নওগাঁয় বিএমডিএ’র ড্রেন তৈরীতে হুমকির মুখে বাড়িঘর ।

আভা ডেস্কঃ বরেন্দ্র বহুমুখী কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে নওগাঁয় মাঠের পানি নিষ্কাশনে আন্ডারগ্রাউন্ড ড্রেন তৈরি করা হচ্ছে। এর ফলে রাস্তা সংলগ্ন প্রায় ৩০টি বাড়ি ও দোকানঘর ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। স্থানীয়রা কাজে বাধাপ্রদান করায় ইতিমধ্যে কয়েকদফা হাতাহাতির ঘটনাও ঘটেছে।

তাদের অভিযোগ, নওগাঁ সদর উপজেলার তিলোকপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারের নেতৃত্বে জোর করে বাড়ির ওপর দিয়ে ড্রেন করা হচ্ছে।

স্থানীয়দের দাবি, ড্রেন করা হলেও তাদের জমিগুলো অধিগ্রহণ করা হোক অথবা গ্রামের দক্ষিণ পাশ দিয়ে খাল খনন করা হোক।

বিএমডিএ নওগাঁ সদর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯-২০ এবং ২০২০-২১ অর্থবছরে ৩ কোটি ৪৮ লাখ টাকা ব্যয়ে রাজশাহীর আবুল হোসেনের লাইসেন্সে আরসিসি আন্ডারগ্রাউন্ড ড্রেন নির্মাণের কাজটি করছেন নওগাঁর ঠিকাদার ওলিউল আহমেদ। এ ছাড়া আনুষঙ্গিক খচর ধরা হয়েছে আরও ১ লাখ টাকা। মালঞ্চা গ্রামের মাঠ থেকে তুলশিগঙ্গা নদী পর্যন্ত এ ড্রেনের দৈর্ঘ্য প্রায় ২ হাজার ৪৬০ ফুট। এ ছাড়া এর উচ্চতা (দেওয়াল) ৬ ফুট, তলা ৫ ফুট এবং উপরের ঢাকনা ৬ ফুট।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তুলশীগঙ্গা নদীর বাঁধ থেকে বসনাই, এনায়েতপুর ও মালঞ্চা গ্রামে প্রবেশে চলাচলের সুবিধার জন্য স্থানীয়রা নিজের ব্যক্তি মালিকানা জমির ওপর দিয়ে কয়েক বছর আগে প্রায় ৪-৫ হাত প্রশস্থ রাস্তা তৈরি করেন। এ রাস্তা সংলগ্ন উভয় পাশে প্রায় ৩০টি ইট ও মাটির বাড়ি এবং কয়েকটি দোকানঘর আছে। মালঞ্চা মাঠের পানি নিষ্কাশনের জন্য এ রাস্তা দিয়ে বিএমডিএ কর্তৃপক্ষ থেকে আন্ডারগ্রাউন্ড ড্রেন করা হচ্ছে। ৮ ফুট প্রস্থ ও ৬ ফুট গভীর করে খনন করা হলে বাড়ি ও দোকানঘর হুমকির মুখে পড়বে।

মালঞ্চা মাঠের পানি মাঠের দক্ষিণ দিক দিয়ে ধুপাইকুড়ি, দাড়ারকুল, ছাতিয়ান গ্রাম, দুর্গাপুর, মঙ্গলপুর হয়ে তুলশিগঙ্গা (মরা নদীতে) গিয়ে পড়ত। যদি এ দিক দিয়ে খাল খনন করে পানি নিষ্কাশন করা হয় তাহলে ধুপাইকুড়ি মাঠে ব্যক্তি মালিকানায় প্রায় ১ বিঘা জমি ওপর দিয়ে যাবে। যদি ওই ব্যক্তির জমি অধিগ্রহণ করা হয় তাহলে এ সব বাড়ি নিরাপদ থাকবে এবং সহজেই খাল খনন হবে।

