আভা ডেস্কঃ গোটা রাজধানী এখন ডেঙ্গু ঝুঁকিতে। ঘরে ঘরে ডেঙ্গু। ইতোমধ্যে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা সর্বোচ্চ রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। গত ১৮ বছরের মধ্যে এ বছর গতকাল রবিবার পর্যন্ত সর্বোচ্চ ১১ হাজার ৩৫২ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এক দিনে আক্রান্তের রেকর্ডও গতকাল ভঙ্গ হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৮৪২ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীসহ সারাদেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। সরকারি হিসেবে গতকাল পর্যন্ত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ১৪ জন মারা গেছেন। তবে বেসরকারি হিসেবে এ সংখ্যা হবে ৩১ জন।
সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকেও বলা হয়েছে, রাজধানীতে ব্যাপক হারে ডেঙ্গু দেখা দিয়েছে। তবে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দিনদিন বৃদ্ধি পেলেও এডিস মশা মারার কার্যকর কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের মেয়রদ্বয় ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের ওপর চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নগরবাসী। ইত্তেফাকের সঙ্গে আলাপকালে নগরবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ডেঙ্গু মহামারী রূপ নিতে চললেও মশক নিধনে এখনই শক্তিশালী ক্র্যাশ প্রোগ্রাম কেন নেওয়া হচ্ছে না?
রক্ত পরীক্ষা ফি ৫০০ টাকা নির্ধারণ: এদিকে ডেঙ্গু রোগীদের নিয়ে বেসরকারি ক্লিনিক, হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর মনোপলি বাণিজ্য বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ডেঙ্গুর রক্ত পরীক্ষা ফি ৫০০ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। যার পূর্ব মূল্য ছিল ১ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার টাকা। এছাড়া আরো অন্যভাবে ডেঙ্গু রোগীর কাছ থেকে রক্ত পরীক্ষার নামে বড় অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। গতকাল রবিবার রাজধানীতে ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ মোকাবিলায় প্রাইভেট হাসপাতাল/ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর পরিচালক/ ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদফতরের ‘ডেঙ্গু রোগ নির্ণয় ও চিকিত্সা’ সংক্রান্ত সভা অনুষ্ঠিত হয়। স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে স্বাস্থ্য ভবনের সম্মেলন কক্ষে এ সভায় ডেঙ্গু রোগীর রক্ত পরীক্ষা ফি নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। এই মূল্য তালিকা গতকাল রবিবার থেকে কার্যকর হয়েছে। পরবর্তী ঘোষণা না আসা পর্যন্ত এই মূল্য তালিকা কার্যকর থাকবে। আর সরকারি হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগের পরীক্ষা বিনামূল্যে হচ্ছে।
এছাড়া বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সব প্রাইভেট হাসপাতাল/ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য একটি ‘ওয়ান স্টপ সেন্টার’ চালু করবে। সব হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধি করা হবে। ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যার অনুপাতে ডাক্তার, নার্সসহ প্রয়োজনীয় জনবল বৃদ্ধি করা হবে। বৈঠক শেষে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ডেঙ্গুর এনএস ১ পরীক্ষা করতে সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা নেওয়া যাবে। সিবিসি পরীক্ষার জন্য নেওয়া যাবে সর্বোচ্চ ৪০০ টাকা। মহাপরিচালক বলেন, পুরো ঢাকা শহর ডেঙ্গুর ঝুঁকিতে রয়েছে। ইতোপূর্বে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের পক্ষ থেকে ডেঙ্গু ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করতে একটি জরিপ করা হয়। সেই জরিপের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘জরিপের ডাটা সংগ্রহের কাজ আমরা শনিবার শেষ করেছি। সব কাজ শেষ হওয়ার পরে আমরা এ বিষয়ে পূর্ণাঙ্গভাবে জানাতে পারবো। তবে এখন রাজধানী ডেঙ্গুর ঝুঁকিতে।’
স্বাস্থ্য অধিদফতরে মহাপরিচালক আরো জানান, প্রতিটা হাসপাতালে একটা করে হেল্প ডেস্ক বসবে। ডেঙ্গু আক্রান্তরা এই হেল্প ডেস্কে গিয়ে যে কোনও তথ্য নিতে পারবেন। এছাড়া হাসপাতালগুলো মনিটর করার জন্য দশটি মনিটরিং টিম করা হবে। প্রতি টিমে তিনজন সদস্য থাকবেন, যারা ডেঙ্গুর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মনিটর করবে এবং স্বাস্থ্য অধিদফতরকে অবহিত করবে। তিনি বলেন, ‘সেবার ব্যাপারে কোয়ালিটি নিশ্চিত করতে হবে। কোনও ছাড় দেওয়া চলবে না।’ সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকের মালিক সমিতিও এসব ব্যাপারে একমত পোষণ করেছেন বলে তিনি জানান।
