আভা ডেস্ক : বৈদেশিক ঋণ না পেলে অচল হয়ে পড়বে পাকিস্তানে নবগঠিত পিটিআই সরকার। এজন্য যেকোনো শর্তে প্রয়োজনীয় ঋণের জন্য বিশ্বব্যাংক, আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের (আইএমএফ) মতো বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে ধরনা দিচ্ছে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের প্রশাসন।
নতুন অর্থবছরের বাজেট বরাদ্দের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের ৯ বিলিয়ন ডলারের নগদ অর্থ প্রয়োজন। অথচ সরকারের কোষাগারে কোনো অর্থ নেই। তাই এই অর্থের পুরোটাই বিদেশ থেকে ঋণ নিতে হবে। পিটিআই সরকারের মন্ত্রীদের বক্তব্যে এই আশঙ্কা স্পষ্ট হচ্ছে। শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে ডন।
খবরে বলা হয়, শুক্রবার পাক সিনেটে এক বক্তব্যে সরকারের নতুন অর্থমন্ত্রী আসাদ উমর বলেন, সরকারি ব্যয় ও উন্নয়ন বাজেটের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের ৯ বিলিয়ন ডলার দরকার। তিনি বলেন, এই অর্থের পুরোটাই আমাদের ধার করতে হবে।
তিনি আরও জানান, প্রয়োজনীয় অর্থের জন্য আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যেই জাতীয় পরিষদ ও সিনেটের সমর্থন নিয়ে আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের কাছ থেকে আবেদন জানানো হবে।
ঋণের পাহাড় মাথায় নিয়েই ক্ষমতায় বসেছে ইমরানের সরকার। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিজের বিশাল এই ঋণের কথা স্বীকার করেন তিনি। অবকাঠামো খাতের উন্নয়নসহ সামরিক খাতে ব্যয় বৃদ্ধির কারণে বৈদেশিক ঋণ গ্রহণের মাত্রা আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পায়।
দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, চলতি বছরের এপ্রিল নাগাদ বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ৯১.৭ বিলিয়ন ডলারে এসে দাঁড়ায়। একই সঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণও উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কমেছে। বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধে বাজেটের বিপুল পরিমাণ অর্থবরাদ্দ দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবে বিগত ১৩ বছরের তুলনায় নিরাপত্তাজনিত সমস্যা মোকাবেলা করেও পাকিস্তানের অর্থনীতি ধীরগতিতে কাঙ্ক্ষিত ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের কাছাকাছি রয়েছে। তবে সরকারি দেনা বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং ঋণের সুদ পরিশোধে সরকারের ওপর চাপ থাকায় দেশটি আবারও গভীর অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, ২০১৭ সালের জুলাই মাস থেকে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত আরও ৮.৩ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক ঋণ নেয়া হয়েছে। এটা আগের বছরের জুলাই পর্যন্ত ছিল ৭২ বিলিয়ন ডলার। বাকিটা সম্পূর্ণভাবেই ঋণের অপরিশোধিত সুদ হিসেবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের হিসাবে, এই ৯১ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে পাকিস্তানকে প্রায় ১০০ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করতে হতে পারে। দৃষ্টান্তস্বরূপ, পাকিস্তানের জ্বালানি খাতসহ ১৯টি প্রজেক্টে বিনিয়োগ করেছে চীন। এ বিনিয়োগটি বার্ষিক ৭ শতাংশ সুদসহ ২৫ থেকে ৪০ বছরে পরিশোধযোগ্য। অর্থাৎ ২০১৮ সাল থেকে পরবর্তী ৪৩ বছর প্রতি মাসে আনুমানিক ৭ থেকে ৮ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করতে হবে পাকিস্তানকে।
যুগান্তর