খানজাহানের ভিটা খননে সুলতানি আমলের নিদর্শন

আভা ডেস্কঃ ইসলাম ধর্ম প্রচারক হজরত খানজাহানের সাড়ে ৬০০ বছর আগের বসতভিটা খননে বেরিয়ে আসছে প্রাচীন সুলতানি আমলের দেয়াল, টেরাকোটা, ড্রেন, তৈজসপত্রসহ গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন।

বিশ্ব ঐতিহ্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ বাগেরহাটে সুলতানি আমলের পুরাকীর্তিগুলো বিশ্বের দরবারে অনেক দিন ধরে সমাদৃত। ষাট গম্বুজ মসজিদসহ হজরত খানজাহানের (রহ.) বিভিন্ন পুরাকীর্তি দেখতে প্রতিদিনই বাগেরহাটে আসেন দেশি-বিদেশি হাজারো দর্শনার্থী।

ষাটগম্বুজ মসজিদের পাশে সুন্দরঘোনা গ্রামে হজরত খানজাহানের বসতভিটায় গিয়ে দেখা যায়, ভোর থেকে শুরু হওয়া খননে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সঙ্গে ১৪ শ্রমিক নিদর্শন সংরক্ষণে কাজ করছেন। এরই মধ্যে বেরিয়ে এসেছে দেয়াল, টেরাকোটা ও প্রাচীন আমলের তৈজসপত্রসহ অজানা প্রত্নবস্তু। মাসব্যাপী শুরু হওয়া এ খননের ফলে উন্মোচিত হচ্ছে অনেক অজানা তথ্য। শুধু তা-ই নয়, ২০ বছর ধরে খননের ফলে নতুন নতুন তথ্য-উপাত্ত সংরক্ষণ করছে সংশ্লিষ্ট বিভাগ।

প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর জানায়, সুলতানি আমলে খানজাহানের বসতভিটার ভূমির স্তরবিন্যাস, স্থাপত্যশৈলী ও কালানুক্রমিক সময় বের করাই এই খননের উদ্দেশ্য। মাটির নিচে পাওয়া বিভিন্ন প্রত্নবস্তু পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে রেজিস্ট্রেশন করে বিভিন্ন জাদুঘরে রাখা হবে। ৩১ ডিসেম্বর মাসব্যাপী শুরু হওয়া এই খননকাজ শেষ হবে ৩১ জানুয়ারি।

প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৫ সালে ষাটগম্বুজ মসজিদসহ ১৭টি স্থাপনাকে বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত করা হয়। এর মধ্যে বাগেরহাট সদরের সুন্দরঘোনা এলাকায় খানজাহান আলী (রহ.)-এর বসতভিটা অন্যতম।

২০০০ সালের পর প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর এই বসতভিটার প্রত্নতাত্ত্বিক গুরুত্ব নির্ণয়ের জন্য কয়েক দফা খনন করে। সেখানে টিনশেডের একটি অস্থায়ী অফিসও তৈরি করেন তারা। এর ধারাবাহিকতায় প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর খুলনার আঞ্চলিক পরিচালক আফরোজা খান মিতার নেতৃত্বে আবারও খনন শুরু হয়েছে। বিভিন্ন গ্রেডের সাত কর্মকর্তা ও অনিয়মিত ১৪ শ্রমিক এই খননকাজ ও গবেষণায় অংশ নিয়েছেন।

এবার শুরু হওয়া খননকাজ এরই মধ্যে অনেকটা এগিয়েছে। সিমেন্ট ও বালুর তৈরি মেঝে, সুলতানি আমলের দেয়াল, টেরাকোটা, ড্রেন, সুলতানি আমলে ব্যবহৃত মাটির তৈরি পানির পাত্র, তৈজসপত্রসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন ও প্রত্নবস্তু পাওয়া গেছে।

বাগেরহাট প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের কাস্টোডিয়ান মো. জায়েদ বলেন, ‘সাড়ে ৬০০ বছর আগের এ বসতভিটা খননে আমাদের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে ভূমির স্তরবিন্যাস, স্থাপত্যশৈলী ও কালানুক্রমিক সময় বের করা। খননের মাধ্যমে পাওয়া স্থাপনা, ইট, তৈজসপত্রসহ নানা তথ্য-উপাত্ত নিয়ে আমরা গবেষণা করব।’

প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর খুলনা ও বরিশাল বিভাগের আঞ্চলিক পরিচালক আফরোজা খান মিতা বলেন, ‘শুধু এই বছরই নয়। দীর্ঘ ২২ বছর ধরে খানজাহানের বসতভিটা খনন চলছে। যতদিন পর্যন্ত নিদর্শনগুলো উদ্ঘাটন সম্ভব হবে, ততদিন খনন চলবে। আর এই খননের ফলে শুধু দেশের প্রজন্ম নয়, বিদেশেও আমাদের ইতিহাস ঐতিহ্য তুলে ধরা সম্ভব হবে।’

Next Post

হেলাল হাফিজের কবিতায় রক গান

শুক্র জানু. ২১ , ২০২২
আভা ডেস্কঃ একজন রকস্টারের জীবন ঘিরে শবনম ফেরদৌসী তৈরি করেছেন সিনেমা ‘আজব কারখানা’। এতে রকস্টারের চরিত্রে অভিনয় করেছেন কলকাতার জনপ্রিয় অভিনেতা পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। সিনেমাটিতে প্রেম ও দ্রোহের কবি হেলাল হাফিজের চারটি কবিতা নিয়ে বানানো হয়েছে রক গান। ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর পাবলিক লাইব্রেরিতে হয়ে গেল সিনেমাটির উদ্বোধনী […]

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links