জাতীয় চার নেতাকে হত্যা মানবাধিকার লঙ্ঘন ও পৃথিবীর ইতিহাসে এটি জঘন্যতম হত্যা, সাংসদ ফজলে হোসেন বাদশা

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা বলেছেন, ৩ নভেম্বর কারাভ্যন্তরে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা মানবাধিকার লঙ্ঘনের এক জঘন্যতম দৃষ্টান্ত। পৃথিবীর ইতিহাসে এটি জঘন্যতম দৃষ্টান্ত হয়েই থাকবে।

জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে সোমবার সকালে রাজশাহী নগরীর কাদিরগঞ্জে জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামানের সমাধীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। রাজশাহী-২ (সদর) আসনের এই সংসদ সদস্য মঙ্গলবার সংসদীয় কাজে ঢাকায় থাকবেন। তাই আগের দিনই তিনি শহীদ কামারুজ্জামানের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তার সমাধীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর তিনি সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন।

ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, কারাগারে গ্রেপ্তার অবস্থায় জেলখানার ভেতরে সামরিক জান্তার লোকজন ঢুকে চার নেতাকে হত্যা করা পৃথিবীর ইতিহাসে জঘন্যতম দৃষ্টান্ত। যারা এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে ছিল, সেই রাজনীতিকে ধারণ করেছে, তারা আজও বাংলাদেশে বিদ্যমান এবং তারাই আজকে বিএনপি-জামায়াত-এই সমস্তা রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় রয়েছে।

আজকে আমাদের ভাবতে হবে বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের ধারায় এবং গণতন্ত্রের ধারায় নিয়ে যেতে হলে রাজনৈতিক চেতনাবোধ সম্পন্ন নৈতৃত্ব এবং একইসঙ্গে কর্মীবাহিনী অপরিহার্য।

তিনি বলেন, এমন কর্মীবাহিনী দিয়ে আজকে দেশ পরিচালনা করা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে যে কর্মীবাহিনী সম্পর্কে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগ হলো- যারা ফ্রিডমপার্টি করত, জামায়াত-বিএনপি করত তারা আজকে আওয়ামী লীগে ঢুকে পড়েছে। ক্ষমতার রাজনীতিতে ঢুকে পড়েছে। তাহলে জেলহত্যার সঙ্গে যারা যুক্ত ছিল, ফ্রিডমপার্টি করত তারাই তো আজকে আওয়ামী লীগের মধ্যে ঢুকে পড়েছে। আওয়ামী লীগের নেতা হয়েছে। অনেকে দেখি এমপি হয়েছে, অনেকে মন্ত্রীও হয়েছে। তাহলে এই সরকার কীভাবে দেশ পরিচালনার ক্ষেত্রে সফল হওয়ার পথে এগিয়ে যেতে পারে? যখন ঘরের শত্রু বিভীষণ তখন এখানে কীভাবে সাফল্য আসবে সেটা ভেবে দেখতে হবে।

ওয়ার্কার্স পার্টির এই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, আমরা সবসময় বলেছিলাম ১৪ দলীয় জোট হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাসম্পন্ন জোট। সেই চেতনাকে ধারণ এবং বাস্তবায়নের জন্য আমাদের কাজ করা উচিত ছিল। আমরা ২৩ দফা কর্মসূচির ভিত্তিতে ১৪ দল করেছিলাম। ১৪ দলের ২৩ দফা কর্মসূচি বাস্তবায়নে একটা সম্মিলিত রাজনৈতিক উদ্যোগ নিতে হবে। কেননা ২৩ দফা কর্মসূচি ছিল জনগণের প্রতি একটা প্রতিশ্রুতি। জনগণের কাছে আমরা যখন প্রতিশ্রুতি দেই, তখন সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ করা রাজনৈতিক জোটের দায়িত্ব হয়ে দাঁড়ায়। আমরা সেই দায়িত্ব এখনও পালন করতে পারিনি। যদি পারতাম, তাহলে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি বা যারা জেলহত্যার নায়ক ফ্রিডম পার্টির সঙ্গে যুক্ত ছিল, যারা বিএনপি-জামায়াতের সাথে যুক্ত তারাও আমাদের মধ্যে ঢুকে পড়তে পারত না।

ফজলে হোসেন বাদশা মনে করেন এখনও সময় আছে পরিপূর্ণভাবে দেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন করার। তিনি বলেন, আমরা দীর্ঘ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে অনেক রক্তের বিনিময়ে আজকে এই ক্ষমতা আমরা ফিরে পেয়েছি। ক্ষমতাকে সুসংহত করতে হলে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে আদর্শভিত্তিক এগোতে হবে। সেই ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টাকে বাস্তবায়নের জন্য উদ্যোগ নিতে হবে। কিছু মানুষ ধনী হয়ে যাবে। লুটপাট করে টাকার গুদাম বানাবে। বিদেশে টাকা পাচার করবে। ব্যাংক লুট করবে। এদেরকে ক্ষমা করে, তাদের সহনশীল দৃষ্টি দেখে মানুষের স্বার্থকে উপেক্ষা করার কোন সুযোগ নেই।

তিনি আরও বলেন, আমরা এই রকম একটি সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য বিএনপি-জামায়াত সরকারকে নিশ্চয় উৎখাত করিনি। উৎখাত করেছি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার জন্য। জনগণের স্বার্থ এবং জনগণের অধিকারের জন্য সরকার প্রতিষ্ঠা করেছি। আমি মনে করি আগামী দিনগুলোতে সেই ধারাতেই আমরা কাজ করব। আমি ওয়ার্কার্স পার্টির পক্ষ থেকে বলতে পারি, রাজশাহীর সাংসদ হিসেবে বলতে পারি- সেই আদর্শ থেকে এক বিন্দুও আমরা বিচ্যুত হওয়ার পক্ষপাতী না।

এর আগে ফজলে হোসেন বাদশা শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামানের সমাধীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এ সময় অন্যদের মধ্যে রাজশাহী নগর ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক দেবাশিষ প্রামানিক দেবু, সম্পাদকমণ্ডলির সদস্য অ্যাডভোকেট এন্তাজুল হক বাবু, সিরাজুর রহমান খান, আবদুল মতিন, মনির উদ্দিন পান্না, নাজমুল করিম অপু, সাবেক ছাত্রনেতা ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাত নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Next Post

প্রতারণার মামলায় সাবরিনার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ ১২ ডিসেম্বর।

সোম নভে. ২ , ২০২০
আভা ডেস্কঃ নির্বাচন কমিশনের (ইসি) দায়ের করা প্রতারণার মামলায় ডা. সাবরিনা শারমিনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ আগামী ১২ ডিসেম্বর ধার্য করেছেন আদালত। সোমবার (২ নভেম্বর) মামলাটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ধার্য ছিল। কিন্তু এদিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাড্ডা থানার এসআই মইনুল ইসলাম প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেননি। এজন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন […]

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links