রংপুর প্রতিনিধিঃ রংপুর নগরীর মধ্য গণেশপুর এলাকার একটি বাসায় স্কুলছাত্রী দুই বোনকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে মাহফুজার রহমান রিফাত। রোববার রংপুরের কোতোয়ালি আমলি আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দেলোয়ার হোসেনের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে ঘাতক মাহফুজার রহমান রিফাত।
জানা গেছে, নগরীর মধ্যগণেশপুর এলাকায় মমিনুল ইসলামের মেয়ে জান্নাতুল মাওয়া নবম শ্রেণির ছাত্রী এবং মোকসেদুল ইসলামের মেয়ে সুমাইয়া আখতার মীম এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। তারা দুজন চাচাতো বোন। তারা একই বাসায় পাশাপাশি ঘরে থাকত। জান্নাতুল মাওয়ার মা-বাবা তাদের স্বজনদের বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুরে গিয়েছিলেন। তবে মীমের মা-বাবা বাসায় থাকলেও তারাও বাইরে ছিলেন
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নিহত সুমাইয়া আখতার মীমের প্রেমিক মাহফুজার রহমান রিফাত মীমকে ফোন করে তাদের বাসায় আসে। তারা দুজনেই মীমদের থাকার ঘরে অবস্থান করে। এদিকে মীমের চাচাতো বোন জান্নাতুল মাওয়া হঠাৎ করে মীমদের ঘরে ঢুকে মীম ও তার প্রেমিক রিফাতকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পেয়ে বিষয়টি তার মা-বাবাকে বলে দেওয়ার হুমকি দেয়।
এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে মীম ও তার প্রেমিক রিফাত জান্নাতুল মাওয়ার ঘরে প্রবেশ করে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে। বিষয়টি আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার জন্য মুখে বিষ ঢেলে দেয় এবং গলায় ব্লেড দিয়ে কিছু অংশ কেটে ফেলে। এ ঘটনার পর রিফাতের সঙ্গে মীমের কথা কাটাকাটি হয়।
রিফাত এ সময় বুঝতে পারে মীমও হয়তো জান্নাতুল মাওয়াকে মেরে ফেলার ঘটনায় তার নাম বলে দিতে পারে। এ কারণে রিফাত মীমকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে। সঙ্গে সঙ্গে মীমকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে তার লাশ ঘরের মধ্যে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে দিয়ে রিফাত তাদের বাসা থেকে বের হয়ে যায়।
পরে ওই দিন দুপুর দেড়টার দিকে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচানো অবস্থায় মীমের লাশ দেখে এবং জান্নাতুল মাওয়াকে অন্য ঘরে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে প্রতিবেশীরা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে বিষয়টি জানান। এরপর পুলিশ দুই বোনের লাশ উদ্ধার করে।
রোববার রাত সাড়ে ৮টায় রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (অপরাধ) আবু মারুফ হোসেন ডিবি কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।