পিলখানা হত্যাকাণ্ড এক অন্ধকারতম অধ্যায়-রিজভী

আভা ডেস্কঃ বাংলাদেশের ইতিহাসে পিলখানা হত্যাকাণ্ড এক অন্ধকারতম অধ্যায় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘আজ ২৫ ফেব্রুয়ারি ভয়াবহ পিলখানা হত্যাকাণ্ড দিবস। বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহতম একটি কালো দিন। ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের নামে সংঘটিত হয় ইতিহাসের বর্বরতম হত্যাযজ্ঞ। পৈশাচিক পিলখানা হত্যাযজ্ঞে শোচনীয় অসহায়ভাবে জীবনদানকারী ৫৭ জন দেশপ্রেমিক চৌকস সামরিক অফিসারসহ ৭৪ জন নিরপরাধ মানুষের নির্মম হত্যার দিন। তাদের পরিবারের নারী ও শিশুদের ওপর বর্বর অত্যাচারের দিন।

রিজভী বলেন, ‘এটি ছিল বাংলাদেশের জন্য এক ঘন অন্ধকারতম অধ্যায়। এই বেদনাদায়ক ঘটনায় আমরা সবাই মুহ্যমান ও শোকে ভারাক্রান্ত। পিতার শূন্য আসনের দিকে তাকিয়ে আজও তাদের সন্তানদের একরাশ দীর্ঘনিঃশ্বাস ঝড়ে পড়ে।

তিনি বলেন, ‘বিএনপি রাষ্ট্র ক্ষমতায় গেলে পিলখানায় নৃশংস হত্যাকাণ্ডের নিরপেক্ষ তদন্ত করে পুনর্বিচারের উদ্যোগ গ্রহণ করবে। তখন ঘটনার নেপথ্যের নায়করা রেহায় পাবেন না। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি যথাযোগ্য মর্যাদায় ২৫ ফেব্রুয়ারি পিলখানা সদর দফতরে সেনা হত্যা দিবসটিকে জাতীয় শোক দিবস ঘোষণার দাবি করছে। বিএনপি রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসীন হলে ২৫ ফেব্রুয়ারিকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে ঘোষণা করবে।

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘ওই নির্মম হত্যাযজ্ঞ দেশের গৌরব ও মর্যাদার প্রতীক সেনাবাহিনীর জন্য একটি বিপর্যয়ের দিনই নয়, বরং তাদের জন্য ছিল এটি একটি অশুভ বার্তা। দেশের স্বাধীনতা টিকিয়ে রাখার অপরাজেয় জীবনীশক্তির আধার সেনাবাহিনীকে পঙ্গু করার এক সুদুরপ্রসারী চক্রান্তেরই অংশ ছিল পিলখানা হত্যাকাণ্ড। বাংলাদেশকে দুর্বল, খর্বিত, নিঃস্ব ও আত্মবিশ্বাসহীন করার প্রথম ধাপ ছিল এ হত্যাকাণ্ড। বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তাকে পঙ্গু করতেই পিলখানায় সুক্ষ্ম কৌশলে বেছে বেছে দক্ষ ও দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের এক সাথে করে হত্যাকান্ড চালানো হয়।

বিএনপির এই সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, ‘দুনিয়ার কোনো যুদ্ধে এক সাথে এত সেনা কর্মকর্তা নিহত হওয়ার নজির নেই। ২৫ ফেব্রুয়ারির সেনা হত্যাযজ্ঞ ছিল আমাদের সেনাবাহিনীর শৌর্য, শক্তি ও অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করার একটি ভিনদেশি মাস্টারপ্ল্যান। এই ঘটনায় দেশীয় তাবেদাররা মীর জাফরের ভূমিকায় অবতীর্ণ ছিল।

রিজভী আরও বলেন, ‘আমরা দেখি, দীর্ঘ এক যুগ পেরিয়ে গেলেও জবাব মেলেনি এ হত্যাকাণ্ড সম্পর্কিত অনেক প্রশ্নের। গত ১২ বছর ধরে প্রতি বছর ২৫ ফেব্রুয়ারি সেনা হত্যাযজ্ঞের দিনটি কিছু সাধারণ কর্মসূচির মাধ্যমে পার হয়ে যায়। এই হত্যাকাণ্ডের যে তদন্তগুলো হয়েছিল, এর পূর্ণাঙ্গ কোনো তদন্ত এখনো জাতির সামনে প্রকাশ করা হয়নি। বিশেষ করে সেনাবাহিনী যে তদন্ত করেছিল, সেই তদন্ত এখনো আলোর মুখ দেখেনি। ফলে, স্বাভাবিকভাবে জাতির সামনে প্রশ্ন থেকেই গেছে এই ভয়াবহ রক্তাক্ত ঘটনার পেছনে মূল কারা ছিল, পরিকল্পনাকারী কারা ছিল, কারা লাভবান হয়েছে? এগুলো রহস্যজনকভাবেই উদঘাটন করা হয়নি। পূর্ব পরিকল্পিত পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় অনেকের সাজা হয়েছে, আবার অনেকেই ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে গেছে। এই মর্মান্তিক ঘটনার সঙ্গে ক্ষমতাসীনদের অনেকের জড়িত থাকার কথা শোনা গেলেও সেগুলোকে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। পুরো বিষয়টি এখনো রহস্যের কুয়াশায় ঢাকা।

রিজভী বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ বিশ্বাস করে- এই মর্মান্তিক হত্যাযজ্ঞের ঘটনার পর্দার পেছনের কুচক্রীরা অধরাই থেকে গেছে। পিলখানা সেনা হত্যাকাণ্ডে প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করা হয়েছে বলেই জনগণ বিশ্বাস করে। ক্ষমতার নেশায় আচ্ছন্ন অপরাধপ্রবণ একটি দল আওয়ামী লীগ। এরা মসনদ আঁকড়ে রাখার জন্য প্রয়োজনে দেশের সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করতে দ্বিধা করে না। এদের একমাত্র সাধনা ক্ষমতা লাভের আগে অথবা পরে কোনো সময়েই তারা ন্যায়নীতির নির্দেশ গ্রাহ্য করে না।

তিনি আরও বলেন, ‘পিলখানার রক্তক্ষয়ী ঘটনার পর থেকে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব খর্ব হয়ে এসেছে। উদ্দেশ্য-সচেতনভাবেই পিলখানার সেনা হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। আঁটঘাট বেঁধেই ষড়যন্ত্রকারীরা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।

Next Post

গণতন্ত্রহীন বিচ্ছিন্ন একটি দ্বীপ বাংলাদেশ: মিনু

শুক্র ফেব্রু. ২৬ , ২০২১
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ বিএনপি চেয়ারপার্সনের অন্যতম উপদেষ্টা ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু বলেছেন, বাংলাদেশে নির্বাচন ব্যবস্থা শুধু ভেঙ্গেই পড়েনি, এ দেশ গণতন্ত্রহীন একটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপে পরিণত হয়েছে। গতকাল শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারী) বিকেল সাড়ে ৩টায় দলটির রাজশাহী মহানগর ও জেলা কার্যালয়ে চলমান পৌর নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী-সমর্থকদের মামলা-হামলার অভিযোগ […]

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links