পাবনার ঈশ্বরদীতে ১৯৯৪ সালে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী ট্রেনে গুলি ও বোমা হামলার ঘটনায় করা মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত সাতজন আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন।

আভা ডেস্কঃ পাবনার ঈশ্বরদীতে ১৯৯৪ সালে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী ট্রেনে গুলি ও বোমা হামলার ঘটনায় করা মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত সাতজন আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন।

রোববার বেলা পৌনে ১টার দিকে পাবনার স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-৩-এর ভারপ্রাপ্ত বিচারক এবং অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. রুস্তম আলীর আদালতে আত্মসমর্পণ করেন তারা। পরে তাদের জেলহাজতে পাঠিয়েছেন বিচারক।

এ মামলায় ৫২ জন আসামির মধ্যে নয়জনের মৃত্যুদণ্ড, ২৫ জনের যাবজ্জীবন এবং ১৩ জনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। এদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত একজন, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত নয়জন ও ১০ বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত চারজন পলাতক ছিলেন।

এর মধ্যে সাতজন আত্মসমর্পণ করেছেন। তারা হলেন- যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত ঈশ্বরদীর পশ্চিমটেংরী পিয়ারাখালী গ্রামের আছির উদ্দিনের ছেলে আমিনুল ইসলাম ওরফে আমিন, পশ্চিমটেংরী ব্লাকপাড়া এলাকার মৃত আব্দুল গফুরের ছেলে মো. রবি, ব্লাকপাড়া পিয়ারাখালী এলাকার জালাল গার্ডের ছেলে মামুন ও যুক্তিতলা গ্রামের মৃত জয়েন উদ্দিনের ছেলে আবুল কালাম এবং দশ বছর কারাদণ্ডপ্রাপ্ত চরমিরকামারী গ্রামের মৃত জামাত আলী সরকারের ছেলে চাঁদ আলী, পশ্চিমটেংরী বাবুপাড়া এলাকার মহসিন রিয়াজীর ছেলে রনো রিয়াজি ও চরসাহাপুর গ্রামের মতিয়ার রহমান সরদারের ছেলে হুমায়ুন কবির ওরফে দুলাল।

তাদের আত্মসমর্পণের বিষয়টি নিশ্চিত করে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আক্তারুজ্জামান মুক্তা বলেন, দণ্ডপ্রাপ্ত সাতজন আত্মসমর্পণ করেছেন। দণ্ডপ্রাপ্তরা রায়ের সার্টিফাই নকল কপি তুলে নির্ধারিত এক মাসের মধ্যে উচ্চ আদালতে আপিল করতে পারবেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মাসুদ খন্দকার বলেন, আইনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। আসামিদের পক্ষ থেকে শিগগিরই উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।

প্রসঙ্গত, ১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর উত্তরাঞ্চলে দলীয় কর্মসূচিতে ট্রেনবহর নিয়ে খুলনা থেকে সৈয়দপুর যাচ্ছিলেন শেখ হাসিনা। ট্রেনটি পাবনার ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশন স্টেশনে ঢোকার সময় ট্রেনবহরকে লক্ষ্য করে বিএনপির স্থানীয় নেতা-কর্মীরা অতর্কিত হামলা চালায়। ট্রেনে ব্যাপক গুলিবর্ষণ ও বোমা হামলা করা হয়। এ সময় পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করার জন্য এগিয়ে গেলে পুলিশকে লক্ষ্য করেও সেদিন বোমা হামলা চালানো হয়।

এ ঘটনায় ঈশ্বরদী জিআরপি (রেলওয়ে পুলিশ) থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে তৎকালীন ছাত্রদল নেতা ও বর্তমানে ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক (স্থগিত কমিটি) জাকারিয়া পিন্টুসহ সাতজনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলার পরের বছর পুলিশ কোনো সাক্ষী না পেয়ে আদালতে চূড়ান্ত অভিযোগপত্র জমা দেয়। ওই সময় বিএনপি ক্ষমতায় ছিল। কিন্তু আদালত সে অভিযোগপত্র গ্রহণ না করে অধিক তদন্তের জন্য মামলাটি সিআইডিতে পাঠান।

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর মামলাটির পুনরায় তদন্ত হয়। ১৯৯৭ সালের ৩ এপ্রিল পুলিশ ঈশ্বরদীর বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীসহ ৫২ জনের নামে আদালতে আবার অভিযোগপত্র জমা দেয়া হয়।

এ মামলার রায়ে গত ৩ জুলাই নয়জনকে মৃত্যুদণ্ড, ২৫ জনকে যাবজ্জীবন এবং ১৩ জনকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেন আদালত। দণ্ডপ্রাপ্তরা ঈশ্বরদী উপজেলা ও পৌর বিএনপির নেতাকর্মী।

Next Post

দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থেকে মামলা-হামলায় জেরবার রাজশাহীর বিএনপির নেতাকর্মীরা।

সোম জুলাই ১৫ , ২০১৯
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থেকে মামলা-হামলায় জেরবার রাজশাহীর বিএনপির নেতাকর্মীরা। শীর্ষ নেতাদের সবাই নাশকতা, হত্যা, বিস্ফোরকসহ নানা মামলায় আসামি হয়ে আছেন। একেকজনের নামে ডজন ডজন মামলাও হয়ে আছে। এসব মামলায় কেউ এখনো কারাগারে, আবার কেউ জামিনে কোনো মতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এলাকায়। আবার কেউ এখনো পলাতক। মামলার ঘানি টানতে টানতে […]

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links