অপরদিকে মালঞ্চা ও বসনাই গ্রামের দক্ষিণ পাশ দিয়ে খনন করা যাবে। এতে স্থানীয়দের সুবিধা হবে এবং বাড়ি ও দোকানের কোনো ক্ষতি হবে না। এভাবে খাল খনন করা হলে বাড়িঘর ও দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং কোনো ধরনের ক্ষতিপূরণ পাবেন না বলে ভুক্তভোগীরা আশঙ্কা করছেন।

মালঞ্চা গ্রামের শহিদুল ইসলাম বলেন, রাস্তা সংলগ্ন আমার ইটের বাড়ি, বাপ-দাদা ও দাদির কবর আছে। এলাকার চেয়ারম্যান ও মেম্বার জোর করে আমাদের পৌত্রিক সম্পত্তির ওপর নির্মিত রাস্তায় খাল খনন করছেন। এভাবে খনন করা হলে কবর ও বাড়ির দেয়াল ভেঙে পড়বে এবং আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হব।

বসনাই গ্রামের আলম, এনায়েতপুরের হানিফ ও মালঞ্চা গ্রামের আবু হাসান বলেন, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান রেজাউল করিম ও মেম্বার শামিনুর রেজা মিঠু প্রভাব খাঁটিয়ে মালিকানা জমির উপর নির্মিত রাস্তা দিয়ে ড্রেন তৈরি করছেন। ড্রেন হলে আমরা উপকৃত হব ঠিকই, কিন্তু বাড়িঘর ভেঙে তো উপকার চাই না।

স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার শামিনুর রেজা মিঠু বলেন, ড্রেনটি তৈরি হলে আমরা সবাই উপকৃত হব। কারো কোনো ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা নেই।

ঠিকাদার ওলিউল আহমেদ বলেন, বিএমডিএকে আমরা একটা লিখিত দিয়েছি। এলাকাবাসীর কোনো ক্ষতি হলে সেটির ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে।

নওগাঁ সদর উপজেলা বিএমডিএ সহকারী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, মালঞ্চা গ্রামের মাঠটি অনেক বড়। জলাবদ্ধতার কারণে কৃষকরা ফসল ঠিকমতো পায় না। পানি নিষ্কাশনের জন্য গত ২২ জুন থেকে কাজটি শুরু হয়েছে। খাসজমি বা রাস্তা দিয়ে আমরা কাজ করতে পারি। জমি অধিগ্রহণের কোনো ক্ষমতা আমাদের নেই। আশা করছি এলাকাবাসীর কোনো ক্ষতি হবে না। এ বিষয়ে একটা চুক্তিনামা হয়েছে। ক্ষতিপূরণ দেয়ার পর আবারও কাজ শুরু হবে।

সূত্রঃ যুগান্তর

 

Next Post

গাইবান্ধার বালিয়াখালি-তালুকজামিরা রাস্তার রিফাইতপুর সংযোগ স্থলের এক'শ ফুট অংশ চলাচলে অযোগ্য ।

শনি জুলাই ১১ , ২০২০
মোনায়েম মন্ডল : গাইবান্ধার বালিয়াখালি থেকে তালুকজামিরা যাতায়াতের রাস্তার রিফাইতপুর মাঠপাড়া মসজিদের মোড়ে মূল রাস্তার সাথে সংযোগ স্থলের কমপক্ষে এক’শ ফুট অংশ চলাচলে অযোগ্য হয়ে পড়েছে। কিন্তু দেখার কেউ নেই! গাইবান্ধা সদর উপজেলার বালিয়াখালি ইউনিয়নের নুরুলগঞ্জ হাটের উত্তর প্রান্তে অবস্থিত পলাশবাড়ি উপজেলার হরিনাথপুর ইউনিয়নের তালুকজামিরা যাতায়াতের রাস্তার মোড়। এই মোড় […]

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links