দেশসেরা ডিডিএলজি’র পুরস্কার পেলেন তোফাজ্জল হোসেন

সোহেলরানা, পলাশবাড়ী(গাইবান্ধা)প্রতিনিধিঃ-

দক্ষতার সাথে কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ জাতীয় পর্যায়ে পরপর ৩ বার দেশসেরা শ্রেষ্ঠ ডিডিএলজি ‘র পুরস্কারের জন্য মনোনিত হয়ে হ্যাট্রিক করেছেন সাবেক পলাশবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও বর্তমান সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক হিসেবে কর্মরত আছেন ডিডিএলজি তোফাজ্জল হোসেন। জন্ম-মৃত্যুর নিবন্ধন কার্যক্রমে দেশের ৩শ”৩০ টি পৌরসভার মধ্যে ৫ টি যার মধ্যে ১টি সিরাজগঞ্জের এবং সাড়ে ৪ হাজারের অধিক ইউনিয়ন পরিষদের ১০টি মধ্যে সিরাজগঞ্জ জেলার ৪টি ইউনিয়ন পরিষদ শ্রেষ্ঠ হবার গৌরব অর্জন করেছে। দেশে জন্ম-মৃত্যুর নিবন্ধন কার্যক্রমে দেশসেরার পুরস্কারের জন্যে মনোনীত হয়েছেন ডিডিএলজি তোফাজ্জল হোসেন। ।

গত ১ অক্টোবর জাতীয় জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন বিভাগের ডেপুটি রেজিস্টার জেনারেল(অতিরিক্ত সচিব) মির্জা তারিক হিকমত স্বাক্ষরিত এক পত্রে বিষয়টি জানা গেছে।

৬ অক্টোবর (রোববার) সকালে ঢাকার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তর অডিটরিয়াম হলরুমে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে তিনি শ্রেষ্ঠ ডিডিএলজি’র পুরস্কার গ্রহন করেন।

পলাশবাড়ী উপজেলার সাবেক ইউএনও তোফাজ্জল হোসেন এর পদোন্নতি দেখতে দেখতে দীর্ঘ ৯ বছর পেড়িয়ে গেছে।বদলী হয়ে বর্তমানে সিরাজগঞ্জে দক্ষতার সাথে ডিডিএলজি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। কর্মজীবনে তিনি সিরাজগঞ্জে দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালনকালে দক্ষতার সাথে কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ জাতীয় পর্যায়ে এনিয়ে পরপর ৩ বার শ্রেষ্ঠ ডিডিএলজি ‘র পুরস্কারের জন্য মনোনিত হয়ে হ্যাট্রিক করেছেন।দীর্ঘ কয়েক বছর অনেক সময় পেড়িয়ে গেলেও রয়ে গেছে তার সাহসী দায়িত্ব কর্তব্য ও কর্মকান্ডগুলি আজও স্মৃতিতে গাঁথা।একজন উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে ২০১৫ সালের ৫ অক্টোবরে গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলাতে যোগদান করেছিলেন তিনি। সে সময় যোগদানের পর তিনি পলাশবাড়ী উপজেলার অভিভাবক হিসেবে রাষ্ট্রের প্রচলিত আইন মেনে বিগত সময় সরকারের দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে পলাশবাড়ী উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের নাগরিকদের সকল সেবা প্রদান নিশ্চিত করেন।সমস্যা-সম্ভাবনা ও এ উপজেলার উন্নয়নে তিনি তার দায়িত্ব কর্তব্য পালনে দক্ষতার সাথে অত্যন্ত সুচতুর ছিলেন।হয়তো তিনি আজ নেই কিন্তু তিনি তার কর্মকান্ডের মাধ্যমে রেখে গেছেন পলাশবাড়ীর পলাশ ফুল আজও তার স্মৃতির সাক্ষী হিসেবে বহন করছে।রাঙিয়ে দিয়ে গেছেন পদোন্নতি পেয়ে বদলী হয়ে হওয়া অতীতের সেই স্মৃতির সেই সাল। তিনি পরিবর্তন এনেছিলেন পলাশবাড়ী উপজেলা প্রশাসনিক ব্যবস্থা।প্রত্যেক দপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীদের সাথে নিয়ে নিশ্চিত করেছিলেন কর্মকর্তা কর্মচারী,কর্মকান্ডের মাধ্যমে দেখিয়ে দিয়ে গিয়ে ছিলেন জনগনের সেবার জন্যই প্রশাসন।যা আজও উপজেলাবাসীর অনেকের মনে রয়েছে।প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারী থেকে শুরু করে কারো অন্যায়-অত্যাচার,অনিয়ম দুর্নীতি ও গাফিলতি করলে কাউকেই ছাড় দেননি তিনি।এ কারনে নাগরিক সেবার মান যেমন বেড়েছিল তেমনি উপজেলা পর্যায়ে ততটাই কমেছিল বিভিন্ন দপ্তরের অনিয়ম ও দুর্নীতির চিত্র।

