নিজস্ব প্রতিনিধি ঃ ছোট যমুনা নদীতে জয়পুরহাট চিনিকল থেকে উৎপাদিত বিষাক্ত বর্জ্য (গাদ) ফেলার প্রতিবাদে শনিবার নওগাঁয় মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্থানীয় সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন একুশে পরিষদ নওগাঁর আয়োজনে শহরের ব্রিজের মোড়ে স্বাধীনতা ভাস্কর্যের সামনে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।
বেলা সাড়ে ১১টা থেকে একুশে পরিষদ নওগাঁর সভাপতি ডিএম আব্দুল বারীর সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য দেন, একুশে পরিষদ নওগাঁর উপদেষ্টা শরিফুল ইসলাম খান, আতাউল হক সিদ্দিকী, ময়নুল হক দুলদুল, কায়েস উদ্দীন ও গুরুদাস দত্ত, সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মেহমুদ মোস্তফা, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন নওগাঁ শাখার সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, ১৯৬৩ সালে জয়পুরহাটে দেশের বৃহত্তম চিনিকল প্রতিষ্ঠার পর থেকে আজ পর্যন্ত আধুনিক বর্জ্য পরিশোধনাগার প্লান্ট (ইটিপি) স্থাপন করেনি কর্তৃপক্ষ। ফলে প্রতি বছর ওই কারখানা থেকে হাজার হাজার টন বিষাক্ত তরল বর্জ্য ছোট যমুনা ও তুলসীগঙ্গা নদীতে ফেলা হচ্ছে। ফলে নদীর পানিসহ আশপাশের জলাধারগুলো দূষিত হয়ে যাচ্ছে। গত এক সপ্তাহ ধরে ছোট যমুনার নদী ব্যাপকভাবে দূষিত হয়ে পড়ায় নদীর মাছসহ অন্যান্য জলজ প্রাণী মরে ভেসে উঠছে। অবিলম্বে নদীতে চিনিকলের বর্জ্য ফেলা বন্ধ করার দাবি জানান তাঁরা।
মানববন্ধনে একুশে পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মেহমুদ মোস্তফা বলেন, ‘জয়পুরহাট চিনিকল প্রতিষ্ঠার পর থেকে নদীতে বিষাক্ত বর্জ্য ফেলে আসছে কর্তৃপক্ষ। ২০১৪ ও ২০১৫ সালে একুশে পরিষদের উদ্যোগে মানবন্ধন, প্রতিবাদসহ ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তোলা হয়। ফলে ২০১৫ সাল থেকে নদীতে চিনিকলের বর্জ্য ফেলা বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু সম্প্রতি আবারও নদীতে বর্জ্য ফেলতে শুরু করেছে চিনিকল কর্তৃপক্ষ। ফলে নদীর মাছসহ অন্যান্য জলজ প্রাণী মরে ভেসে উঠছে।’
পরিষদের সভাপতি ডিএম আব্দুল বারী বলেন, ছোট যমুনা নদী এক সময় নওগাঁর ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রাণকেন্দ্র ছিল। দূর-দূরান্ত থেকে আসা পণ্যবাহী বড় বড় নৌকা এই নদীতে চলাচল করত। সারাবছরই নদীতে প্রবাহ থাকত। কিন্তু দীর্ঘ দিন ধরে পুনঃখনন না হওয়ার কারণে এখন বছরের অধিকাংশ সময় ছোট যমুনায় প্রবাহ থাকে না। নদীর দুই তীর দখল করায় নদীটি ক্রমাগতভাবে সর্পিলাকার হয়ে পড়ছে। এছাড়া কলকারখানা ও বাসাবাড়ির বর্জ্য প্রতিনিয়ত নদীর পানিতে ফেলে দূষিত করা হচ্ছে। ফলে ছোট যমুনা নদী ধীরে ধীরে মরা খালে পরিণত হচ্ছে।
বাপা নওগাঁ শাখার সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বলেন, দূষণের হাত ছোট যমুনাকে বাঁচাতে অবিলম্বে জয়পুরহাট চিনিকলে বর্জ্য শোধনাগার প্লান্ট (ইটিপি) স্থাপন করতে হবে। এতদিনেও এত বড় একটি কারখানায় ইটিপি স্থাপন না হওয়া বিস্ময়কর। জয়পুরহাট চিনিকলে দ্রুত ইটিপি স্থাপনে প্রশাসনকেই উদ্যোগ নেওয়া উচিত। তা না হলে এই এলাকার জলাধারগুলো দূষিত হতেই থাকবে।