চাকরিতে প্রবেশে বয়স বৃদ্ধির দাবিতে আট বছর ধরে আন্দোলন চলছে।

আভা ডেস্ক: সরকারি চাকরিতে প্রবেশে বয়স বাড়ানোর সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়নে কোনো উদ্যোগ নেই। দু’মাস আগে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ বছর এবং অবসরের বয়স ৬৫ বছর করার সুপারিশ করে।

কিন্তু সোমবার পর্যন্ত জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সুপারিশ বাস্তবায়নে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গত ২০ আগস্ট মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়তে পারে। স্থায়ী কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতেই এ বিষয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। এখনও চূড়ান্ত হয়নি। আমরা আলোচনা করছি। বিষয়টিকে সরকার ইতিবাচকভাবে নিয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, চাকরিতে প্রবেশ বা অবসরের বয়স বৃদ্ধি করা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিষয়। এই সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই চাকরিতে প্রবেশের বয়স দুই বছর বাড়ানোর চিন্তাভাবনা আছে। এসব নিয়ে যেহেতু সিনিয়র কর্মকর্তাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে, তাই প্রস্তাব তৈরির কাজ তাদেরই করতে হবে।

তবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা এ প্রসঙ্গে বলেছেন, নির্বাচনী বছর হওয়ায় সিনিয়র কর্মকর্তাদের মধ্যে এ নিয়ে আলোচনা চলছে। তাতে সাধারণ চাকরি প্রার্থীদের বয়স ৩২ আর মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৩৩ বছর করার কথা উঠে এসেছে। কিন্তু এ নিয়ে আনুষ্ঠানিক বৈঠক বা দাফতরির নথিপত্র হয়নি। তাই চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানোর দাফতরিক সিদ্ধান্ত হয়েছে এমনটি বলা যাবে না। এ বিষয়ে জনপ্রশাসন সচিব ফয়েজ আহমদের সঙ্গে যোগাযোগ করে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

দেশে বেকারত্বের হার বেড়ে যাওয়া, উচ্চশিক্ষার হার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সেশনজট, গড় আয়ু বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে চাকরি প্রত্যাশীরা দীর্ঘদিন ধরে চাকরিতে ঢোকার বয়স ৩৫ বছর করার দাবি জানিয়ে আসছিলেন। আরও কিছু যুক্তিও উপস্থাপন করা হয়েছে। চাকরি প্রত্যাশীরা বলছেন, বর্তমানে নার্স নিয়োগের বয়স ৩৬ বছর। ডাক্তার, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ হয় ৩২ বছর বয়সে। উপজাতি এবং প্রতিবন্ধী প্রার্থীরাও ৩২ বছরের সুবিধা পাচ্ছেন। পার্বত্য জেলায় ৪০, প্রধান শিক্ষক পদে ৩৫ এবং বিভাগীয় প্রার্থী ৩৫-৪০ বছর বয়সে নিয়োগের বিধান কার্যকর আছে। কেবল সাধারণ প্রার্থীদের ক্ষেত্রে ৩০ বছর কার্যকর। এটা বৈষম্যমূলক।

চাকরিতে ঢোকার বয়স বৃদ্ধির পক্ষের যুক্তি হিসেবে সংশ্লিষ্টরা সরকারি কর্মচারীদের অবসরের বয়স দুই বছর বৃদ্ধির বিষয়টিও সামনে এনেছেন। তারা বলছেন, ২০১১ সালের ১৯ ডিসেম্বর মন্ত্রিসভার অনুমোদন নিয়ে সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অবসরের বয়স ৫৭ থেকে বাড়িয়ে ৫৯ করা হয়। মুক্তিযোদ্ধাদের অবসরের বয়স ৬০ বছর করা হয়। এভাবে অবসরের বয়স বাড়ানোর পর চাকরিতে প্রবেশের বয়সও বাড়ানো যৌক্তিক।

