গোদাগাড়ীতে মাদকের রাঘববোয়ালরা এলাকা ছাড়া।

আভা ডেস্ক: আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অব্যাহত অভিযানে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় হেরোইন পাইকাররা গা-ঢাকা দিয়েছে। এ কারণে তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকছে।

অভিযোগ রয়েছে, এই পাইকাররা কখনো সরাসরি মাদক কেনাবেচায় অংশ নেয়নি। তারা দ্বিতীয় ও তৃতীয় ব্যক্তির মাধ্যমে হেরোইন কারবার নিয়ন্ত্রণ করত। এর মধ্যে দ্বিতীয় ব্যক্তির সঙ্গে করে অর্থ লেনদেন এবং তৃতীয় ব্যক্তি হতো বাহক। দ্বিতীয় ব্যক্তি মূলত তৃতীয় ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করে। ফলে হেরোইনের বড় বড় চালান ধরা পড়লেও খুব কম সময়েই উঠে এসেছে পাইকারদের নাম। আবার কখনো কখনো নাম জানতে পারলেও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী লাখ লাখ টাকার দেনদরবার করে মামলায় কারবারিদের নাম আনেনি সহজে।

মাদক নিয়ন্ত্রণ দপ্তরের একটি তালিকা সূত্রে জানা গেছে, গোদাগাড়ীর হেরোইনের পাইকারদের মধ্যে যেসব ব্যক্তির নাম উঠে এসেছে, তারা প্রায় সবাই এলাকাছাড়া। মাদকের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি এবার প্রশাসন তালিকা করে এসব পাইকারের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিচ্ছে। শায়েস্তা করতে কাউকে কাউকে ধরে পুরনো মামলায় বা নতুন করে মাদক মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার দেখানো হচ্ছে।

ফলে দীর্ঘদিন ধরে যারা অন্তরালে থেকে এত দিন মাদকের সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করেছে, তারা এখন গা-ঢাকা দিতে শুরু করেছে। কিন্তু তাদের হয়ে মাদক পাচার করতে গিয়ে শত শত দিনমজুর, খেটেও খাওয়া পরিবার মাদক মামলা নিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে।

একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে, সম্প্রতি গোদাগাড়ীতে সাড়ে তিন কেজি হেরোইনসহ আটক হয় রবিউল ইসলাম নামের এক দিনমজুর। এই রবিউল হলো বারইপাড়ার মাদক কারবারি নজরুল ইসলামের ভাতিজা। নজরুলের কথামতো মাদক নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছে দিতে গিয়ে ধরা পড়ে রবিউল। নজরুল চর কোদালকাটির আরেক মাদক সম্রাট (পাইকার) মাহাবুবের হয়ে কাজ করে। মাহবুবের অর্থ নিয়ে নজরুল হেরোইনের রুট পরিচালনা করত। ফলে মাহবুব কখনোই ধরাছোঁয়ার মধ্যে আসেনি। এভাবেই গোদাগাড়ীর হেরোইনের রাঘববোয়ালরা থেকে গেছেন ধোরা-ছোঁয়ার বাইরে।

