নন্দীগ্রামে ধানক্ষেতে মাজরা পোকা দমনে আলোক ফাঁদ

নন্দীগ্রাম থেকে আব্দুর রউফ উজ্জলঃ বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলায় উপজেলা কৃষি অফিসের উদ্যোগে আলোক ফাঁদ প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমন ধানে ক্ষতিকর পোকামাকড়ের উপস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও দমন কার্যক্রমের ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। গত ২১ সেপ্টেম্বর সোমবার নন্দীগ্রাম উপজেলা কৃষি অফিস ও কৃষি  সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহায়তায় নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের পশ্চিম পার্শ্বে সন্ধ্যায় নন্দীগ্রাম পৌর এলাকার কুচাইকুড়ি মাঠে মাজরা পোকা দমনে আলোক ফাঁদ স্থাপন কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন, নন্দীগ্রাম উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি অফিসার মোঃ সাহারুল ইসলাম। ওই সময় স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, আফছার আলী, রেজাউল, শহিদ, মকবুল, বকুল, রবিউল, কাউছার, মোহাম্মাদ আলী, লিটন, উজ্জল প্রমুখ। এ উপজেলায় গত ২১ সেপ্টেম্বর থেকে উপজেলার সবকটি ব্লকে আলোক ফাঁদ প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হয়েছে। আলোক ফাঁদ প্রযুক্তিটি হচ্ছে রাতের বেলায় ধান ক্ষেতে বৈদ্যুতিক বাল্ব টাঙিয়ে বাল্বের নিচে পাত্র রাখা হয়। ওই পাত্রের মধ্যে ডিটারজেন্ট বা কেরোসিনমিশ্রিত পানি থাকে। আকৃষ্ট হয়ে পোকামাকড় আলোর কাছে আসে এবং পাত্রের পানির মধ্যে পড়ে মারা যায়। ওই পোকামাকড় দেখে ক্ষতিকর পোকামাকড়ের উপস্থিতি নির্ণয় করা হয়। নন্দীগ্রাম উপজেলার কৃষকেরা এরই মধ্যে এই আলোক ফাঁদ প্রযুক্তি ব্যবহারের সুফলও পেতে শুরু করেছেন। ধানগাছে পোকামাকড়ের আক্রমণ স্বাভাবিক হলেও ফলনের জন্য তা খুবই ক্ষতিকর। ধানগাছে বাদামি ঘাসফড়িং, সবুজ ঘাসফড়িং, পাতা মোড়ানো পোকা, গান্ধী পোকা, মাজরা পোকাসহ বিভিন্ন ক্ষতিকর পোকা আক্রমণ করে। এর মধ্যে বাদামি ঘাসফড়িং বা কারেন্ট পোকা সবচেয়ে ক্ষতিকর। এ পোকা যে গাছে আক্রমণ করে, সেই ধান গাছের শীষ সম্পূর্ণ ভাবে নষ্ট হয়ে যায়। এর ফলে ফলন কমে যায়। অনেক সময় ফলন নেমে আসতে পারে শূন্যের কোঠায়। সাধারণত ধানে কাঁচা থোড় আসার আগে এসব পোকামাকড়ের আক্রমণ বেশী দেখা দেয়। আমাদের দেশে এসব পোকামাকড় মারার জন্য কৃষকেরা সাধারণত বিষাক্ত কীটনাশক ব্যবহার করেন। অথচ আমাদের দেশে ধান চাষে কীটনাশক ব্যবহার করে কৃষকেরা তেমন কোন সুবিধা পান না বললেই চলে। উৎপাদন তো বাড়েই না, বরং উৎপাদন ব্যয় বাড়ে, আর এর পাশাপাশি পরিবেশও দূষিত হয়। এ ক্ষেত্রে আলোক ফাঁদ প্রযুক্তি ভালো বিকল্প পদ্ধতি হিসেবে বিবেচিত। কেননা এতে খরচ কম হয় এবং পরিবেশবান্ধবও বটে। এ জন্য এই প্রযুক্তির ব্যবহার ও উপকারিতা সম্পর্কে কৃষকদের মাঝে প্রচারণা চালানোর জন্য  উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি অফিসার সাহারুল ইসলাম ব্যপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিস কৃষকদের সহায়তায় এগিয়ে এসে বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা প্রদান করে চলেছেন। অপরদিকে নন্দীগ্রাম ২নং সদর (নন্দীগ্রাম) ইউনিয়ন ব্লকে উপ-সহকারী কৃষি অফিসার শারমিন আক্তার আলোক ফাঁদ বিষয়ে কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ ও দিক নির্দেশনা প্রদান করেন। আলোক ফাঁদ প্রযুক্তি ছাড়াও ধানের পোকামাকড় দমনের জন্য আরও বেশ কিছু পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি রয়েছে, সেসব প্রযুক্তি সম্পর্কে কৃষকদের মাঝে আলোচনা করেন এবং সেই পদ্ধতিগুলো জনপ্রিয় করার ব্যবস্থা সম্পর্কে আলোকপাত করেন। যেহেতু ধান আমাদের প্রধান কৃষিজাত ফসল। তাই এর উচ্চ ফলনের ব্যাপারে সরকারসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছেন। যার ফলশ্র“তিতে কৃষকরা ভাল ফলনের আশায় বুক বেঁধেছে।

Next Post

নাটোরে ১৬ বছর বয়সী মেয়েকে দুই মাস যাবৎ ধর্ষণ করেছেন পিতা ।

মঙ্গল সেপ্টে. ২২ , ২০২০
নাটোর প্রতিনিধিঃ চরম যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে ১৬ বছর বয়সী এক কিশোরী। তাকে আটকে রেখে লাগাতার দুই মাস ধরে ধর্ষণ করে পাষণ্ড বাবা। এমনই লোমহর্ষক অভিযোগ পাওয়া গেছে নাটোরের বড়াইগ্রামে থেকে। এই ঘটনায় মঙ্গলবার সকালে মেয়েটির মা বড়াইগ্রাম থানায় কিশোরীর বাবা অভিযুক্ত শরিফুল ইসলামে বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। শরিফুল ইসলাম […]

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links