চাকরির বয়স বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলনকারী বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র পরিষদের সভাপতি সঞ্জয় কুমার দাস বলেন, সরকারি নিয়ম অনুসরণ করে বেসরকারি ব্যাংকসহ বহুজাতিক কোম্পানিগুলোও ৩০ বছরের বেশি বয়সীদের নিয়োগ দেয় না। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠিত বেসরকারি চাকরির ক্ষেত্রেও একই নীতি অবলম্বন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, অবসরের বয়স বৃদ্ধির কারণে ছাত্র-ছাত্রীদের বিশাল ক্ষতি হয়েছে। কেননা, উপরের দিকে পদ খালি না হলে চাকরিতে প্রবেশের পদ শূন্য হয় না। নিয়োগও থমকে যায়। সেই ক্ষতি পোষাতেই ৩৫ বছর করতে হবে।

চাকরিতে প্রবেশে বয়স বৃদ্ধির দাবিতে আট বছর ধরে আন্দোলন চলছে। তারা সংসদ সদস্যসহ সরকারের নীতিনির্ধারকদের কাছেও ধরনা দিচ্ছেন। এর আগে ২০১২ সালের ২ ফেব্র“য়ারি প্রথমবার এবং গত ২৭ জুন শেষ দফায় চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানোর সুপারিশ করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। এর আগে জেলা প্রশাসক সম্মেলনেও বয়স বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়।

সংসদে হাজী মো. সেলিম এ প্রসঙ্গে বলেছেন, তিন কারণে এই দাবি যুক্তিযুক্ত। এশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৪০ বছর পর্যন্ত রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে ৪০ বছর, ইন্দোনেশিয়া ও শ্রীলঙ্কায় ৪৫ বছর, ইতালিতে ৩৫ বছর, ফ্রান্সে ৪০ বছর, যুক্তরাষ্ট্রে ৫০ বছর। সংবিধানে সব নাগরিকের সমান অধিকারের কথা বলা হলেও আমাদের দেশে চিকিৎসক, নার্সসহ অন্যদের চাকরিতে বর্ধিত বয়স বিবেচনা করা হয়। তা ছাড়া ২-৩ বছরের সেশনজট, পাসের পর চাকরিপ্রার্থীদের আরও ৩-৪ বছর ঘোরাঘুরিতে চলে যায়। এভাবে অনেকের আবেদনের বয়সসীমা শেষ হয়ে যায়।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট মুস্তফা লুৎফুল্লাহ বলেন, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানোর প্রস্তাবটি দীর্ঘদিন ধরে বিবেচনাধীন ছিল। বর্তমান সরকারের আমলেই চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ এবং অবসরের বয়স ৬৫ বছর করার সুপারিশ বাস্তবায়ন হবে বলে আশা প্রকাশ করে তিনি বলেছেন, সুপারিশ করার আগে পাশের দেশসহ এশিয়া ও উন্নত দেশের অভিজ্ঞতা বিবেচনা করা হয়েছে। যুগান্তর

Next Post

২০ সদস্যের দলে ১১ জন নিশ্চিত হয়ে যাওয়ায় বাকি থাকল নয়টি টিকিট।

মঙ্গল আগস্ট ২৮ , ২০১৮
আভা ডেস্ক: বাংলাদেশ দলের দায়িত্ব নিয়েছেন ব্রিটিশ কোচ জেমি ডে প্রায় আড়াই মাস হলো। খেলোয়াড় চেনার জন্য সময়টা যথেষ্ট না হলেও খুব কমও নয়। তা বোঝা গিয়েছে এশিয়ান গেমসেই। উত্তর কোরিয়ার বিপক্ষে হেরে শেষ ষোলো থেকে বিদায়ের আগ পর্যন্ত এশিয়াড মাতিয়ে রেখেছিলেন জেমির শিষ্যরা। বাংলাদেশের সামনে এখন বহু প্রতীক্ষার সাফ […]

শিরোনাম

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links