নন্দীগ্রাম (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ বগুড়ার নন্দীগ্রামে গত ১৭ই জুন সকাল আনুমানিক সাড়ে ৮টায় নন্দীগ্রাম উপজেলার ১নং বুড়ইল ইউনিয়নের ভদ্রদিঘী গ্রামের মোঃ সুজন প্রামানিকের স্ত্রী প্রতারক চক্রের মুল হোতা রিনা বেগম (৩৭) সহ কহুলী গ্রামের মিলন হোসেন এর ছেলে লিটন হোসেন (২২) ও একই গ্রামের আব্দুল আলিমের ছেলে মোঃ গোলাম রাব্বী (২০) কে নন্দীগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল কালাম আজাদ সঙ্গীয় ফোর্সসহ অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেফতার করে। প্রাপ্ত তথ্যে ও থানা সূত্রে জানা যায়, মামলার বাদী নাটোর জেলার গুরুদাসপুর থানার কালাকান্দর গ্রামের মৃত আঃ বারেক এর ছেলে মোঃ আব্দুল মোতালেব (৩৬) ফেসবুকের সূত্রে প্রতারক চক্রের মুল হোতা রিনা বেগমের সাথে পরিচয় হয়। সে একটি বেসরকারী সংস্থায় সিলেটে চাকুরি করে এবং সেখানেই থাকে। পরিচয় সূত্রে ধরে ফেসবুকে তাদের বিভিন্ন ধরনের চ্যাটিং হয় এবং এক পর্যায়ে তাদের বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মামলার বাদী তার আরজিতে উল্লেখ করেন, আমার স্ত্রী সন্তানের সাথে দেখা করা জন্য নিজ বাড়ী গুরুদাসপুরে আসার পরিকল্পনা করি। কিন্তু আমার আসার খবর পেয়ে আসামী রিনা বেগম বারবার আমাকে তার সাথে দেখা করার জন্য অনুরোধ করে। এক পর্যায়ে আমি তার অনুরোধ রক্ষার্থে তার সাথে দেখা করার সিদ্ধান্ত নেই। সিন্ধান্ত মোতাবেক সিলেট থেকে রওনা হয়ে বগুড়ার শেরপুরে বাসষ্ট্যান্ডে নামি। তার পর শেরপুর থেকে সিএনজি যোগে নন্দীগ্রামে আসি এবং আসামীর কথামত ভ্যান যোগে নন্দীগ্রাম থেকে আসামীর নিজ বাড়ী ভদ্রদিঘী যাই। তারপর সে আমাকে সুকৌশলে বাড়ীতে ডেকে নিয়ে বলে আমার স্বামী একজন সৌদি প্রবাসী তখন আমি বাড়ীতে যেতে অসম্মতি জানাই। পরে প্রতারক চক্রের মুল হোতাসহ আরো ২জন ছেলে আমাকে হাত ধরাধরি করিয়া জোর পূর্বক বাড়িতে নিয়ে যায়। এক পর্যায়ে আমি বাড়ী যেতে চাইলে আমার কাছে ১ লক্ষ টাকা দাবী করে। আমি টাকা দিতে রাজি না হলে আমাকে চড় থাপ্পর মেড়ে জীবন নাশের হুমকী দিয়ে আমার হাত-পা বেঁধে আমার শরীর হতে পরিধেয় বস্ত্র খুলে মোবাইলে নগ্ন ছবি ধারণ করে এবং আমাকে ব্লাক মেইলিং করে আমার পরিবারের লোকদের কাছ থেকে টাকা দাবী করে। প্রতারক চক্রের দাবীমত প্রথমে বিকাশ মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা এবং পরে আরো ৫ হাজার টাকা পাঠিয়ে দেয়। এতেও তারা সন্তুষ্ট না হয়ে বাঁকী ৮৫ হাজার টাকা আদায়ের কৌশল হিসেবে জোর পূর্বক নন-জুডিশিয়াল ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে নিয়ে সন্ধ্যায় আমাকে ছেড়ে দেয়। আমি অসুস্থ অবস্থায় নন্দীগ্রাম উপজেলা বিজরুল স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে উক্ত ঘটনাটি স্থানীয় লোকদের বললে তারা আমাকে থানায় গিয়ে মামলা করতে বলে। তখন আমি থানায় গিয়ে প্রতারক চক্রের মুল হোতা রিনা বেগমসহ ৩ জনকে আসামী করে মামলা রুজু করি।
এব্যাপারে নন্দীগ্রাম থানা ওসি আবুল কালাম আজাদের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমি নিজে আমার টিম নিয়ে অভিযান পরিচালনা করে প্রতারক চক্রকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হই এবং আসামীর সিসি টিভি, মোবাইল ফোন ও নন-জুডিশিয়াল ষ্ট্যাম্প জব্দ করি।
তিনি আরো বলেন, এই প্রতারক চক্রের সঙ্গে যারাই জড়িত তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। আসামীদের ৭দিনের রিমান্ড চেয়ে বিজ্ঞ কোর্ট হাজতে প্রেরন করা হয়েছে।