আভা ডেস্কঃ সমকালীন ধর্ষণ কাণ্ড নিয়ে সারা দেশের মানুষ ক্ষোভ উগড়ে দিচ্ছেন। এখনো প্রতিবাদ করছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। শোবিজ অঙ্গনের অনেক তারকাই নিজেদের ভাষায় প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
এ তালিকায় রয়েছেন—চিত্রনায়ক শাকিব খান, জয়া আহসান, চঞ্চল চৌধুরী প্রমুখ। এবার সমকালীন ধর্ষণ কাণ্ড নিয়ে কথা বলতে গিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছেন চিত্রনায়ক অনন্ত জলিল।
অনন্ত জলিল তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি ভিডিও বার্তা দিয়েছেন। ভিডিও বার্তার শুরুতে অনন্ত বলেন—এই যে তোমরা যারা ধর্ষণ করছো, তোমরা বলবো না তোরা বলবো? তোরা বলবো! তোমাদের স্ত্রী-কন্যাকে যদি কেউ ধর্ষণ করে তবে তোমাদের কেমন লাগবে? তোমরা তো অমানুষ! তোমাদের ভালোই লাগবে বোধহয়! না হলে তো অন্য মা-বোনকে ধর্ষণ করতে পারতে না। তোর যে মনুষ্যতা সেটা তো মরে গেছে। নিজেকে বীর পুরুষ ভাবো? কাপুরুষের দল! যদি বিয়ে না করে থাকিস তবে তোরও জীবনেও তো একজন মেয়ে আসবে! তোর জন্য তোর বাবা-মা কলঙ্কিত। তোর বাবা-মাকে মানুষ কী বলে?
এ পর্যন্ত সবকিছু ঠিকই ছিল। কিন্তু নারীদের পোশাক নিয়ে বক্তব্য দেওয়ার পর তৈরি হয়েছে সমালোচনা। নারীদের উদ্দেশ্যে অনন্ত জলিল বলেন—দেশের সমস্ত মেয়েদের উদ্দেশ্যে একজন ভাই হিসেবে বলতে চাই—সিনেমা, টেলিভিশন, সোশ্যাল মিডিয়ায় অন্যান্য দেশের মেয়েদের অশ্লীল ড্রেসআপ দেখে নিজেরা তা অনুসরণ করার চেষ্টা করো। আর অশালীন কাপড় পরে বের হও। আল্লাহ তা’আলা তোমাদের যে চেহারা দিয়েছেন, তার দিকে বখাটেরা না তাকিয়ে তখন তোমাদের ফিগারের দিকে তাকায়। আর বিভিন্নভাবে তোমাদের উদ্দেশ্যে মন্তব্য করে। সেখান থেকে ধর্ষণ করার চিন্তা তাদের মাথায় আসে। আশালীন কাপড় পরে তোমরা নিজেকে কি মর্ডান মনে করো?
অনন্তের এই বক্তব্যের পর নেটিজেনরা মন্তব্য করে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। প্রচ্ছদশিল্পী চারু পিন্টু লিখেছেন—‘ফালতু কথা বললেন জনাব সিআইপি। সব দোষ পোশাকের হয়ে গেল? পাবলিকলি যখন কথা বলবেন তখন হিসেব করে কথা বলা উচিত। যে ধর্ষক তার কাছে সাধারণ পোশাক বা বোরকাওয়ালী কোনোটাই মাফ পায় না। জরুরিটা হলো পারিবারিক শিক্ষা ও সামাজিক প্রতিরোধ। এটাকেই জোর দিয়ে কথা বলা উচিত।
মেহরান সঞ্জনা নামে একজন লিখেছেন—‘ডোজ কি বেশি পড়ছে? এগারো মাসের বাচ্চারও পোশাকে সমস্যা ছিল? ভাই, আপনে আগে উচ্চারণ ভালো মতো শিখে আসেন।’ রবিউল ইসলাম নামে একজন লিখেছেন—‘আপনার ওয়াইফকে ওয়েস্টার্ন ড্রেস পরান কিসের জন্য? আপনাদের দেখে দেখে তো বাংলাদেশের মেয়েরা শিখে। আপনি ভালো কথা বলছেন কিন্তু আপনার ঘরকে আগে সামলান। কারণ আপনারা সিনেমা জগতের লোক আপনাদের দেখে দেখেই বাংলাদেশের মেয়েরা শিখছে। বাইরের রাষ্ট্র যেতে হবে না আপনার ওয়াইফের দিকে তাকিয়ে দেখেন আপনার ওয়াইফ কিরকম ড্রেস পরে।
শাকিলা আফরোজ রোজা লিখেছেন—‘একজন সাত বছরের শিশুকে যখন ধর্ষণ করা হয় সেটাও কী ওই শিশুর ড্রেস দায়ী? একজন মাদ্রাসা ছাত্রী যখন ধর্ষিত হয় সেটাও কী তার পোশাকের কারণে হয়? পোশাক কখনো একজন নারীর ধর্ষণের কারণ হতে পারে না!’ এমন অসংখ্য মন্তব্য করছেন নেটিজেনরা। পাশাপাশি অনেকে আবার অনন্ত জলিলের এই বক্তব্যকে সাপোর্ট করে মন্তব্য করছেন।
এদিকে রোববার বিকাল ৫টায় সমালোচনার মুখে পড়ে অনন্ত তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে ভিডিওটি সরিয়ে ফেলেন।