আভা ডেস্কঃ নান্দনিকতা বাড়াতে চট্টগ্রামে বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সমাজবিজ্ঞান অনুষদের পাশে খালের ওপর নির্মাণ করা হয় ঝুলন্ত সেতু। বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল আকর্ষণ ছিল রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতু আদলে গড়া এ সেতুটি। শিক্ষার্থীদেরও প্রিয় জায়গা ছিল এটি।
অথচ অযত্ন, অবহেলা ও সংস্কারের অভাবে বেহাল দশা এ ঝুলন্ত সেতুর। তিন বছরেও সেতুটি সংস্কার করেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কার না করায় ধ্বংস হতে চলেছে সেতুটি।
জানা যায়, চবির প্রয়াত উপাচার্য অধ্যাপক আবু ইউসুফের উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এ সেতুটি নির্মাণ করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাবেক শিক্ষার্থীর অর্থায়নে নির্মিত সেতুটি ২০০৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়।
চমৎকার ও দৃষ্টিনন্দন সেতুটি ছিল শিক্ষার্থীদের পছন্দের স্থানগুলোর একটি। কিন্তু ভেঙে গিয়ে চলাচলের অনুপযোগী হওয়ায় সেতুটি ২০১৮ সালের শেষের দিকে কাঁটা তার দিয়ে বন্ধ করে দেয়া হয়। এখন পর্যন্ত সেতুটি একই অবস্থায় রয়েছে।
সরেজমিন দেখা যায়, সেতুর প্রবেশমুখ ও চারপাশে কাঁটা তারের বেড়া দেয়া। সেতুর অনেকগুলো পাটাতন ভেঙে কোথাও কোথাও খাদের সৃষ্টি হয়েছে। নড়বড়ে ও ভঙ্গুর অবস্থায় পুরো সেতুটি। এছাড়া সেতুর চারপাশে শ্যাওলা ও জঙ্গলের সৃষ্টি হয়েছে। ঝোপঝাড়ে ঢাকা সেতুটির শেষপ্রান্ত থেকে শুরু হয়েছে শহীদ আব্দুর রব হল ও কলা বিভাগে যাওয়ার রাস্তা।
এ সময় শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, সেতুটি দ্রুত সংস্কার করার কথা বারবার জানানোর পরও কোনো উদ্যোগ নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে তারা কমিটি গঠনসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়ার কথাও জানিয়েছে, তবে বাস্তবে তা দেখা যায়নি।
বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী লোকমান হাকিম আরাফাত বলেন, ‘ঝুলন্ত সেতু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পছন্দের জায়গাগুলোর একটি। কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সেতুটি সৌন্দর্য হারালেও এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের কোনো দৃষ্টি নেই। আশা করছি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিবে।’
অর্থনীতি বিভাগের স্নাতকের শিক্ষার্থী দেওয়ান তাহমিদ বলেন, ‘গত ৫ বছরে বেশিরভাগ সময়ই সেতুকে বন্ধ ও মেরামতহীন অবস্থায় দেখে আসছি। এটির প্রতি প্রশাসনের অবহেলার কারণ ঠিক বোধগম্য নয়।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর ফজল বলেন, ‘চলাচলে ঝুঁকি থাকায় সেতুটি বন্ধ রয়েছে।’
তিন বছরেও সেতুটি কেন মেরামত করা হয়নি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি মেরামতের বিষয়ে অফিসিয়ালি কোনো নির্দেশনা দেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক এস এম মনিরুল হাসান বলেন, ‘আমরা সেতুটি রক্ষা করতে চাই। সবাই মিলে এটিকে রক্ষা করতে হবে। ৫০ থেকে ৬০ জন একসঙ্গে ওঠায় সেতুটি নষ্ট হয়ে গেছে। এটি সংস্কার করতে প্রকৌশল দপ্তরে জানাব।’