আভা ডেস্কঃ ড্রোন নিবন্ধন ও উড্ডয়ন নীতিমালা-২০২০ এর খসড়ার অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এর ফলে সামরিক বা রাষ্ট্রীয় প্রয়োজন ছাড়া খেলনা, অবাণিজ্যিক উদ্দেশ্য ৫ কেজি ওজনের ওপরে ড্রোন ওড়াতে অনুমতি নিতে হবে।
সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি যুক্ত দেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৈঠকে শেষে সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এতথ্য জানান।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ড্রোন নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত নেওয়া হয়েছে। এতে চারটি শ্রেণি করে দেওয়া হয়েছে। ‘ক’ শ্রেণি বিনোদনের জন্য নির্ধারণ জন্য করা হয়েছে। শিশুরা এটিকে খেলনা হিসেবে ব্যবহার করবে। এটার ওজন অবশ্যই পাঁচ কেজির নিচে হবে। আর অবাণিজ্যিক কাজের জন্য ‘খ’ শ্রেণি নির্ধারণ করা হয়েছে। কেউ বনের সার্ভে করে, গবেষণা বা বই লেখার মতো নিজের কাজের জন্য ব্যবহার করে। এটা ৫কেজির বেশি হলে অনুমতি নিতে হবে।
তিনি বলেন, ‘গ’ শ্রেণি বাণিজ্যিক কাজের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে।এর ওজন পাঁচ কেজির ওপর। জমিজমা বা ফসলের ওপর সার্ভের কাজে ব্যবহার করা যাবে। কেউ যদি আনারসের জেলি করার জন্য কোম্পানি করতে চান, তিনি পাহাড়ে একটা সার্ভে করতে পারেন কী পরিমাণ প্রোডাকশন আসতে পারে, কারা কন্ট্রাক্ট ফার্মার হতে পারেন, এটা বাণিজ্যিক উদ্দেশ্য।
আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘ঘ’ শ্রেণি রাষ্ট্রীয় বা সামরিক কাজে ব্যবহারের জন্য। যেমন পদ্মায় ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছে। পদ্মার স্প্যান বসাতে ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছে। পানির গতিবিধি জানার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে। ড্রোন দিয়ে সার্ভে করে যা যা দরকার করা হয়েছে। সরকারি কাজে ব্যবহারের জন্য অনুমতি লাগবে না।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, সামরিক বা রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনে ড্রোন ব্যবহারে অনুমতি লাগবে না। সিভিল অ্যাভিশেয়ন কর্তৃপক্ষ নির্দিষ্ট করে দেবে কার কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সিভিল অ্যাভিশেয়ন কর্তৃপক্ষ থেকে অনুমিত নিতে হবে। মনে করেন, পঞ্চগড় থেকে যদি কেউ বাণিজ্যিকভাবে ড্রোন ব্যবহার করতে চায় সে অনলাইনে অনুমতি নিতে পারবে। গ্রিন, রেড ও ইয়োলো জোন থাকবে। খেলনা বা বিনোদনের জন্য ৫শ ফুটের বেশি যেতে পারবে না। বাকিগুলোর জন্য অনুমতি নিতে হবে।
তিনি বলেন, রেড জোন হলো- এয়ারপোর্ট, ক্যান্টনমেন্টের ভেতরে, পদ্মাসেতুতে কাউকে ড্রোন ওড়াতে দেবে না। পারফরম্যান্স ইন্ডিকেটরের (কেপিআই) ভেতরে ড্রোন ওড়াতে পারবে না। এখানে শুধু সিভিল অ্যাভিয়েশন দিলেই হবে না, কেপিআই অথরিটির কাছ থেকেও অনুমতি নিতে হবে। আন্তর্জাতিক কোনো সংস্থা পদ্মার ওপর একটা ডকুমেন্টারি করবে, তখন সিভিল অ্যাভিয়েশন অনুমতিসহ কেপিআই অথরিটি থেকে অনুমতি লাগবে।
এদিকে একই সভায় স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) (সংশোধন) আইন, ২০২০ এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, বর্তমান সিটি করপোরেশন আইন অনুযায়ী কাজ করতে কিছু অসুবিধা হচ্ছিল। এ আইনে নিয়ম রয়েছে, (মেয়াদোত্তীর্ণের আগে) ৬ মাসের (১৮০ দিন) মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। অন্যদিকে রয়েছে যেদিন তারা (মেয়র ও কাউন্সিলর) বৈঠক করবে সেই থেকে ৫ বছর পর্যন্ত তাদের সময় থাকবে। অনেক সময় ৪-৫ মাস আগে নির্বাচন হয় এবং শপথ নিলেও দায়িত্ব নিতে পারে না। মেয়াদ পূর্ণ না হাওয়ায় অনেক দিন তাদের অপেক্ষা করতে হয়।
তিনি বলেন, নতুন আইন অনুযায়ী, মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন শেষ করতে হবে। যেদিন শপথগ্রহণ করবে এর ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে হবে। জটিলতা নিরসনে স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) (সংশোধন) আইনের খসড়া নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, নতুন আইন পাস হলে মেয়র ও কাউন্সিলরদের মেয়াদ থাকার পরও তাদের পদ বিলুপ্ত হয়ে যাব।