নন্দীগ্রাম (বগুড়া) প্রতিনিধি: নন্দীগ্রাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার হুমায়ুন কবির সরকারী চাকুরির ধারাবাহিকতায় প্রায় ১বছরের বেশি সময় পার করে অশ্রুসিক্ত নয়নে নন্দীগ্রাম উপজেলা থেকে বিদায় নিলেন। গত বুধবার উপজেলা স্টাফ কোয়ার্টার উপজেলা নির্বাহী অফিসারে বাসভবন থেকে মলিন মনে সকলের কাছ থেকে বিদায় নেওয়ার সময় এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। বিদায় গ্রহণকালে অশ্রুভেজা নয়নে দু:খ-ভারাক্রান্ত মনে নন্দীগ্রাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার হুমায়ুন কবির বলেন, আমি প্রায় ১ বছরের অধিক সময় ধরে নন্দীগ্রাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে আমার উপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথ পালন করার চেষ্টা করেছি, জানিনা আমি কতটা সেবা করতে পেরেছি আপনাদের! তবে আমার আন্তরিকতার কোন কমতি ছিলনা। নন্দীগ্রাম উপজেলার প্রতিটি মানুষ আমাকে ভালোবাসা দেওয়ার পাশাপাশি সম্মান দেখিয়েছে। সরকারি চাকরিজীবী হিসেবে বদলিজনিত কারণে কোনো জেলায় বা উপজেলায় স্থায়ী হওয়ার সুযোগ যদিও নেই প্রশাসনের কোন কর্মকর্তার!
নন্দীগ্রাম উপজেলায় কর্মরত অবস্থাকালীন সময়ে বিভিন্ন দপ্তরের আমার সহকর্মীবৃন্দ, জনপ্রতিনিধিসহ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং সাধারণ মানুষের আন্তরিক ভালোবাসা ও সহযোগীতায় আমি ধন্য। বিদায়লগ্নে উপস্থিত অধিকাংশেরই মন খারাপ ছিলো, ছিলো চোখের কোণায় পানি। সে সময় আবেগ সংবরণ করতে না পেরে অনেকই কেঁদে ফেলেন। তৈরি হয় আবেগঘন এক থমথমে নিরব পরিবেশের।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ১৩ ই আগস্ট নন্দীগ্রাম উপজেলায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে যোগদান করেন হুমায়ুন কবির। তিনি বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের ৩৫ তম ব্যাচের পরীক্ষায় কৃতিত্বের সহিত উত্তীর্ণের মাধ্যমে সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে ২০১৭ সালে বগুড়ায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যোগদান করেন। এরপরে তিনি সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলায় যোগদান করেন। সেখান থেকে পদোন্নতি পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে নন্দীগ্রাম উপজেলায় যোগদান করেন।
নন্দীগ্রাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে যোগদান করার পর থেকে তিনি নিরলসভাবে কাজ করেছেন। উপজেলা পরিষদ চত্বরকে সাজিয়েছে ভিন্ন আঙ্গিকে। দৃষ্টিনন্দন উপজেলা পরিষদ চত্বরে প্রবেশ করলেই যে কারোরই মনটা খুডিতে ভরে উঠবে। উপজেলা পরিষদের রাস্তা সম্প্রসারণ, উপজেলা পরিষদের গেট ও বাগান সংস্কার, নন্দীগ্রাম অফিসার্স ক্লাবের দ্বিতীয় তলা নির্মাণ, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বাংলো এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অফিসকক্ষ সংস্কার, ছায়াবীথি বাগান তৈরি, উপজেলার আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে লাইটের ব্যবস্থা, সিসি ক্যামেরা স্থাপনসহ পুরো চত্বরকে ঢেলে সাজিয়েছেন তিনি। এছাড়াও উপজেলার সার্বিক উন্নয়ন ও সেবামূলক কার্যক্রমে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। রেখেছেন তার যোগ্যতা ও দক্ষতার স্বাক্ষর। তাই বিদায়বেলায় উপজেলার সকল সরকারি, আধা-সরকারী কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ফুলের তোড়া ও ক্রেস্ট দিয়ে তাকে বিদায় সংবর্ধনা প্রদান করেন।
তিনি ৩১ শে অক্টোবর সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ উপজেলায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে হিসেবে যোগদান করেছেন।