নিজস্ব প্রতিনিধিঃ করোনাকালে পুলিশ জনগণের আস্থা প্রতীক হিসাবে বিবেচিত হয়েছে । পুলিশ দেখিয়ে দিয়েছে তারা জনগণের পুলিশ হতে পেরেছে । থানা পুলিশ হয়ে উঠেছে মানুষের ভরসার স্থল । কিন্তু সেই ভরসার স্থল ও আস্থার প্রতীককে সমালোচিত বা সম্মান নষ্টের অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে কতিপয় পুলিশ সদস্য । যাদের অপকর্মের দায় যদিও সম্পুর্ণ ডিপার্টমেন্ট নেয় না, তবুও কিছুটা হলেও সম্মান হানি তো হয়েই যায় । তবে যথার্থ ব্যবস্থা নিলে অপকর্ম কিছু অংশে নয় সম্পুর্ণরুপে বন্ধ হবে বলে আশা করে বিশিষ্টজনরা ।
সমকালীন সময়ে পুলিশ বিভাগের বহুল আলোচিত চট্রগ্রামের দূর্নীতিবাজ পুলিশ পরিদর্শক প্রদীপের আরো এক উত্তরসূরী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ডিবির এসআই আবু আব্দুল্লাহ জাহিদ। এমন অপরাধ নাই যে, সে করেনা।নিরীহ মানুষকে মাদক দিয়ে ফাঁসিয়ে অর্থ আয়ে,ধৃততার শীর্ষে সে। এ ছাড়া, সে নিজেই চোরাকারবারি ও মাদক ব্যবসায় জড়িত।
৪ বছর ধরে এই জেলা ডিবিতে কর্মরত তিনি।এই ৪ বছরে ২০ টি অভিযোগ তার বিরুদ্ধে।তবুও অজ্ঞাত কারনে বহালতবিয়ে তিনি।
এই ৪ বছরে ভালো কিছু অর্জন থাকলেও সিংহ ভাগ কাজ তার অনৈতিক । ঘুষ, ও গ্রেফতার বানিজ্যে সে জেলা সেরা।
প্রত্যাক্ষদোষী ও স্থানীয়দের অভিযোগে উঠে এসেছে মাদক সংশ্লিষ্টতা ঘুষ ও আটক বানিজ্যের নানা কথা । এলাকায় প্রচলন আছে জাহিদ মানেই টাকা, আর টাকা না পেলেই অস্ত্র অথবা মাদক মামলা । বহু ঘটনার জন্ম দেওয়া এই এস আই জাহিদ নিরিহ সাধারন মানুষজনকেও হয়রানি করতে ছাড়েনি। টাকা নিতে মরিয়া এই এস আই অর্থশালী বিত্তবান মানুষকে আটক করে হাতিয়ে নিয়েছে মোটা অংকের ঘুষ । এলাকায় সাধারনের মাঝে আতংক বিরাজ করছে তার আটক বানিজ্যে । তার ভয়ের মুখ খুলতেও নারাজ ভুক্তভুগিরা । তবে দীর্ঘ সময়ের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে প্রতিবেদকের কাছে এসেছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও প্রমান । যা ধারাবাহিক পর্বের মাধ্যমে প্রকাশিত হবে । ধারাবাহিক পর্বের ১ম পর্বঃ
বানিজ্য -১, শিবগঞ্জ থানার মুসলিপুর বাজার হইতে আসামী মোঃ মহব্বত আলী (২৪) পিতামৃত-এনামুল হক সাং-আজমতপুর থানা-শিবগঞ্জ জেলা- চাঁপাইনবাবগঞ্জকে গত ২ জুলাই দুপুর দেড়টায়, ৪ কেজি গাঁজাসহ আটক করলেও তাকে ১ কেজি দিয়ে মামলা দেয়া হয়।
বানিজ্য- ২ শিবগঞ্জ থানার মুসলিমপুর এলাকায় গত ১০ এপ্রিল দিবাগত রাত আনুমানিক ৩ টায়, ১৮৬০ বোতল ফেন্সিডিলসহ জেলার তেলকুপি এলাকার মৃত বুদ্ধুর ছেলে, রবুকে আটক করে। ঐ দিন সকালে ছেড়া স্কুল এলাকার মৃত মঞ্জুরের ছেলে, মহসিন ইসলাম কে তার নিজ বাসা থেকে গ্রেফতার করে এস আই জাহিদ। তাকে ছেড়ে দেয়ার জন্য তার বড় ভাইয়ের কাছে তিন লক্ষ টাকা নিয়েও তাদের মাত্র ৯০০ বোতল ফেন্সিডিল দিয়ে মামলা দেয়। অন্যদিকে ৯৬০ বোতল ফেন্সিডিল বিক্রি করে দেয় দুইজন মাদক ব্যবসায়ীর নিকট ।
বানিজ্য – ৩ গত ১৭ জুলাই রাত আনুমানিক ৮ টায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জের, শিবগঞ্জ থানাধীন মুসলিমপুর মোড়ে মোটরসাইকেলসহ ২ টি বস্তায় ৩৬০ বোতল ফেন্সিডিলসহ মসিউরসহ ২ জনকে আটক করে এস আই জাহিদ। ধৃত আসামিরা আরও দুইজনের নাম বললে, এসআই জাহিদ রাইসু নামের একজন কে আটক করলেও তাকে, ৪০ হাজার টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেন। এ ছাড়াও ফেন্সিডিলের বস্তা নিয়ে মশিউরের সাথে আটক ব্যাক্তির অভিভাবকের সাথে সোর্সের মাধ্যমে ২ লাখ টাকার বিনিময়ে তাকেও ছেড়ে দেন । একক ঘটনায় ১ লাখ টাকার বিনিময়ে মোটরসাইকেলটিও ছেড়ে দেন এসআই জাহিদ। শুধুমাত্র মসিউর কে ২০০ বোতল ফেন্সিডিলসহ চালান দেন। এসপি চাঁপাইনবাবগঞ্জের ফেইসবুক পেইজে দুই বস্তা ফেন্সিডিলের ছবিসহ মশিউরকে আটকের সংবাদ প্রচার করা হলেও তার এজাহারে অজ্ঞাত কারণে এক বস্তার কথা উল্লেখ্য আছে ।
(আটক মশিউরে দুই বস্তা ফেন্সিডিলসহ ছবি)
উল্লেখ্য যে, ২০১৩ সালে মাদক সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সিলেট জেলার কানাইঘাট এলাকায় এই এসআই জাহিদের বিরুদ্ধে,এলাকার জনসাধারণ মানববন্ধন করেন।
বক্তব্য নিতে এস আই আবু আব্দুল্লাহ জাহিদের মোবাইল ফোনে ফোন দেওয়া হলে তিনি ফোনটি রিসিভ করেনি ।