একজন উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে যথারীতি সময় অনুযায়ী শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করেছেন।যার ফলে উপজেলার সেবা প্রত্যাশিদের হয়রানী অনেকাংশেই লাঘব হয়েছিল।তাকে নিয়ে যেমন ছিল আলোচনা-সমালোচনা তেমনি হয়ে উঠেছিলেন অনেকের কাছে অপ্রিয়।মাদক, ভুমি দস্যু,অবৈধ বালু উত্তোলন,লাইসেন্স বিহীন ঔষধের দোকান ও ভেজাল বিরোধী অভিযান,অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাড়ান, শিক্ষার মান উন্নয়নসহ সকল ধরনের কর্মকান্ডে ভুমিকা ছিল বলাবাহুল্য।এছাড়াও সকল ধরনের নাগরিক সেবা প্রদান,স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার ভিত্তিতে ঘুষ দুর্নীতি ছাড়াই প্রকৃত সুবিধাভোগীদের তালিকা প্রনয়নের মাধ্যমে ভিজিএফ,ভিজিডি কার্ড,বয়স্ক ভাতা, প্রতিবন্ধি ভাতা, বিধবা ভাতা প্রদানেও আপোষহীন ছিলেন তিনি।শুধু তাই নয়,রোদ বৃষ্টি উপেক্ষা করে দুর্যোগকালীন (বন্যা) মুহুর্তে ছুটে গিয়ে দাড়াতেন সাধারন মানুষের পাশে।বাল্য বিয়ে মুক্ত করতে খবর পাওয়া মাত্র ছুটেহটে গিয়ে বন্ধ করতেন বাল্য বিবাহ।আইন অমান্যকারী কাজী,বরপক্ষ,ঘটক সহ সবার বিরুদ্ধে অসংখ্য ব্যক্তিকে জেল জরিমান প্রদান করেছিলেন।একারনে উপজেলা জুড়ে বাল্য বিবাহ মুক্ত হয়েছিল তার সময়ে।

এছাড়াও বেকার যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে ন্যাশনাল সার্ভিস নামে প্রকল্পের নিয়োগে ঘুষ-দুর্নীতি মুক্ত করতে এমপি থেকে শুরু করে দলীয় নেতাদের সুপারিশকে প্রাধান্য না দেওয়ায় বাঁধা বিঘ্ন ও প্রতিবন্ধকতায় পড়তে হয়েছিল তাকে। বেকার যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থানের জন্য প্রায় ৩ হাজার ১শ”সুবিধাভোগী বেকার যুবক-যুবতী পরিবারকে বিনা টাকায় ২ বছর মেয়াদী চাকুরীর ব্যবস্থা করে দিয়ে তিনি এ উপজেলা থেকে বিদায় নিয়েছিলেন।এ প্রকল্পের দুর্নীতি মুক্ত করতে একারনে তাকে অনেক বেগও পেতে হয়েছিল তবুও তিনি অন্যায়ের কাছে মাথা নোয়াননি।পলাশবাড়ীকে তিনি পলাশফুলে রাঙিয়ে গেছেন।যা স্মৃতি বিজরিত অসংখ্য চিহ্ন আজও বহন করছে আমাদের মাঝে।ব্যক্তি জীবনে তিনি ছিলেন সদা হাস্যজ্জ্বল ও সাহসী একজন মানুষ।

বর্তমানে তিনি সিরাজগঞ্জে দক্ষতার সাথে ডিডিএলজি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।সেখানেও কর্মজীবনে তিনি সেবা প্রত্যাশিসহ জনগনের নানামুখী অভিযোগ ও সকল নাগরিক সেবার মান উন্নত করনকে প্রাধান্য দিয়ে তার দায়িত্ব পালনকালে দক্ষতার সাথে কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ জাতীয় পর্যায়ে এর আগে ২ বারসহ এনিয়ে ৩ বারের মত শ্রেষ্ঠ ডিডিএলজি ‘র পুরস্কারের জন্য মনোনিত হয়ে হ্যাট্রিক করেছেন।

পরিশেষে আপনি ও আপনার স্বপরিবারসহ সব সময় ভাল থাকবেন। সুস্থ্য থাকবেন।আপনার জন্য দোয়া ও আপনার দীর্ঘায়ুসহ শুভ কামনা কামনা করি।

Next Post

সংবাদ প্রকাশের পরেও রাজশাহী সড়ক বিভাগে এখনো বহাল দূর্নীতিবাজ প্রকৌশলী হাকিম

সোম অক্টো. ৭ , ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি: ৫ আগস্ট ফ্যাসিবাদের পতনের পরও আজ অবদি বিভিন্ন দপ্তরে তাঁদের দোসরা এখনো রয়েছেন বহালতবিয়তে। বিভিন্ন সময়ে তাঁদের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের সংবাদ প্রকাশ হলেও আ’লীগ পন্থী প্রকৌশলী হওয়ায় তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি তৎকালীন সরকার। রাজশাহী সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল হাকিমের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দূর্নীতির পাহাড় পরিমান অভিযোগে […]

এই রকম আরও খবর

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links