নাটোরে পুলিশের ছত্রছায়ায় উৎকোচের বিনিময়ে বাল্য বিবাহ সম্পন্ন হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ নাটোরে পুলিশের ছত্রছায়ায় উৎকোচের বিনিময়ে বাল্য বিবাহ সম্পন্ন হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে । বুধবার রাতে সদর উপজেলার ছাতনী ইউনিয়নের দিয়ারছাতনী গ্রামে একটি বাল্য বিয়ে ভাঙ্গতে গিয়ে পুলিশের এসআই তারিক বিন খালিদ উৎকোচের বিনিময়ে বাল্যবিবাহ সম্পন্ন করার ব্যবস্থা করে দেন । এ ঘটনায় পুলিশের দায়িত্ব কর্তব্য নিয়ে স্থানীয় জনসাধারণের মাঝে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে ।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এবং শতাধিক গ্রামবাসী জানায় ,বুধবার সদর উপজেলার নিকটবর্তী ছাতনী দিয়ার গ্রামের কৃষক রুহুল আমিনের মেয়ে  সানজিদা আকতার রুনার সাথে  একই উপজেলার তেবাড়িয়া ইউনিয়নের জংলি গ্রামের রেজাউল করিমের পুত্র কাউসার আহম্মেদের বাল্য বিয়ের পূর্ব নির্ধারিত দিন ধার্য্য ছিল ।

খবর পেয়ে এসআই তারিক রুনাকে তাদের বাসা থেকে লোক মারফত পল্লী চিকিৎসক মজিবর রহমানের বাসায় নিয়ে যায় । পরে বাল্য বিয়ে বন্ধ করতে ঘটনাস্থলে যান নাটোর সদর থানার এসআই তারিক বিন খালিদ । জন্মসনদ অনুযায়ী সানজিদা আকতার রুনার বয়স ১৬ বছর ২ মাস হওয়ায় বাল্য বিয়ের অপরাধের বিভিন্ন আইন কানুন ও কারাদন্ডের ভয় দেখিয়ে ২০ হাজার টাকা উৎকোচ দাবী করে ।

পরে থানা ও পুলিশ ম্যানেজের কথা বলে মেয়ের বাবার কাছ থেকে ৯ হাজার টাকা উৎকোচ  নিয়ে চলে আসেন । পরে স্থানীয় মসজিদের ইমাম ইসলামী শরীয়া মোতাবেক কালেমা পড়ে বিয়ে সম্পন্ন করে । টাকা নিয়ে বাল্যবিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করার  বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে পুলিশের দায়িত্ব কর্তব্য নিয়ে ব্যাপক সমলোচনা শুরু হয় ।

গ্রামবাসী অভিযোগ করেন , এসআই তারিক বিন খালিদ র্দীঘদিন ধরে ছাতনী দিয়ার গ্রামের জনৈক মজিবর ডাক্তারের বাসায় নিয়মিত বসা উঠা করে । এলাকার কিছু দুষ্ট প্রকৃতির লোকের সহায়তায় নিরীহ গ্রামবাসীদের মামলা গ্রেফতার সহ নানাভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে উৎকোচ আদায় সহ নিয়মিত হুয়রানি করে আসছিল  । এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিসহ জনপ্রতিনিধিরা একজন পুলিশ সদস্যের এ ধরনের অনৈতিক কাজের র্দীঘদিন ধরে বিরোধীতা করে আসছিল ।

ছাতনী ইউনিয়নের কাজী মসলেম উদ্দীন বলেন , বিয়ের অনুষ্টানে উপস্থিত হওয়ার পর জন্মসনদ অনুযায়ী মেয়ের বয়স ১৬ বছর ২ মাস হওয়ায় আমি বিয়ে রেজিষ্ট্রি করাতে অপারগতা প্রকাশ করে চলে আসি । পরে জানতে পারি নাটোর সদর থানার এস আই তারিক মাত্র ৯ হাজার টাকা উৎকোচ নিয়ে বিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেন ।

ছাতনী ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মসলেম উদ্দীন জানান, যেখানে বাল্যবিবাহ ঠেকাতে পুলিশকে ব্যবহার করার কথা সেখানে পুলিশের সহযোগিতায় বাল্যবিয়ে সম্পন্ন হওয়ার বিষয়টি সত্যিই বেমানান । এ ধরণের বাল্য বিবাহের আশ্রয় প্রশয় দাতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত । তিনি অভিযোগ করে বলেন , এস আই তারিক র্দীঘদিন ধরে ছাতনী দিয়ার গ্রামের মজিবর ডাক্তারের বাসায় যাতায়াত করে ।

সেই বাসাকেই তিনি অফিসে বানিয়েছেন । এলাকার দুষ্ট শ্রেনীর কিছু লোকের সহযোগিতায় নানাভাবে গ্রামবাসীদের অনেককে হুয়রানি করে উৎকোচ আদায় নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে ।
এ ব্যাপারে এস ,আই তারিক বিন খালিদ টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করে জানান, বাল্যবিয়ের খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে বিয়ে বন্ধ করে দিয়ে আসি । আমি চলে আসার পর কি ভাবে বিয়ে হলো আমি বলতে পারবো না । তিনি পল্লী চিকিৎসক মজিবর ডাক্তারের বাসায় নিয়মিত যাতায়াত করার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন , পরিবারটি আমাকে ধর্মপুত্র বানিয়েছে ।

সোনার আংটি সহ আমাকে নানা প্রকার উপহার দিয়েছে । তবে সেখানে বসে বিচার আচার করা ঠিক হয়নি ।

নাটোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আকরামুল ইসলাম ঘটনাটি শুনে বলেন ,তদন্তস্বাপক্ষে অবশ্যই অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে ।

Next Post

গভীর রাতে বোমা বিস্ফোরণ। ঘটনাস্থল থেকে আরও দুটি বোমা উদ্ধার।

বৃহস্পতি জুন ১৩ , ২০১৯
জাহাঙ্গীর অালম গাংনীঃ গভীর রাতে দুটি বোমা বিস্ফোরণের পর ঘটনাস্থল থেকে অবিষ্ফোরিত দুটি বোমা উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার সকালে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার আমতৈল মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এই বোমা উদ্ধার করা হয়। জানা গেছে, আমতৈল মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বুধবার দিনগত গভীর রাতে পরপর দুটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। বিকট শব্দে এলাকাবাসীর ঘুম […]

এই রকম আরও খবর

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links