আভা ডেস্ক: কিছুতেই থামছে না পদ্মার ভাঙন। প্রতিদিনই বাড়িঘরসহ নতুন নতুন স্থাপনা বিলীন হয়ে হচ্ছে। এ এলাকার মানুষের কাছে এখন মূর্তিমান আতংকের নাম পদ্মা নদী। গত পাঁচ দিনে নড়িয়ায় চর জুজিরা, সাধুর বাজার ও মূলফৎগঞ্জ বাজার সংলগ্ন শতাধিক বাড়িঘর বিলীন হয়ে গেছে। বাঁশতলা থেকে মূলফৎগঞ্জ পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার পাকা সড়ক ও ৩টি মসজিদ নদীগর্ভে চলে গেছে। বন্ধ হয়ে গেছে সুরেশ্বর-নড়িয়া সড়ক যোগাযোগসহ সব ধরনের যোগাযোগ। মারাÍক ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে মূলফৎগঞ্জ বাজার, নড়িয়া বাজার, পূর্ব নড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ভাঙন আতংকে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মালামাল। পদ্মার তীরবর্তী লোকজনের চোখে ঘুম নেই। দিনরাত তাদের সর্বশেষ সম্বল ঘর-বাড়ী, দোকানপাট সরিয়ে নিতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। অনেকেই খোলা আকাশের নিচে রাস্তার পাশে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তারা অর্ধাহারে অনাহারে দিনাতিপাত করছে। জানা গেছে, এ বছর বর্ষা মৌসুমের শুরু থেকে নড়িয়া ও জাজিরা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপকভাবে পদ্মা নদীর ভাঙন শুরু হয়েছে। গত ৫ দিন ধরে নড়িয়ায় উপজেলার চর জুজিরা, সাধুর বাজার, পৌর এলাকার শুভগ্রেম, পাঁচগাঁও মূলফৎগঞ্জ বাজার সংলগ্ন এলাকায় নজরুল দেওয়ান, হাসেম দেওয়ান, খোকন খান, তোতা খান, কালাম খান, নাছির মাদবর, সোনা মিয়া, রহমান মাদবর, রুবেল দেওয়ান, আতাবর খান, আজিজুর মুন্সি, মাহবুব দরজী, আলমগীর বেপারি, মাসুক দেওয়ান, জাবেদ দেওয়ান, ওসমান ঢালী, সিরাজ ঢালী, আবুল ঢালী, ধুলু খালাসী, দুলাল মাদবর, আলম ভুইয়া, সামসুদ্দিন ভুইয়া, কৃজ্ঞ মাস্টার, হারুন খান, গুপি দাস, কার্তিক মেম্বার, মতি মাস্টারের বাড়ি, আকবর দেওয়ান, মোকলেজ দেওয়ান, সোহান দেওয়ান, ঈমাম হোসেন হাওলাদার, জামাল বেপারি, মজু মিয়া, লোকমান হাওলাদার, আলী হোসেন বেপারি, জসিম বেপারি, মোস্তফা হাওলাদার, নুর মোহাম্মদ বেপারি, হাসেম হাওলাদার, মোবারক হাওলাদার আয়নাল বেপারিসহ শতাধিক লোকের বাড়ীঘর বিলীন হয়ে গেছে। বাঁশতলা থেকে মূলফৎগঞ্জ পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার পাকা সড়ক নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া বাইতুল করিম জামে মসজিদ, গাজী কালু জামে মসজিদ, পাঁচগাঁও জামে মসজিদ, ৬টি ব্রিজ নদীগর্ভে চলে গেছে। নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা ইয়াসমিন বলেন, প্রতিদিনই পদ্মায় বাড়িঘর তলিয়ে যাচ্ছে। আমি সরেজমিন পরিদর্শন করেছি। পদ্মার তীরবর্তী লোকজনকে দূরত্ব বজায় রাখতে মাইকিং করা হচ্ছে। ইতিপূর্বে ১ হাজার ৪শ’ জন ক্ষতিগ্রস্তমানুষকে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।
যুগান্তর