আভা ডেস্কঃ দেশে প্রতি ১০০ জনে ১৯ জন কোনো না কোনো কারণে দৃষ্টিত্রুটিতে ভুগছেন। দৃষ্টিত্রুটিতে ভোগা মানুষের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি রাজধানী ঢাকায়। আর সবচেয়ে কম খুলনা বিভাগে।
সর্বশেষ জাতীয় অন্ধত্ব জরিপে এসব তথ্য উঠে এসেছে বলে গত শুক্রবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়। সম্প্রতি সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চ, বাংলাদেশ (সিআইপিআরবি) ‘দেশব্যাপী অন্ধত্ব জরিপ–২০২০’ শিরোনামের এই সমীক্ষা চালায়।
সমীক্ষার ফলাফলে জানানো হয়েছে, দেশজুড়ে ১৯ শতাংশ মানুষ দৃষ্টিত্রুটির শিকার। এর মধ্যে ১ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষের বাস ঢাকায়। আর খুলনা বিভাগে দৃষ্টিত্রুটি থাকা মানুষের হার শূন্য দশমিক 8 শতাংশ।
সিআইপিআরবির হেলথ সিস্টেম রিসার্চ ডিভিশনের পরিচালক ডা. সেলিম মাহমুদ চৌধুরী দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন, বায়ু, পানি, শব্দদূষণ, মোবাইল ফোন ও টিভি আসক্তি, খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন, পরিশ্রম করার প্রবণতা কমে আসার কারণে ঢাকায় দৃষ্টিত্রুটির হার বেশি হতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘গ্রামের মানুষের চেয়ে শহরের মানুষের দৃষ্টিত্রুটির হার বেশি কেন, এর পেছনের কারণ কী, তা নিয়ে বড় গবেষণা হওয়া প্রয়োজন। আমাদের এই জপিরের লক্ষ্য ছিল দেশে কী পরিমাণ অন্ধত্ব রয়েছে এটা জানা।’
ডা. সেলিম মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘দেশে ৭১ শতাংশ অন্ধত্বের কারণ হচ্ছে চোখের ছানির চিকিৎসা না করানো। সঠিক সময়ে চিকিৎসা করানো সম্ভব হলে ৮০ শতাংশ চোখ ভালো করা সম্ভব। এ ছাড়া অন্য কারণগুলোর মধ্যে আছে ডায়াবেটিসজনিত রেটিনোপ্যাথি, গ্লুকোমা এবং বার্ধক্যজনিত কারণ।’
তিনি বলেন, ‘দৃষ্টিজনিত সমস্যা বা অন্ধত্ব শুধু স্বাস্থ্যের সমস্যা নয়, এটি বড় ধরনের সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমস্যা। তাই এ বিষেয়ে এখনই সচেতন হওয়া জরুরি।’
জাতীয় জরিপ বলছে, দেশে প্রতি ১০০ জনের মধ্যে একজন অন্ধত্বের শিকার। ৩০ বছর বা তার বেশি বয়সী জনসংখ্যার প্রায় ১ শতাংশ মানুষ এই সমস্যায় ভুগছেন। প্রায় সাড়ে সাত লাখ মানুষ চোখে দেখেন না। একটু সচেতন হলে ৮০ শতাংশের বেশি অন্ধত্ব কমিয়ে আনা সম্ভব।
৬৪ জেলার গ্রাম ও শহরে ২০২০-এর অক্টোবর থেকে ২০২১ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত এই জরিপ হয়। জরিপে ১৮ হাজার ৮১০ জন নারী ও পুরুষের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। জরিপে দেখা গেছে, গত ২০ বছরে দেশে অন্ধত্বের হার ৩৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
ডা. সেলিম মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘জাতীয় পর্যায়ে জরিপ করতে হলে একটা নির্দিষ্টসংখ্যক মানুষের অংশগ্রহণ প্রয়োজন হয়। আমাদের হিসাব ছিল জরিপে ১৮ হাজারের কাছাকাছি মানুষের অংশগ্রহণ হলেই চলত। আমরা কিছু লোক বেশি রেখেছি। ১৮ হাজারের বেশি মানুষের ওপর করা জরিপকে ভিত্তি ধরে জাতীয় পর্যায়ের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।’
