ধর্ষণের শিকার পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী, গাইনি ওয়ার্ডে প্রসব বেদনায় ছটফট করছে।

আভা ডেস্কঃ ধর্ষণের শিকার পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী (১২) বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে প্রসব বেদনায় ছটফট করছে।

ওই ছাত্রীর অভিযোগ, বাকেরগঞ্জ উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের ভোজমহল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) বাবুল চাপরাশী এবং একই বাড়ির চাচা সম্পর্কের জুয়েল ও রনির ধারাবাহিক ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে সে। গত ১০ ডিসেম্বর থেকে সে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তৃতীয় তলায় গাইনি-২ বিভাগে ভর্তি রয়েছে। হাসপাতালে প্রশাসনসহ তার চিকিৎসার খোঁজখবর রাখছে ‘ভোলা ব্লাড ডোনার্স ক্লাব’ নামের একটি সংগঠন।

বাকেরগঞ্জ উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের ভোজমহল গ্রামের একটি হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান এ স্কুলছাত্রী। ৪ ভাই-বোনের মধ্যে সে সবার ছোট। তার মা বিভিন্ন বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করেন এবং বাবা সবজি বিক্রি করেন।

সংগঠনের পক্ষে সার্বক্ষণিক হাসপাতালে অবস্থান করছেন সদস্য কলেজছাত্র সুজন। শুক্রবার সন্ধ্যায় তিনি জানান, চিকিৎসকরা স্বাভাবিক প্রসব হওয়ার আশা ছেড়ে দিয়েছেন। তাকে সিজারিয়ান অপারেশন করতে হবে। এ নিয়ে আগামীকাল শনিবার হাসপাতালের চিকিৎসকদের বোর্ড সভা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

গাইনি বিভাগ-২ এর সেবিকা শাহনাজ পারভীন জানান, শিশুটির শ্বাসকষ্ট ও রক্ত শূন্যতা প্রকট। তাকে কয়েকবার রক্ত দিতে হয়েছে। স্বেচ্ছায় রক্তদান করতে এসে কলেজছাত্র সুজনের নজরে আসে এ শিশুটির জীবনের চরম অমানবিক বিষয়টি।

সুজন বলেন, শিশুটির বাবা গ্রামের বনজঙ্গল থেকে কচুসহ যাবতীয় শাক-সবজি তুলে বিক্রি করে সংসার চালান। গর্ভের বয়স চারমাস থাকাকালীন শিশুটির মা জানতে পারলেও অর্থের অভাবে চিকিৎসা এবং ধর্ষকদের প্রভাবে মুখ খুলতে না পারায় আজ এ পর্যায়ে পৌঁছেছে। বর্তমানে শিশুটি ৩৬ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা।

ধর্ষণের শিকার শিশুটি জানায়, প্রায় এক বছর আগে প্রধান শিক্ষক বাবুল হোসেন বিদ্যালয় ভবনের তৃতীয় তলায় লাইব্রেরি কক্ষে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করে। এরপর প্রায় সহকারী শিক্ষিকা রেবাকে দিয়ে তাকে লাইব্রেরিতে ডেকে নিয়ে প্রধান শিক্ষক ধর্ষণ করতো। রেবা লাইব্রেরির বাইরে পাহাড়ায় থাকতো। পরবর্তীতে একই বাড়ির সম্পর্কে চাচা জুয়েলও বাবা-মায়ের অনুপস্থিতিতে তাকে ধর্ষণ করতো। এছাড়া রনি নামের এক প্রতিবেশীও তাকে ধর্ষণ করে। গর্ভের চার মাসের সময় শারীরিক অবস্থার পরিবর্তন হলে মায়ের চাপের মুখে তার কাছে সবকিছু খুলে বলে। তখন প্রধান শিক্ষকের চাপের মুখে শুধুমাত্র জুয়েলকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছে শিশুটির মা।

বাকেরগঞ্জ থানা পুলিশের ওসি আবুল কালাম বলেন, ওই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে শুধুমাত্র জুয়েলকে আসামি করে মামলা করেন। ওই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। বর্তমানে সে এ মামলায় কারাগারে রয়েছে। এছাড়া ওই শিশু শুধুমাত্র জুয়েলকে দায়ী করে ২২ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। মামলার চার্জশিটও দেয়া হয়েছে। এখন প্রধান শিক্ষকের নাম আসা প্রসঙ্গে ওসি বলেন, জুয়েল শিশুটির নিকটাত্মীয়। ঘটনাটি ভিন্নখাতে নিতে প্রধান শিক্ষকের নাম আসতে পারে।

অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক বাবুল চাপরাশীর মোবাইল ফোন বন্ধ ও আত্মগোপনে থাকায় তার বক্তব্য জানা যায়নি। তবে তার স্বজনরা বলছেন, তিনি স্থানীয় রাজনীতির শিকার।

কলেজছাত্র সুজন জানান, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা শুক্রবার দুপুরে হাসপাতালে গিয়ে এবং জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান মুঠোফোনে শিশুটির খোঁজখবর নিয়েছেন। তার চিকিৎসার সার্বিক ব্যয় বহনেরও আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন।

বরিশালের পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম জানান, শুক্রবার দুপুরে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই শিশুকে দেখে এসেছি। চিকিৎসার খোঁজ-খবর নিয়েছি। ওই স্কুলছাত্রীর চিকিৎসার ব্যয় বহনের দায়িত্ব নেয়ার কথা জানিয়েছি। যারাই এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। আদালতের সম্মতি সাপেক্ষে ধর্ষণের মামলাটি পুনঃতদন্ত করা যায়-কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তা সম্ভব না হলে ধর্ষণের আরেকটি মামলা করে পুনরায় তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। জড়িত কেউ রেহাই পাবে না।

জাগো নিউজ

 

Next Post

মুসলিমবিদ্বেষী নাগরিক সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে শুক্রবার ভারতজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।

শনি ডিসে. ১৪ , ২০১৯
আভা ডেস্কঃ মুসলিমবিদ্বেষী নাগরিক সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে শুক্রবার ভারতজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। একদিন আগে আইনটির বিরুদ্ধে ক্ষোভের কেন্দ্রস্থল উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যে পুলিশের গুলিতে দুইজন নিহত হয়েছেন। ফরাসি বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে এমন তথ্য জানা গেছে। নয়াদিল্লিতে হাজার হাজার লোক সড়কে নেমে আসলে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দিতে পুলিশ লাঠিপেটা ও কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার […]

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links