গোদাগাড়ী থানা পুলিশের একাধিক সদস্য এই মাহবুবকে চেনেন-জানেন। কয়েকবার মাহবুবের নাম উঠে এলেও পুলিশ তার বিরুদ্ধে কখনোই ব্যবস্থা নেয়নি। ফলে মাহবুবের নামে মামলাও হয়নি। মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিপ্তরের তালিকা মতে, হেরোইন পাইকারদের মধ্যে যেসব ব্যক্তিদের নাম উঠে এসেছে তাদের মধ্যে রয়েছে মাদারপুরের ইয়াসিনের ছেলে হেলাল উদ্দিন, বারইপাড়ার মহিউদ্দিনের ছেলে নজরুল ইসলাম, কোদালকাটির আলমের ছেলে মাহাবুব, দাঙ্গাপাড়ার সিরাজুলের ছেলে রাকিব, বারইপাড়ার কালুমিয়ার ছেলে সাইদুর রহমান ওরফে খড়ি সাইদুর, মহিষালবাড়ীর আহাদ মণ্ডলের ছেলে জমির হোসেন, মাদারপুরের গোলাম মোস্তফার ছেলে আওলাদ হোসেন, হোসেন আলীর ছেলে শাহাদাত হোসেন, মাহবুবুর রহমানের ছেলে মেহেদী হাসান, বারইপাড়ার সোহরাবের ছেলে লতিপুর রহমান, হাজরাপুকুরের মান্নান নাজিরের ছেলে আনারুল ইসলাম, মাটিকাটা ভাটার ইসমাইলের ছেলে শফিক ওরফে দিয়াড়া শফিক, তার ভাই রেলবাজারের একরাম হোসেন, একরামের ছেলে শাহিন হোসেন, বারইপাড়ার লাল মোহাম্মদের ছেলে আমিনুল ইসলাম, মাদারপুরের নজরুল ইসলামের ছেলে নয়ন, মহিষালবাড়ীর তৈয়বের ছেলে মুরতুজা, সিরাজুলের ছেলে ইস্রাফিল ইসলাম ওরফে ভোদল, মহিষালবাড়ীর সোহেল রানা, শহিদুল ইসলাম ভোদল, সিঅ্যান্ডবি গড়ের মাঠের হযরত আলী, শীষ মোহাম্মদ, মহিষালবাড়ীর হেলালুদ্দিন, মহিষালবাড়ীর জামায়াত নেতা সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর রবিউল ইসলাম রবি, মহিষালবাড়ীর সেলিম, রেলগেট মাটিকাটার নাসির উদ্দীন নয়ন, মাদারপুরের নাজিবুর রহমান, ডাইংপাড়ার হায়দার আলী, মাদারপুরের টিপু, ডাইংপাড়ার আনারুল ইসলাম, মাদারপুরের তোফাজ্জল, সহরাগাছির জসিম উদ্দীন, মাটিকাটার শাহিন আলম, মাদারপুরের মনিরুল ইসলাম মনি, টিপু, মেহেদী, সোহেল, মাসুম, কশাইপাড়া রেলগেটের জিয়াউল ইসলাম জিয়া, দিয়াড় মানিক চরের ইউপি সদস্য শরিফুল ইসলাম, দিয়াড় মানিক চরের ইউপি সদস্য জোহরুল ইসলাম, ইব্রাহীম হোসেন ও ইউপি সদস্য সেন্টু প্রমুখ। এর মধ্যে বেশির ভাগই এখন এলাকাছাড়া। কেউ কেউ ভারতেও পালিয়ে গেছে। আবার কেউ কেউ রাজশাহী শহরে আশ্রয় নিয়েছে। কেউ সীমান্ত এলাকার দুর্গম দিয়াড় মানিক চরে অবস্থান করছে।

একটি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, পাঁচটি গোয়েন্দাসহ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে জোরদার অভিযান চালানো হচ্ছে। এত দিন যেসব হেরোইন পাইকার ছিল ধরাছোঁয়ার বাইরে, এবার তাদের বিরুদ্ধেও অভিযানে নেমেছে প্রশাসন। এই কারবারিদের ধরতে চুলচেরা তথ্য-উপাত্ত এমনকি বিভিন্ন মামলার নথি ঘেঁটে আটক হওয়া ব্যক্তিদের কাছ থেকে নতুন করে তথ্য নেওয়া হচ্ছে। এভাবে উঠে এসেছে আড়ালে থাকা পাইকারদের নাম। এখন সেসব পাইকারের বিরুদ্ধে অভিযানে নেমেছে প্রশাসন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে গোদাগাড়ী থানার পরিদর্শক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘মাদক কারবারের সঙ্গে সরাসরি যুক্তদের পাশাপাশি পাইকারদের বিরুদ্ধেও অভিযান চলছে। তবে এরই মধ্যে বেশির ভাগই এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। তাদের তথ্য পাওয়া মাত্র আটকের চেষ্টা চলছে। ’

সিল্কসিটি নিউজ

Next Post

বিশ্বকাপের এবারের ইতিহাসে সর্বচ্চ গোল ব্রাজিলের।

মঙ্গল জুলাই ৩ , ২০১৮
মেক্সিকোর বিপক্ষে ২-০ গোলে জিতে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করার পাশাপাশি রেকর্ড বইয়েও নাম লিখিয়েছে ব্রাজিল। বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোল করার রেকর্ড এখন সেলেসাওদের দখলে। বিশ্বকাপে ব্রাজিল দলের মোট গোলসংখ্যা ২২৮। আগের রেকর্ডটি ছিল জার্মানির। বিশ্বকাপে জার্মানির মোট গোল ২২৬। আজকে (২ জুলাই) শেষ ষোল’র ম্যাচে মেক্সিকোর বিপক্ষে খেলতে নেমে ৫১ […]

এই রকম আরও খবর

শিরোনাম

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links