আভা ডেস্কঃ নিয়মিত মজুরি পরিশোধসহ ১১ দফা দাবিতে খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত ৯ পাটকলের শ্রমিকদের লাগাতার আমরণ অনশনে শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
বৃহস্পতিবার সকাল পৌনে ১০টা পর্যন্ত প্রায় শতাধিক শ্রমিককে খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সকালে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ-ননসিবিএ সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক খলিলুর রহমান বলেন, শীতের রাতে তাঁবু টাঙিয়ে সড়কে অবস্থান নিয়ে অনাহারে থাকায় প্রায় শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
তাদের মধ্যে ২৫-২৬ জনকে খুমেক হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের অনশন স্থানেই স্যালাইন দেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, বুধবার রাতে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের বাসায় শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। সেখানে প্রতিমন্ত্রী ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত কর্মসূচি স্থগিত করার প্রস্তাব দেন।
১৫ ডিসেম্বর ঢাকার মিটিংয়ে শ্রমিকদের দাবি পূরণ হবে। কিন্তু শ্রমিক নেতারা মজুরি কমিশন বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাবে বলে জানান।
শ্রমিক নেতারা জানান, আগামী ১৫ ডিসেম্বর বেলা ১১টায় পাট মন্ত্রণালয়ে আন্দোলনরত শ্রমিকদের সঙ্গে পাটমন্ত্রী ও শ্রম প্রতিমন্ত্রীর বৈঠকের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ জন্য বুধবার রাতে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত শ্রম প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান খুলনার কর্মসূচি স্থগিত করার অনুরোধ করলেও শ্রমিকরা তা মানেননি।
এর আগে মঙ্গলবার থেকে মজুরি কমিশন বাস্তবায়নসহ ১১ দফা দাবিতে আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করেন খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত ৯ পাটকলের শ্রমিকরা।
রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ-ননসিবিএ সংগ্রাম পরিষদের ডাকা কর্মসূচির অংশ হিসেবে খুলনার ক্রিসেন্ট, প্লাটিনাম, খালিশপুর, দৌলতপুর, স্টার, ইস্টার্ন, আলিম, জেজেআই ও কার্পেটিং মিলের শ্রমিকরা নিজ নিজ পাটকলের উৎপাদন বন্ধ রেখে মিলের প্রধান ফটকে এ কর্মসূচি পালন করছেন শ্রমিকরা।
এ ছাড়া যশোরে দুটি পাটকল শ্রমিকরা আন্দোলনে নেমেছেন।
আন্দোলনরত শ্রমিকরা বলেন, শ্রমিকরা নিজেদের কাঁথা-কম্বল নিয়ে অনশনে নেমেছে। সমস্যার সমাধান করতে যদি মরতে হয়, তবু দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনশন কর্মসূচি চলবে।
এদিকে অনশন কর্মসূচির কারণে পাটকলগুলোতে উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। একই সঙ্গে বিআইডিসি সড়কের দোকানপাটও বন্ধ রয়েছে। পাটকল শ্রমিকদের আন্দোলনে খুলনার শিল্পাঞ্চল উত্তাল হয়ে পড়েছে। অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে গোটা শিল্পাঞ্চলে।
রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ-ননসিবিএ সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক খলিলুর রহমান জানান, প্রচণ্ড শীত ও ক্ষুধার কারণে তারা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। সমস্যা সমাধানে ঢাকায় বৈঠক হয়। তার পরও যতই কষ্ট হোক, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অনশন চালাবেন বলে জানান শ্রমিকরা।
যুগান্তর