেশন (পিবিআই) । উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) মহিদুল ইসলামের সুদক্ষ তদন্ত ও বিচক্ষণতায় আসামী কে আটক করা হয় ।
ঘটনার বরাতে জানা যায়, রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার জিউপাড়া (বগুড়াপাড়া) এলাকার মোসাঃ জাহানার (ছদ্মনাম) (১৬) কে দীর্ঘদিন ধরে ধর্ষন করে আসছিলো একই এলাকার আনোয়ার হোসেনের ছেলে সোহরাব হোসেন রেন্টু (২৭)। ধর্ষনের পরে ধর্ষিতার মা বাদী হয়ে পুঠিয়া থানায় মামলা দিতে গেলে অদৃশ্য কারনে মামলা নিতে অস্বীকার করেন পুঠিয়া থানার ততকালীন অফিসার ইনচার্জ মোঃ সাইদুর রহমান। পরবর্তীতে জাহানারার মা বাদী হয়ে ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের (সংশোধনী/০৩) এর ৯(১) ধারায় একজনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলা আমলে নিয়ে তদন্তের দায়িত্ব দেয় রাজশাহী পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেষ্টিগেশন (পিবিআই) কে। এরপর থেকে আসামী সোহরাব হোসেন রেন্টু এলাকা ছেড়ে পরিবারসহ পালিয়ে যায়। দীর্ঘদিন অনুসন্ধানের পর গত ১৪ আগষ্ট ২০২০ তারিখে ঢাকা মহানগরীর কাফরুল থানার সেনপাড়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর ১৫ আগষ্টে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী রেকর্ড করা হয়। আসামী সোহরাব জবানবন্দীতে তার সকল ঘটনা স্বীকার করেন।
এই বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) মহিদুল ইসলাম জানান, গত ১০ মার্চ ২০২০ তারিখে আমাদের হাতে অর্থাৎ পিবিআই এর কাছে মামলাটি আসে। এরপর মামলার দায়িত্ব আমাকে দেওয়া হয়। মামলা হাতে পাওয়ার পর থেকে আমি অনুসন্ধান শুরু করি এবং মাঝে কোভিট-১৯ এর আতঙ্কে সারাদেশ লকডাউন হয়। এই লকডাউনের কারনে মামলার অগ্রগতিতে বিলম্ব হয়েছে। মামলার ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, (জবানবন্দী অনুযায়ী) আসামী সোহরাব ও তার স্ত্রী দুই জনেই নার্সের চাকরি করতেন। সোহরাবের একটি সন্তানও রয়েছে। এই সন্তানকে দেখা শোনার জন্য ৩ বছর আগে তার নিজের গ্রামের এলাকার গরীব পরিবার থেকে জাহানার(বোবা) কে নিয়ে যায় ঢাকায়। ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পরে তার স্ত্রীর নাইট ডিউটি পড়লে তার নিজের সন্তানকে ঘুমের ঔষধ খাওয়ে এই জাহানারাকে জোর পূর্বক ধর্ষন করতো। মেয়েটি বোবা হওয়ার কারনে কাউকে কিছু বললে বুঝতে পারতোনা। তাই শত কষ্ট ও যন্ত্রনা সহ্য করে থাকতে হতো জাহানারাকে। এরপর কয়েক বছর পর জাহানারা তার পরিবারের নিকট ফিরে আসলে সে আর যেতে চায় না। তখন তার মা তাকে জিজ্ঞাসা করলে সকল ঘটনা খুলে বলে। এরপর জাহানারার মা বাদী হয়ে প্রথমে পুঠিয়া থানায় যায় সেখানে মামলা না নিলে পরে কোর্টে মামলা করে।
এ বিষয়ে রাজশাহী পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেষ্টিগেশন (পিবিআই) এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ বলেন, দেশের মানুষ পুলিশের উপর থেকে আস্থা বা বিশ্বাস কম হওয়ায় মামলা পিবিআইকে দিয়ে তদন্ত করাচ্ছে । আর এ থেকে পিবিআই এর প্রতি মানুষের বিশ্বাস আস্থা বৃদ্ধি পাচ্ছে । পিবিআই ঘটনার অন্তরালের ঘটনা তদন্ত করে সঠিক বিষয়টির উপর আইন প্রয়োগ করে । আমাদের কাছে কোন অপরাধির ছাড় নেই। তিনি আরও বলেন, আমার প্রতিটি অফিসারকে বলা রয়েছে, মামলা অনুসন্ধানের সময় কোন প্রকার হ্যালোতে কান না দিতে। আমরা জনগনের সেবক তাই সব সময় আমরা সেবার জন্য প্রস্তুত রয়েছি।