আভা ডেস্ক : কুড়িগ্রাম-৩ শূন্য আসনের উপনির্বাচনে জাতীয় পার্টির অধ্যাপক ডা. আক্কাছ আলী ৮২ হাজার ৫৯৮ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে ava desk : বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ প্রার্থী অধ্যাপক এমএ মতিন পেয়েছেন ৭৯ হাজার ৮৯৫ ভোট। বিজয়ী প্রার্থী ২ হাজার ৭০৩ ভোট বেশি পান। রিটার্নিং কর্মকর্তা জিএম সাহাতাব উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
কুড়িগ্রাম-৩ আসন উলিপুর উপজেলার একটি পৌরসভা ও ১২টি ইউনিয়ন এবং চিলমারী উপজেলার চারটিসহ ১৬টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এ আসনে ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৬৩ হাজার ৭৫। উলিপুর উপজেলার একটি পৌরসভা ও ১২টি ইউনিয়নে ১৩০টি ভোট কেন্দ্রে জাপা প্রার্থী পান ৭২ হাজার ৬২৮ এবং নৌকা প্রার্থী পান ৬১ হাজার ৪৬৮ ভোট। চিলমারী উপজেলার চারটি ইউনিয়নের ২৯টি ভোট কেন্দ্রে জাতীয় পার্টি প্রার্থী পান ৯ হাজার ৯৭০ এবং নৌকা মার্কার প্রার্থী পান ১৮ হাজার ৪২৭ ভোট।
ভোটের ফলের আগেই আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে উলিপুর শহরে বিজয়ী মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা বের করা হয়। এছাড়াও ফেসবুকে নৌকা মার্কা প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন মর্মে বিভিন্ন কায়দায় প্রচারণা চালানো হয়।
এ আসনের উপনির্বাচন নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে ছিল টানটান উত্তেজনা। শহরজুড়ে মহড়া আর মিছিলে আওয়ামী লীগ এগিয়ে থাকলেও কাজের কাজ করে নিয়েছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী। ভোটের আগের রাতে উলিপুরের থেতরাই, বজরা, গুনাইগাছ, তবকপুর, পৌরসভা ও ধামশ্রেণীতে এবং চিলমারীর চারটি ইউনিয়নে জাতীয় পার্টির ভোটার ও এজেন্টদের কেন্দ্রে না আসার জন্য আওয়ামী লীগ সমর্থকরা হুমকি দেয় বলে জাতীয় পার্টির প্রার্থী আক্কাছ আলী অভিযোগ করেছিলেন। বুধবার দিনভর এসব কেন্দ্রে ছিল সুনসান নীরবতা। ভোট পড়েছে কম।
জাতীয় পার্টির প্রার্থী ডা. আক্কাছ আলী সরকার জানান, থেতরাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দুর্গাপুর ও পাঁচপীরসহ বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে তাদের এজেন্টদের ভেতরে প্রবেশ করতে বাধা দেয়া হয়। সরেজমিন থেতরাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়- সেখানে জাতীয় পার্টির এজেন্টদের বাইরে আটকে দেয়া হয়েছে। পরে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান এজেন্টদের ভেতরে আসার ব্যবস্থা করে দেন।
নির্বাচনে জাল ভোটের অভিযোগে তিনজনকে আটক করা হয়। এরা হল- উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের বাগুয়া এলাকার নজরুল ইসলামের ছেলে ইমরুল কায়েস, নেরকান মণ্ডলের ছেলে আক্কাছ আলী ও মোন্নাফ আলীর ছেলে শাহাজাহান।
নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করতে মোটরসাইকেলে যাওয়ার সময় উলিপুর উপজেলার কাজিপাড়া কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচপি কর্মকর্তা ও পোলিং এজেন্ট মিঠু কুমার বুধবার ভোর ৬টায় উলিপুর শহরে ট্রাক্টরের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে মারা যান। তিনি উপজেলার দলদলিয়া ইউনিয়নের বসারবাজার এলাকার বীরেন্দ্র নাথের ছেলে। এ সময় রাইনুল ইসলাম নামের অপর এক ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা গুরুতর আহত হলে তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
১১ মে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী একেএম মাইদুল ইসলাম মারা গেলে কুড়িগ্রাম-৩ আসনটি শূন্য হয়। এ আসনে ১০ জুন নির্বাচন কমিশন উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে। ঘোষিত তফশিল অনুযায়ী ৪ জুলাই প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়।
নির্বাচনে কেন্দ্রগুলোতে ১৫৯ প্রিসাইডিং অফিসার, ৭৬৭ জন সহকারি প্রিসাইডিং অফিসার ও ১ হাজার ৫৩৪ জন পোলিং এজেন্ট নিয়োগ দেয়া হয়।
শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, অপরাধ দমন ও আচরণবিধিসংক্রান্ত অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য স্ট্রাইকিং ফোর্সের জন্য ২৬ জন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করেন। স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে রংপুর র্যাব-১৩ এর ৩০টি টহল টিমে ৩৪৬ জন সদস্য, কুড়িগ্রাম-২২ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের ১৩ প্লাটুন বিজিবির ২৬৩ জন জওয়ান এবং ২ হাজার ৩শ’ পুলিশ সদস্য ও ২৫০ অস্ত্রধারী আনসার নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন।
যুগান্তর