জাতিগত নিধন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় প্রায় ৭ লাখ রোহিঙ্গা

আভা ডেস্ক রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে অভিযানের সময় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে জাতিসংঘ শিশু অধিকার কনভেনশন লঙ্ঘনের আলামত পাওয়া গেছে। সম্প্রতি রোহিঙ্গা ইস্যুতে তদন্ত করতে গিয়ে শিশু অধিকার রক্ষা বিষয়ক সংগঠন সেভ দ্য চিলড্রেন নরওয়ের আইন বিশেষজ্ঞরা এসব আলামত খুঁজে বের করেছেন। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

গত বছরের ২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্ব-পরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। জাতিগত নিধন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় প্রায় ৭ লাখ রোহিঙ্গা। বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন এ ঘটনায় জাতিগত নিধনের আলামত খুঁজে পায়। জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন এ ঘটনাকে ‘জাতিগত নিধনের পাঠ্যপুস্তকীয় উদাহরণ’ অ্যাখ্যা দেয়। বাংলাদেশে পালিয়ে আসা শরণার্থীদের প্রায় অর্ধেকই শিশু।

সেভ দ্য চিলড্রেনের প্রতিবেদনটি আগামী সপ্তাহে প্রকাশের কথা রয়েছে। তবে আগেই শুধুমাত্র রয়টার্সের কাছেই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। বিভিন্ন জাতিসংঘ সংস্থা ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোর গবেষণা ও তদন্ত প্রতিবেদন বিশ্লেষন করে শিশুদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধের প্রমাণ পেয়েছেন সেভ দ্য চিলড্রেনের আইনজ্ঞরা। ওই সব প্রতিবেদনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ ও নির্যাতনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গবেষণায় দেখা গেছে, ২০১৭ সালের আগস্টে পুলিশ তল্লাশি চৌকিতে হামলার পর মিয়ানমার সরকারের উদ্যোগ ও আগে থেকেই রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে চলমান বৈষম্য মিলিয়ে জাতিসংঘ শিশু অধিকার কনভেনশনের কমপক্ষে সাতটি মূল ধারা লঙ্ঘন করা হয়েছে।

বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সরকার ও নিরাপত্তা বাহিনী উভয়েরই দোষ রয়েছে। সামরিক অভিযানকে সহায়তা করার জন্য মিয়ানমার সরকার ‘ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। আর নিরাপত্তাবাহিনীকে ‍নিবৃত করতে বা নিন্দা জানিয়ে সরকার কোনও উদ্যোগ নিয়েছে তারও কোনও প্রমাণ নেই।

মিয়ানমার ১৯৯১ সালের জাতিসংঘ শিশু অধিকার কনভেনশনে স্বাক্ষর করে। তাই আইন অনুযায়ী তারা এই কনভেনশন মেনে চলতে বাধ্য। তবে বিষয়টি নিয়ে মিয়ানমার সরকার বা নিরাপত্তা বাহিনীর পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে এ অভিযোগের বিষয়ে কেউ মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

প্রতিবেদনে কনভেনশন লঙ্ঘনের বিষয়টি তুলে ধরতে সহিংসতা, নির্যাতন, অবহেলা, যৌনসহ অন্যান্য শোষণ, অমানবিক ব্যবহার ও আটক হওয়ার হাত থেকে শিশুদের রক্ষা করতে ব্যর্থ হওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গা শিশুদের বিরুদ্ধে নির্বিচারে ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। এছাড়া তাদেরকে নির্যাতন, দুর্ব্যবহার ও লিঙ্গভিত্তিক নির্যাতন করা হয়েছে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে স্বাধীন তদন্ত করতে সরকারের ব্যর্থতার পাশাপাশি নাগরিকত্ব অস্বীকারসহ রোহিঙ্গা শিশুদের বিরুদ্ধে চলমান বৈষম্যও জাতিসংঘ শিশু অধিকার কনভেনশন লঙ্ঘনের শামিল।

প্রতিবেদনের সহকারী লেখক ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক শরণার্থী আইন বিভাগের প্রফেসর ইমিরেটাস গুই গুডউইন গিল বলেন, ‘সহিংসতার যে তালিকা আমরা পেয়েছি তা সামগ্রিক নয়। এতে শুধু সবচেয়ে মারাত্মক লঙ্ঘনগুলো তুলে ধরা হয়েছে। সেখানে একই ধরনের আরও সহিংসতা থাকার অনেক সম্ভাবনা রয়েছে’।
উৎস
বাংলা ট্রিবিউন

Next Post

রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে ১০০ গ্রাম হেরোইনসহ মাইনুল ইসলাম আটক

রবি জুলাই ২২ , ২০১৮
নিজস্ব প্রতিনিধি : রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে ১০০ গ্রাম হেরোইনসহ মাইনুল ইসলাম (৪০) নামের এক মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে গোদাগাড়ী মডেল থানা পুলিশ। সে গোদাগাড়ী পৌর এলাকার সিএনবি গড়ের মাঠ গ্রামের আরশাদ আলী আফুয়ানের ছেলে। পুলিশ সূত্রে জানাযায়, শনিবার বিকলে সাড়ে ৬ টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পৌর এলাকার সিএনবি গড়ের মাঠ […]

এই রকম আরও খবর

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links