ডেঙ্গু রোগীদের উপচেপড়া ভিড়: রাজধানীর সরকারি ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালসহ বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। প্রতিদিনই নতুন নতুন রোগী ভর্তি হওয়ার কারণে তাদের অধিকাংশকে এখন আর শয্যায় রেখে চিকিত্সা প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে না। শয্যার অভাবে ভর্তিকৃত ডেঙ্গু রোগীদের কাউকে ওয়ার্ডের বারান্দায়, আবার কাউকে সিঁড়ির পাশে রেখে প্রয়োজনীয় চিকিত্সা দেওয়ার ব্যবস্থা করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সরেজমিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, মেডিসিন ও শিশু ওয়ার্ডের ফ্লোর, বারান্দা এমনকি সিঁড়ির পাশে ডেঙ্গু রোগীদের উপচেপড়া ভিড়। পা রাখার জায়গা নেই ওয়ার্ডে। এক বেডে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত পাঁচ শিশুকে রেখে চিকিত্সা দেওয়া হচ্ছে। রোগীদের দেখভাল করার জন্য কর্তব্যরত নার্সরা দৌড়ঝাঁপ করছেন। চিকিত্সকদের লিখে দেওয়া ব্যবস্থাপত্র দেখে ব্লাড প্রেসার মাপা, প্লাটিলেট কমছে না বাড়ছে তা দেখা, শিরায় স্যালাইন দেওয়া ও পানীয় খেতে সাহায্য করাসহ নিবিড় সেবা প্রদান করছেন তারা। বিরামহীনভাবে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন ডাক্তার-নার্সরা।
এদিকে সরকারি হাসপাতালগুলোতে রোগীর সঙ্গে আসা উদ্বিগ্ন স্বজনদের উপস্থিতির কারণে চিকিত্সাসেবা বিঘ্নিত হচ্ছে বলে জানিয়েছন চিকিত্সক ও নার্সরা। নিরাপত্তারক্ষীরা স্বজনদের রোগীর পাশ থেকে সরে যাওয়ার কথা বললেও তারা যাচ্ছে না। এই অবস্থা শুধু ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নয়, রাজধানীর পুরান ঢাকার মিটফোর্ড, শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মুগদা, ঢাকা শিশু হাসপাতালসহ সব হাসপাতালেই দেখা গেছে।
এবার ডেঙ্গুর ভয়াবহতার বিষয়ে সরকারের কাছে আগাম সতর্ক বার্তা থাকলেও প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। উল্টো পরিস্থিতি যখন ভয়াবহ আকারের দিকে যাচ্ছে তখন সরকারের নীতি নির্ধারণী পর্যায় থেকে আসছে অসংলগ্ন মন্তব্য। শেষ পর্যন্ত খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সংযত মন্তব্যের পরামর্শ দিয়েছেন।
হাসপাতালে আরো ৮২৪ রোগী: স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সহকারী পরিচালক ডা. আয়শা আক্তার জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ৮২৪ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। এরমধ্যে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১৯৬ জন, মিটফোর্ড হাসপাতালে ৭২ জন, ঢাকা শিশু হাসপাতালে ২৬ জন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ৩২ জন, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালে ৩৭ জন, বারডেম হাসপাতালে ১৭ জন, বিএসএমএমইউতে ৯ জন, রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে ২১ জন, মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৬৭ জন, পিলখানার বিজিবি হাসপাতালে ৬ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। এছাড়া ঢাকা শহর ব্যাতিত ঢাকা বিভাগে ৩৬ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৩৬ জন, খুলনা বিভাগে ১২ জন, রাজশাহী বিভাগে ৫৭ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন।
আমাদের সংশ্লিষ্ট জেলা প্রতিনিধি ও উপজেলা সংবাদদাতাদের পাঠানো তথ্য অনুযায়ী, গাজীপুর তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৭৩ জন, মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ৭ জন, কিশোরগঞ্জে ৫৮ জন, নারায়ণগঞ্জে ১৩ জন, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ২৭ জন, চট্টগ্রাম জেলায় ৩০ জন, ফেনীতে ৫১ জন, কুমিল্লায় ১ জন, চাঁদপুরে ৩৭ জন, ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ায় ১০ জন, নোয়াখালীতে ৯ জন, কক্সবাজারে ৬ জন, লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে ৮ জন, কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ৩২ জন, খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৩১ জন, যশোর আড়াইশ’ বেডের জেনারেল হাসপাতালে ২২ জন, ঝিনাইদহ ২৫০ শয্যার সদর হাসপাতালে ১১ জন, বগুড়ায় ৬০ জন, পাবনায় ২৯ জন, সিরাজগঞ্জে ৮ জন, নওগাঁয় ২ জন, রাজশাহীতে ৩৮ জন, বরিশালে শেরে বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ২৬ জন, বরিশাল জেলায় ৯ জন, সিলেট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১৩ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিত্সাধীন রয়েছেন।
