ঢাবি ছাত্রী ধর্ষনের সব আলামত মিলেছে, ফরেনসিক পরীক্ষায় একই আলামত, ধর্ষক মজনুই ।

আভা ডেস্কঃ রাজধানীর কুর্মিটোলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে ধর্ষণের সব আলামত মিলেছে। সিরিয়াল রেপিস্ট মজনুই তাকে ধর্ষণ করেছে। দুজনের দেয়া তথ্যে হবহু মিল পাওয়া গেছে। ফরেনসিক পরীক্ষায়ও সেই আলামত মিলেছে। এমন তথ্য দিয়েছে মামলার তদারক করা সংস্থা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

ডিবি বলছে, এরই মধ্যে সব আলামত পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ডিবির কাছে প্রতিবেদন জমা পড়েছে। মজনুকে জিজ্ঞাসাবাদেও অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে। দেখা যাচ্ছে, দুজনের তথ্যের হুবহু মিল রয়েছে। ওই ছাত্রীকে ভবঘুরে মজনুই ধর্ষণ করেছে।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (উত্তর) উপকমিশনার মশিউর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ঢাবি শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের পর হাসপাতালে তার কাছ থেকে নেয়া তথ্যের সঙ্গে মজনুকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের হুবহু মিল রয়েছে।

কুর্মিটোলায় যেখানে ওই ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়েছে, সেখান থেকে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করে সিআইডি। সেগুলো ফরেনসিক ল্যাবে পরীক্ষায় পাঠানো হয়। ল্যাব থেকে যে প্রতিবেদন পাওয়া গেছে, তার সঙ্গে ধর্ষক মজনুর বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রতিবেদনের মিল রয়েছে।

ডিবির এই উপকমিশনার আরও বলেন, এখন কেবল ওই তরুণীর ভ্যাজাইনাল সোয়াবের সঙ্গে মজনুর ডিএনএ পরীক্ষার প্রতিবেদনের মেলানো বাকি। এ ছাড়া বাকি সব পরীক্ষার প্রতিবেদন মিলেছে। তাতে এটি প্রতীয়মান হয়, মজনুই ওই ঢাবি শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ করেছে।

৮ জানুয়ারি গ্রেফতারের পর দিন মজনুকে আদালতে হাজির করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবি মজনুর ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত তার সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। সেদিন থেকেই ডিবির হেফাজতে মজনুকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

রিমান্ডে ডিবির কাছে ঢাবি শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে মজনু। ঢাবি শিক্ষার্থী ছাড়াও মজনু গত ১০ বছর ধরে একাধিক তরুণী, ভবঘুরে, প্রতিবন্ধী ও ভিক্ষুক নারীকে ধর্ষণ করেছে। অনেককে হত্যার হুমকি দিয়েও ধর্ষণ করেছে মজনু।

ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে মজনু বলেছে, ধর্ষণের পর ওই তরুণীর কাছে সে ৫০০ টাকা দাবি করে। মেয়েটি তার ব্যাগে টাকা আছে জানালে মজনু অন্ধকারে ব্যাগ খুঁজতে থাকে। একপর্যায়ে ব্যাগ পাওয়ার পর ভেতরে টাকা খুঁজতে থাকে সে। আর এই ফাঁকে মেয়েটি ছুটে পালায় ঘটনাস্থল থেকে।

মজনুর স্বীকারোক্তির সূত্রে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, মজনু পেছন থেকে মুখ চেপে ধরে ঝোঁপের আড়ালে নেয়ার সময় বাঁচার আকুতি জানায় ঢাবির ওই ছাত্রী। কিন্তু রাস্তায় চলাচলকারী দ্রুতগতির যানবাহনের শব্দে তা ঢাকা পড়ে যায়। এ সুযোগ নিয়ে মজনু আরও বেপরোয়া আচরণ শুরু করে। একসময় নোয়াখালীর আঞ্চলিক ভাষায় নাটকীয় সংলাপ, অঙ্গভঙ্গি ও খিস্তি-খেউড় করতে থাকে। এতে ওই তরুণী হতবিহ্বল হয়ে পড়েন, হয়ে পড়েন চরম বিপর্যস্ত। এ পর্যায়ে কিছুটা সময় অচেতন ছিলেন তিনি। চেতনা ফিরে পাওয়ার পর বেহুঁশ হওয়ার ভান ধরে পালানোর পথ খুঁজতে থাকেন। কিন্তু মজনুর ভয়ঙ্কর আচরণে সাহস হারিয়ে ফেলে হতবিহ্বল হয়ে পড়েন ফের। পরে থাকে ধর্ষণ করা হয়।

উল্লেখ্য, ৫ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৭টার দিকে রাজধানীর কুর্মিটোলা হাসপাতাল এলাকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ওই ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হন।

জানা যায়, বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে করে শেওড়ায় বান্ধবীর বাসায় যাচ্ছিলেন ওই ছাত্রী। সন্ধ্যা ৭টার দিকে তিনি ভুল করে কুর্মিটোলায় বাস থেকে নামার পর এক ব্যক্তি তার মুখ চেপে ধরে পাশের নির্জন স্থানে নিয়ে যান। সেখানে তাকে অজ্ঞান করে ধর্ষণ ও শারীরিক নির্যাতন করেন।

রাত ১০টার দিকে জ্ঞান ফিরলে তিনি বিষয়টি বুঝতে পারেন। পরে সেখান থেকে অটোরিকশায় করে বাসায় ফেরার পর রাত ১২টার দিকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়।

এ ঘটনায় ক্যান্টনমেন্ট থানায় ওই ছাত্রীর বাবার করা মামলায় মজনুকে মঙ্গলবার গ্রেফতার দেখানো হয়। গ্রেফতারের পর র্যা ব জানায়, মজনু একজন সিরিয়াল রেপিস্ট। মজনু আগে থেকেই ওঁৎ পেতে ছিল ঘটনাস্থলে। ঢাবি ছাত্রীকে জোরপূর্বক সেখান থেকে ধরে নিয়ে যায় সে। এর পর ঝোঁপের এক পাশে নিয়ে পাশবিক নির্যাতন চালানো হয়। এর আগেও একই জায়গায় কয়েকজন নারীকে ধর্ষণ করে সে।

একই জায়গায় মজনু এ ধরনের অপরাধ করেছে। প্রতিবন্ধী, ভিক্ষুকসহ বিভিন্ন নারীকে সে আটকে রেখে ধর্ষণ করত। তাদের হত্যার হুমকিও দিত। মজনু স্বীকার করেছে ঘটনার সময় সে একাই ছিল, ভিকটিমও তেমনই বলেছে।

যুগান্তর

Next Post

আর এম পি পুলিশের অভিযানে আটক-২৯

বুধ জানু. ১৫ , ২০২০
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের(আরএমপি) নিয়মিত মাদক বিরোধী অভিযানে ২৯ জনকে আটক করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে মাদকদ্রব্য। আজ বুধবার আরএমপি’র মুখপাত্র গোলাম রুহুল ‍কুদ্দুসের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, মহানগরীর থানা ও ডিবি পুলিশ মহানগরীর বিভিন্নস্থানে অভিযান চালিয়ে বোয়ালিয়া মডেল থানা ৯ জন, রাজপাড়া […]

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links