২০১৪ সালে ৫০ শতাংশ অন্ধত্ব কমানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করে সরকার। সে সময় দেশে অন্ধত্বের হার ছিল ১ দশমিক ৫৩ শতাংশ। ছয় বছরের ব্যবধানে শূন্য দশমিক ৭৭ শতাংশ কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। পার্শ্ববর্তী দেশগুলো থেকে বাংলাদেশে চোখের স্বাস্থ্যের অবস্থা অনেক ভালো বলেও জরিপে উঠে এসেছে।
জরিপে বলা হয়েছে, সারা দেশে ৩০ বছর বা তার বেশি বয়সী ২৬ শতাংশ মানুষ চশমা পরেন। ৩০ বছর বা তার বেশি বয়সী ১৯ শতাংশ মানুষ দেশে দৃষ্টিত্রুটিজনিত সমস্যায় ভুগছেন। তবে বিশ্বে এই বয়সীদের মধ্যে এই হার ৩০ শতাংশ।
ঢাকায় দৃষ্টিত্রুটির হার বেশি হওয়ার কারণ নিয়ে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. গোলাম মোস্তফা দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন, পানি ও বায়ুদূষণের কারণে অনেক রোগের হার বেশি রাজধানীতে। তবে অন্ধত্বের হার বেশি হওয়ার বিষয় নিয়ে কিছু বলতে পারব না। জরিপের বিস্তারিত তথ্য আমরা হাতে পেলে এ বিষয়ে জানাতে পারব।’
প্রতিবেশী দেশের অন্ধত্বের অবস্থা
জরিপের বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়, অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে বয়স্কদের মধ্যে অন্ধত্ব কম। ভারতে পঞ্চাশোর্ধ্বদের মধ্যে অন্ধত্বের হার ১ দশমিক ৭৫ শতাংশ। নেপালে এ হার ২ দশমিক ৫ শতাংশ। পাকিস্তানে অন্ধত্বের হার ২ দশমিক ৭ শতাংশ। বাংলাদেশে এ হার ১ শতাংশ।
প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়, চোখের বিভিন্ন সমস্যা কমাতে একটি পরিকল্পিত পদ্ধতি নেয়া উচিত। দেশে প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কমিউনিটি ভিশন সেন্টার স্থাপনের মাধ্যমে চোখের স্বাস্থ্যসেবা সম্প্রসারণ করা যেতে পারে।
২০২০ সালের বৈশ্বিক লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে অন্ধত্ব ৫০ শতাংশ কমাতে ২০০৫ সালে ন্যাশনাল আই কেয়ার প্রোগ্রাম শুরু করেছে সরকার।
শনি ডিসে. ১৮ , ২০২১
আভা ডেস্কঃ বিশ্ব চলচ্চিত্রে আলোড়ন তোলা বাংলাদেশের সিনেমা আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ পরিচালিত রেহানা মরিয়ম নূর এবার আসছে চরকির পর্দায়। দৈনিক বাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে চরকি কর্তৃপক্ষ। কবে থেকে সিনেমাটি ওয়েব প্ল্যাটফর্মে দেখা যাবে, সেটি আনুষ্ঠানিকভাবে জানাবে তারা। সিনেমাটি ১২ নভেম্বর দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে। রেহানা মরিয়ম নূর সিনেমার কাহিনি আবর্তিত […]
এই রকম আরও খবর
-
৯ নভেম্বর, ২০২০, ৩:৪৩ অপরাহ্ন
-
৯ নভেম্বর, ২০২১, ৫:৪৮ অপরাহ্ন
-
১৯ জুলাই, ২০২০, ৯:১৫ অপরাহ্ন
-
১৬ মার্চ, ২০২১, ১:২৩ অপরাহ্ন
-
২০ জুন, ২০২১, ৪:৫৯ অপরাহ্ন
-
২৮ জুন, ২০২২, ২:৫৮ অপরাহ্ন