স্কুল শিক্ষিকার মৃত্যু: ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে নিগার সুলতানা (৩৫) নামের এক স্কুল শিক্ষিকা মারা গেছেন। গতকাল রবিবার দুপুরে পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিত্সাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। নিগার সুলতানা কাঁঠালিয়া উপজেলার হালদারখালি গ্রামের সুলতানের হোসেনের মেয়ে এবং হালদারখালি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। কয়েকদিন আগে নিগার সুলতানা ঢাকায় আসেন। ঢাকায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে এলাকায় ফিরেন। শুক্রবার গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় তাকে ভান্ডারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
এদিকে রাজধানীর মুগদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে গত এক মাসে ১০ জন চিকিৎসক ও ২০ জন নার্স ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালটির পরিচালক অধ্যাপক ডা. আমিন আহমেদ খান। এছাড়া ঢাকার সাধারণ নাগরিকদের মতোই এডিস মশার আক্রমণে কাতরাচ্ছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সদস্যরা। রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সের ব্যারাক, মিরপুরসহ আশপাশ এলাকার পুলিশ সদস্যরা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। প্রতিদিন জ্বর নিয়ে পুলিশ সদস্যরা আসছেন রাজারবাগের কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে। টেস্টে ডেঙ্গু প্রমাণিত হলেই ভর্তি রাখা হচ্ছে হাসপাতালে। জানা গেছে, রবিবার সকাল থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত মোট ৯৫ জন পুলিশ সদস্য ডেঙ্গু জ্বরে আক্তান্ত হয়ে হাসপাতালে যান। গত শনিবার আক্রান্ত পুলিশ সদস্যের সংখ্যা ছিল ১০১ জন।
এডিসমুক্ত ওয়ার্ড হলেই পুরস্কার: এডিস মশামুক্ত ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের পুরস্কৃত করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম। গতকাল রাজধানীর আজিমপুর দক্ষিণ কলোনি মাঠে মশক নিধন কর্মসূচি উদ্বোধনকালে তিনি এ ঘোষণা দিয়ে বলেন, এডিস মশা নিধনে সরকারের সব সংস্থাসহ দুই সিটি কর্পোরেশন ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে-ময়দানে কাজ করছে। শিগগিরই ভয়াবহ এডিস মশা থেকে পরিত্রাণ পাব। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের বাইরে থাকলেও তিনি সবসময় খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। তাঁর নির্দেশ অনুসারে সবাই কাজ করছেন। এর অংশ হিসেবে গত ২৫ জুলাই থেকে ২৯ জুলাই পর্যন্ত ঢাকাসহ সারা দেশে একযোগে মশক নিধন সপ্তাহ পালন করা হচ্ছে।
চিকিত্সকদের পরামর্শ: চিকিত্সকরা ডেঙ্গু জ্বরে প্যারাসিটামল ছাড়া অন্য ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়া থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি রোগীকে বেশি বেশি তরল খাবার খাওয়াতে বলেছেন। এবার ডেঙ্গু জ্বরে রক্তের ঘনত্ব কমে যাওয়ার লক্ষণ দেখা দেওয়ায় আক্রান্তের রক্তচাপ কমে যাচ্ছে কি না, তা নিয়মিত পরীক্ষা করতে বলা হচ্ছে। জ্বর ভালো হওয়ার পরও ডেঙ্গুজনিত মারাত্মক জটিলতা দেখা দিতে পারে বলে সতর্ক করছেন চিকিত্সকরা। এপ্রিল থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ায় তা প্রতিরোধে বাড়ির আশপাশ পরিচ্ছন্ন রাখতে বলা হচ্ছে। অফিস, ঘর ও আশপাশে যে কোনো পাত্রে (এসির ট্রে/ফুলের টব) জমে থাকা পানি তিন দিনের মধ্যে পরিবর্তন করতে পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। এডিস মশা সাধারণত দিনের বেলা কামড়ায় বলে দিনে ঘুমানোর ক্ষেত্রেও মশারি ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
প্রখ্যাত মেসিডিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ জানান, ডেঙ্গু আক্রান্তের রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। তবে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। সতর্ক থাকতে হবে। আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাস বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। তিনি বলেন, ডেঙ্গু হলে প্লাটিলেট এক লাখের বেশি হলে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন নেই। প্যারাসিটামল ছাড়া অন্য কোন ওষুধ না খাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
সূত্র- ইত্তেফাক